পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপদে পড়িব । মাঝে মাঝে এ সন্দেহ আমার মনে উদয় হইল বটে, কিন্তু কুসী যে দুশ্চরিত্রা, সে কথা আমার কিছুতেই বিশ্বাস হইল না। যাই হউক, আমি দুই দিনের জন্য এ স্থানে বেড়াইতে আসিয়াছি। পরের কথায় হস্তক্ষেপ করিয়া, কেন আমি সকলের বিরাগভাজন হইব? কুসীর প্রতি কোনরূপ অত্যাচার কি হইতেছে? তাহা যদি হয়, আর কুসী। যদি একটা কথা আমাকে বলে, তাহা হইলে, যেমন করিয়া পারি, আমি এ বিবাহ নিবারণ করিব। কুসী। আমাকে হয় চিঠি লিখিবে, না হয় গোপনে কিছু বলিবে, প্রতিদিন এই আশা করিতে লাগিলাম। কিন্তু দিনের পর দিন কাটিয়া যাইতে লাগিল। বিবাহের দিন নিকটবৰ্ত্তী হইল। তবুও কুসী। আমাকে কিছু বলিল না। এ অবস্থায় আমি কি করিতে পারি? ভগবানের যাহা ইচ্ছা তাঁহাই হইবে, এই কথা ভাবিয়া আমি চুপ করিয়া রহিলাম। বিবাহের আয়োজন হইতে লাগিল। বরযাত্রীদিগের থাকিবার নিমিত্ত রসময়বাবু নিকটে একখানি বাটী ভাড়া করিলেন। বিবাহের পূর্বদিন বর ও বরযাত্ৰিগণ আসিয়া উপস্থিত হইবে। খাদ্যসামগ্ৰী প্রভৃতির তদনুযায়ী আয়ােজন হইতে লাগিল। উজিরগড়ে পুরোহিত ছিল না, যে স্থান হইতে বর আসিবে, কন্যাপক্ষের পুরোহিতও সে স্থান হইতে আসিবে। রসময়বাবুর বৈঠকখানাটি বড় ছিল । তাহার একপার্শ্বে কন্যাদান হইবে । অপর পার্শ্বে ও বারেন্দায় সভা হইবে । ক্রমে বিবাহের পূর্বদিন উপস্থিত হইল। অপরাহ চারিটার গাড়ীতে বর ও বরযাত্ৰিগণ৷ আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বরের পরিধানে মূল্যবান গায়ে ফুলকটা কামিজ, গলায় দীর্ঘ সোনার চেন, হাতে পাথর বসান পানিপথের যাতি 1/ফ্রী’ল” কথা, বরসজ্জার কিছুমাত্র ক্রটি হয় নাই। যুবা বর হইলে এরূপ সজ্জা করে কি না, জ্বৰ্গেই। কিন্তু সজ্জা হইলে কি হয়, বরের রূপ দেখিয়া আমার হরিভক্তি উড়িয়া গেল। বয়সূণ্ঠটি বৎসরের কম নহে, কৃষ্ণকায়, মুখে একটিও দাঁত নাই, মাথায় একগাছি কালো চুল ত কদাকার বৃদ্ধ। তাহার পর, সেই ফোকলা এরূপ কিন্তুতকদাকার রূপ বাহির যে, সত্যকথা বলিতে কি, তাহার দুই গালে দুই থাবড়া মারিতে আমার নিতান্ত ইচ্ছা হইতেছিল। দিগম্বরবাবু আমার কি ক্ষতি করিয়াছেন যে, তাহার উপর আমার এত রাগ? আমার পাতানো মেয়ে কুসী,- “বাবু’ হেন সুন্দর সুশীল যুবকের হাত হইতে, এইরূপ কদাকার হেঁদলকৎকুতের হাতে গিয়া পড়িবে, সেই চিন্তা আমার অসহ্য হইয়াছিল। যাহা হউক, এসব চিন্তা আমি মন হইতে দূর করিতে চেষ্টা করিতে লাগিলাম । বিবাহ সম্বন্ধে কোন কথায় লিপ্ত না থাকিয়া কেবল অভ্যাগত বরযাত্রীদিগের যাহাতে কোন কষ্ট না হয়, সেই কাৰ্য্যে ব্যস্ত রহিলাম। বর ও বরযাত্ৰিগণ তাঁহাদিগের বাসায় উপবেশন করিলে, সে স্থানে সহসা একটু গোলযোগ উপস্থিত হইল। কি হইয়াছে, জানিবার নিমিত্ত তাড়াতাড়ি আমি সে স্থানে গমন করিলাম। সে স্থানে গিয়া দেখিলাম যে, ফোকলা মহাশয় ক্রোধাবিষ্ট হইয়া একজন যুবক বরযাত্রীকে ভৎসনা করিতেছেন। আমাকে দেখিয়া তিনি কিছু অপ্ৰস্তুত হইয়া, ধীরভাবে মিনতি করিয়া সেই যুবককে বলিলেন,- “দে না ভাই, রসিক ! এ কি তামাসার সময়?” বর উত্তর করিলেন,- “এই দেখুন দেখি মহাশয়! আমার র্যাতিখানি লুকাইয়া রাখিয়াছে। S8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comাির্ড” ”***