পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাহিরে একটি বাগানের ভিতর নিভৃতে বাস করিতেছিল। কিন্তু সন্ধ্যার পর কুসীকে লইয়া সে নানাস্থানে বেড়াইতে যাইত। সেইজন্য কুসী কাশীর পথ-ঘাট চিনিতে সমর্থ হইয়াছিল। সেজন্য কোন বন্ধুর নিকট হইতে হীরালাল একটি পাঁচনিলি পিস্তল চাহিয়া লইয়াছিল। কিন্তু পিস্তলের পাশ তাহার নিকট ছিল না। কাশীতে গিয়া সে কথা তাহার স্মরণ হইল। যে বাগানে সে বাস করিতেছিল, সে স্থানে পিস্তল ছুড়িলে পাছে পুলিসের লোক আসিয়া কোন কথা জিজ্ঞাসা করে, সে নিমিত্ত একদিন প্ৰাতঃকালে সে দূরে মাঠের মাঝে গিয়া এক নির্জন স্থানে বসিয়া পিস্তলটি পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছিল। পিস্তলের ব্যবহার হীরালাল ভাল ভালরূপ জানিত না। অসাবধানতাবশতঃ সহসা একবার আওয়াজ হইয়া, তাহার স্কন্ধাদেশে গুলী প্ৰবেশ করিল। বয়ঃক্রমসুলভ সাহস ও চপললতাবশতঃ নিজেই ছুরি দিয়া আপনার স্কন্ধের মাংস কাটিয়া সে গুলিটি বাহির করিয়াছিল। তাহার পর চাদরখানি ছিড়িয়া সেই ক্ষতস্থানের উপর বাধিয়া, বাসায় প্রত্যাগমন করিয়াছিল। সেই ক্ষতস্থান হইতে অতিশয় রক্তস্রাব হয়। সেই সূত্রে হীরালালের সহিত আমার সাক্ষাৎ হয়। বলা বহুল্য যে, হীরালাল কাশীর সেই “বাবু” ব্যতীত আর কেহ। নহে। পিস্তলের গুলী দ্বারা সে আহত হইয়াছে। তাহা শুনিয়া কুসীর পাছে অতিশয় ভয় হয়, পাছে কান্নাকাটি করে, সেজন্য এ ঘটনার প্রকৃত বিবরণ কুসীকে হীরালাল প্ৰদান করে নাই। পূজার ছুটির পর হীরালাল কলিকাতায় প্রত্যাগমন করিল। তড়িৎ-চিকিৎসায় মেসোমহাশয়ের প্রথম প্রথম কিছু উপকার হইয়াছিল বটে। সে উপকার চিরস্থায়ী হইল না। আরোগ্যলাভ সম্বন্ধে হতাশ হইয়া, মেসো-মহাশয় কুসীকে লইয়া স্বগ্রামে প্রত্যাগমন করিলেন । ༦༦༦) হীরালাল যখন কাশী গিয়াছিল, সেই সূর্ডেশ এক বড় শােচনীয় ঘটনা ঘটিয়াছিল। পূজার ছুটির সময় রামপদ গ্রামে গিয়াছিল। ভাগে রামপদ ম্যালেরিয়া জ্বর দ্বারা আক্রান্ত হইয়া, চারি দিনের জুরে মৃত্যুমুখে হইল। কলিকাতায় প্রত্যাগমন করিয়া হীরালাল সেই শোক-সংবাদ শুনিয়া, নিতান্ত কাতর পড়িল। রামপদ উচ্চভাবাপন্ন পরোপকারী সত্যনিষ্ঠ যুবক ছিল। দেশের দূরদৃষ্ট যে, এরূপ যুবক অকালে মৃত্যুমুখ পতিত হইল! ক্ৰমে শীতকাল উপস্থিত হইল। আগ্রহায়ণ মাসে আর একটি বিপদ ঘটিল। একদিন রাত্রিকালে কিরূপ একপ্রকার শব্দ হইয়া, মেসো-মহাশয়ের নিঃশ্বাস- প্ৰশ্বাসের কাৰ্য সম্পন্ন হইতেছিল। সেই শব্দে তাঁহার গৃহিণীর ও কুসীর নিদ্ৰাভঙ্গ হইল। দুইজনে উঠিয়া দেখিলেন, যে, মেসো-মহাশয়ের জ্ঞান নাই, মুখে কথা নাই। তাহার পরদিন তাঁহার মৃত্যু হইল। সকলেই জানিত যে, তিনি আর অধিক দিন জীবিত থাকিবেন না। তাহার পর, শেষ অবস্থায় তাহার বঁচিয়া থাকা একপ্রকার বিড়ম্বনা হইয়াছিল। সে নিমিত্ত তাঁহার মৃত্যুজনিত শোক পূৰ্ব্ব হইতেই আত্মীয়-স্বজনের একপ্রকার সহ্য হইয়াছিল। এখন কুসীর অভিভাবক বল, সহায় বল, সম্পত্তি বল, এক হীরালাল ব্যতীত জগতে আর কেহ রহিল না। ফোকুলা দিগম্বর SVO sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro