পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেইদিন সন্ধ্যাকালে বীরবালা ভাবিলেন,-“যদি ঘোমটাবতীকে দেখিতে পাই, ত’ তাঁহার চরণে একবার প্রণাম করি; তিনি আমার বড় উপকার করিয়াছেন।” এইরূপ ভাবিয়া বীরবালা একাকিনী মাঠের দিকে চলিলেন। কমলা যে-স্থানে মাটিতে প্রোথিত হইয়াছিলেন, বীরবালা সেইখানে গিয়া উপস্থিত হইলেন। বৃক্ষতলে ঘোমটাবতী বসিয়া রহিয়াছেন, বীরবালা দেখিতে পাইলেন। করযোড়ে তাঁহাকে প্ৰণাম করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, —“মাতঃ! আপনি কে বলুন! আপনি যে ভূতিনী নন, তাহা আমি নিশ্চয় জানি। আপনি কে বলুন।” কোনওরূপ উত্তর না। দিয়া ঈষৎ হাসিয়া ঘোমটাবতী ঘোমটা খুলিলেন। বিদ্যুৎপ্রায় তাহার রূপের ছটায় জগৎ আলোকিত করিল। বিশ্বসংসার শান্তিসুধায় সিক্ত হইল। আকাশের দ্বার উন্মুক্ত হইল। অন্সরা বালকগণ মধুরতানে বীরবালার সাহস, বিক্রম ও পতিভক্তির গুণগান করিতে লাগিল। অন্সরাবালিকাগণ বীরবালার বেশভূষা করিতে লাগিল। বীরবালাকে মাঠের দিকে যাইতে ধৰ্ম্মদত্ত দেখিয়াছিলেন। বীরবালার প্রত্যাগমনে বিলম্ব হইতেছে দেখিয়া তাহার ভাবনা হইল। বীরবালার অনুসন্ধানে তিনিও মাঠের দিকে চলিলেন। মাঠের মাঝখানে সেই অপূৰ্ব্ব দৃশ্য দেখিয়া ধৰ্ম্মদত্ত বিস্ময়াপন্ন হইলেন। বীরবালা বসিয়া আছেন। অন্সরা-বালক-বালিকাগণ তাঁহাকে ঘিরিয়া রহিয়াছে। কেহ তাহার চুল বঁাধিয়া দিতেছে, কেহ তাহার সুকোমল শরীর সুগন্ধ দ্বারা সিক্ত করিতেছে। আকাশপানে চাহিয়া দেখিলেন যে, আকাশ হইতে পুষ্পবৃষ্টি হইতেছে। ভাল করিয়া দেখিবার নিমিত্ত ধৰ্ম্মদত্ত আকাশের দিকে মস্তক আরও উন্নত করিলেন। সবলে মাথাটি যেই তিনি তুলিলেন, আর তাহার ঘাড়টি খুঁট করিয়া উঠিল। O) ঘাড়টি যেই খুট করিয়া উঠিল, আর সেই দৃশ্য তাঁহার নয়নপথ হইতে অন্তৰ্হিত হইল। দেখিলেন যে, তিনি সরযুকূলে ঠেশ দিয়া বসিয়া আছেন। আপনার শরীরপানে চাহিয়া দেখিলেন; দেখিলেন শরীর ধৰ্ম্মদত্তের শরীর নয়, আর কার শরীর। “আমি কে?” এই কথা লইয়া তােহাৱা শুনৈ ঘোরতর সংশয় উপস্থিত হইল। ক্ৰমে ক্রমে তাঁহার সকল কথা মনে পড়িল। তিনি দেবীসিংহ। স্বপ্লে তিনি আপনাকে ধৰ্ম্মদত্ত মনে করিয়াছিলেন, আর এই সমস্ত অদ্ভুত রহস্য প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন। কিন্তু ইহাকে স্বপ্নই বা কি করিয়া বলি। ক্ষণকালের নিমিত্তও তিনি তো নিদ্রা যান নাই। কেবল একবার মাত্র তাঁহার ঢুল আসিয়াছিল। সম্মুখদিকে তাহার মাথাটি একবার ঢুলিয়া পড়িয়াছিল, আর সেই সময় তাহার ঘাড়টি একটু খুঁট করিয়াছিল। সে মুহুৰ্ত্তেই তিনি মাথাটি সোজা করিয়া লইলেন, আর ঘাড়টি আর একবার খুটা করিল। এ কতটুকু সময়? কিন্তু ক্ষণকালের মধ্যেই তিনি এত কাণ্ড দেখিলেন, এত কাণ্ড শুনিলেন, এত কাণ্ড করিলেন। কি আশ্চৰ্য্য ব্যাপার! স্বপ্ন হউক, তাহাতে ক্ষতি নাই। কিন্তু বীরবালা যে স্বপ্ন, প্রকৃত দেবীরূপিণী নারী নন, সে কথা ভাবিয়া দেবীসিংহের মন বড়ই কাতর হইল। “যদি বীরবালাকে আর দেখিতে পাইব না, তবে এ জাগরণে প্রয়োজন কি? চিরনিদ্রায় কেন আমি অভিভূত হইয়া থাকিলাম না?” দেবীসিংহ অতি কাতর হইয়া বৃক্ষের দিকে চাহিলেন!! দেখিলেন যে, বৃক্ষ-ডালে একটি হনুমান বসিয়া রহিয়াছে। সেইক্ষণেই চতুৰ্দশবষীয়া একটি পরমাসুন্দরী বালিকা আসিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল,-“মহাশয়! অযোধ্যা কি এই পথ দিয়া যাইতে হয়?” সে কণ্ঠস্বর, সে রূপ, দেবীসিংহের হৃদয়ে অঙ্কিত আছে, কখনও আর ভুলিবার নহে। চকিত হইয়া দেবীসিংহ জিজ্ঞাসা করিলেন,-"কে ও, বীরবালা?” ट्रछ ४ ५iर ट्रछ ७ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro Sos