পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামপদ জিজ্ঞাসা করিল,— “যদি সত্য সত্যই তোমার পিতা তােমাকে বাটী হইতে দূর করেন, তাহা হইলে তুমি কি করিবে? নিজের বা কি করিবে, আর ইহাদের বা কি উপকার করিতে পরিবে?” হীরালাল উত্তর করিল,- “সেইজন্য বিবাহ গোপন করিতে চাহিতেছি, সেইজন্য একথা আপাততঃ গোপন রাখিতে ইচ্ছা করিতেছি। শুন রামপদ! আমি মনে মনে এই স্থির করিয়াছি;-কলিকাতার খরচের নিমিত্ত পিতা আমাকে মাসে মাসে যে টাকা প্ৰদান করেন, তাহা হইতে আমি কিছু কিছু বঁাচাইতে পারিব। আপাততঃ সেই টাকা আমি মেসো-মহাশয়কে দিব। চাকরী করিয়া কুসীর মেসো-মহাশয় যে বেতন পাইতেন, তাহা অপেক্ষা আমি অধিক দিতে পারিব। সুতরাং এ পল্লীগ্রামে তাহাদের আর অন্ন-বস্ত্রের কষ্ট থাকিবে না। তাহার পর, মেসো-মহাশয়ের ভালরূপ চিকিৎসা হয় নাই। এ রোগে চিকিৎসা হইলেও যে বিশেষ কিছু ফল হইবে, তাহা ৰোধ হয় না। তবু, তাহাকে কলিকাতা লইয়া গিয়া একবার চেষ্টা করিয়া দেখিব। সেই সময় কলিকাতাতেই আমি গোপনে কুসীকে বিবাহ করিব। কেবল তুমি ও আর দুইচারিজন আমাদের বন্ধু সে কথা জানিবে, আর কাহাকেও জানিতে দিব না। আমার বোধ হয় যে, পরবৎসর নিশ্চয় আমি বি-এল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতে পারিব। যদি বি-এল পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হইতে পারি, তাহা হইলে পরীক্ষায় পরেই পিতার নিকট গিয়া সকল কথা প্ৰকাশ করিব। পিতা যদি ক্ষমা করেন তো ভালই; কিন্তু যদি রুথ করিয়া তিনি আমার খরচ-পত্ৰ বন্ধ আমি প্রতিপালন করিতে পারিব। সুবিধার বিষয়ুংখ্রষ্ট যে, ইহার ভিতর পিতা আমাকে বিবাহ করিতে বলিবেন না। আমি বি-এল, কি গুঞ্জ, পাশ করিলে, তবে তিনি আমার বিবাহ দিবেন; এই কথা স্থির হইয়াছে।” ぐ。 রামপদর সহিত হীরালালের এইরূৰ্ণ১৯ ক কথা হইল, দুইজনে অনেক পরামর্শ করিল। সেইদিন সন্ধ্যাবেলা রামপদ কুসীয় মেসো-মহাশয়ের নিকট গমন করিল। পিতার অমতে হীরালাল এই কাজ করিবে, সেজন্য মেসো-মহাশয় প্রথম এ প্রস্তাবে সম্মত হইলেন না। কিন্তু রামপদ তাঁহাকে বুঝাইয়া বলিল যে, সম্মতি প্রার্থনা করিতে গেলে হীরালালের পিতা কিছুতেই সম্মতি দান করিবেন না। তাঁহার এই পীড়িত অবস্থা, তাঁহার অর্থ নাই, কুসীর পিতার ব্যবহার, এইরূপ নানা বিষয় রামপদ মেসো-মহাশয়কে বুঝাইয়া বলিল। মাসী-মাও হীরালালের পক্ষ হইয়া স্বামীকে বুঝাইতে লাগিলেন। অবশেষে অগত্যা কুসীর মেসো-মহাশয় এ কাজ করিতে সম্মত হইলেন । মেসোমহাশয় বলিলেন, —“আমি নিশ্চয় বুঝিতেছি যে, এরূপ কাজ করা আমার উচিত নয়। কিন্তু কোন উপায় নাই। কুসীর পিতাকে আমি কত যে চিঠি লিখিয়াছি, তাহা বলিতে পারি না। আমার একখানি পত্রেরও সে উত্তর দিল না; সে একেবারে বে-হেড হইয়া গিয়াছে। পরমা সুন্দরী মেয়ে, আমার অবৰ্ত্তমানে তাহার কি হইবে- তাহাই ভাবনা। কোন একটি ভদ্রলোকের ছেলের হাতে তাহাকে সমৰ্পণ করিয়া যাইতে পারিলে, আমি নিশ্চিন্ত হই; সেইজন্য আমি সম্মত হইলাম। যদি ইহাতে কোন পাপ থাকে, ভগবান আমাকে ক্ষমা করিবেন।” হীরালালের সহিত কুসীর বিবাহ-সম্বন্ধ স্থির হইল। কিন্তু এক রামপদ ভিন্ন একথা আর কেহ। জানিতে পারিল না । SAVO দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.confাির্ড”*********