পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ ঘোর বিকার এখন আমাদিগকে পুনরায় সেই মেসোমহাশয়ের গ্রামে যাইতে হইবে। দুই বৎসর পূৰ্ব্বে সে স্থানে যাহা ঘটিয়াছিল, এখন তাঁহাই আমি বলিব। লোচন ঘোষ যে চিঠি লিখিয়াছিলেন, কুসী তাহা ভালরূপে পাঠ করিল। তাহার সহিত যে সংবাদপত্র আসিয়াছিল, তাহাও সে ভালরূপে পাঠ করিল। চিঠি ও সংবাদপত্র পাঠ করিয়া এবার কুসীর যে মূৰ্ছা হইল, সে মূৰ্ছা আর সহজে ভাঙ্গিল না। সমস্ত রাত্রি কুসী অচেতন অবস্থায় রহিল। শেষ রাত্ৰিতে অতিশয় জুর হইল, চক্ষু দুইটি রক্তবর্ণ হইল, কপালে হাত দিয়া সে কাতরতাসূচক শব্দ করিতে লাগিল, এ-পাশ ও-পাশ সে মস্তক চালনা করিতে লাগিল। মাসী একদৃষ্টি তাহার মুখপানে চাহিয়া রহিলেন, একটু ছিন্নবস্ত্ৰ জলে ভিজাইয়া মাঝে মাঝে তাহার ওষ্ঠ ও চক্ষুদ্বয় মুছাইতে লাগিলেন। মাসী নিজেও একপ্রকার জ্ঞানাহত হইয়াছিলেন । অশ্রদ্ধজলে ক্রমাগত তাহার পরিধেয় বস্ত্র ভিজিয়া যাইতেছিল। প্ৰাতঃকাল হইলে তিনি একজন প্ৰবীণ প্ৰতিবাসীকে ডাকিয়া আনিলেন। ইনি ভালরূপ নাড়ী পরীক্ষা করিতে জানিতেন। হাত দেখিয়া ইনি বলিলেন যে, কুসীর ঘোর জুর-বিকার হইয়াছে। সত্ত্বর ডাক্তার আনয়ন করা আবশ্যক। মাসী পূৰ্ব্বদিন দুইশত টাকা পাইয়াছিলেন। র বন্ধু লোচন ঘোষ তাহা প্রেরণ করিয়াছিল। একজন প্ৰতিবাসীকে তিনি ডাক্তার পাঠাইলেন। ডাক্তার আসিয়াই কুসীর মস্তক মুণ্ডনের আর্দেশ করলেন। নাপিত আসিল, কুসীকে নেড়া করিবার নিমিত্ত সমুদয় আয়োজন হইল। এরূপ অস্থির অবস্থায় ছিল, এরূপ উঠিতে বসিতেছিল ও মাথা নাড়িতেছিল যে, ক্ষুর চালনা করিতে সাহস করিল না। মস্তক মুণ্ডন না করিবার আর একটি কারণ ছিল সঁ কুসীর অলৌকিক রূপ দেখিয়া ডাক্তার ও নাপিত, দুইজনেরই দয়া হইল। তাহার সে উজ্জ্বল সুদীর্ঘ কেশরাশি কাটিয়া ফেলিতে দুইজনেরই মায়া হইল। সেই সময় দুই-তিনজন প্রতিবাসিনীও আসিয়া বলিলেন, — “তা কি কখন হয়! আইবুড়ো মেয়ে! সহজেই ইহার বিবাহ হইতেছে না। তাহার উপর নেড়া-বেচা করিলে, আর কি ইহার বিবাহ হইবে?” কুসীর সেই কটিদেশ-লম্বিত ঘোর কৃষ্ণবর্ণের উজ্জ্বল কেশরাশি এইরূপে বঁচিয়া গেল। সেই চুলের উপরেই ছিন্নবস্ত্র রাখিয়া ডাক্তার জলসিঞ্চন করিতে লাগিলেন। কিন্তু তাহাতেও কুসীর জ্ঞান হইল না। সেইদিন বৈকালবেলা কয়েকজন প্রতিবাসিনী কুসীকে দেখিতে আসিয়াছিলেন। মাসী কুসীর নিকট বসিয়া কাঁদিতেছিলেন। একজন প্ৰতিবাসিনী বলিলেন,- “আহা! কাদিবে না গা! ছয় দিনের মেয়ে মানুষ করিয়াছে। সংসারের ওর আর আছে কে, তা বল?” আর একজন বলিলেন,- “আর শুনিয়াছ! সেই যে রামপদর সঙ্গে আমাদের গ্রামে একটি ছেলে আসিত, যাহার নাম মাণিকলাল না কি ছিল,- “আহা! সে ছেলেটি মারা পড়িয়াছে। হঠাৎ নীেকাডুবি হইয়া মারা পড়িয়াছে। কৰ্ত্তা খবরের কাগজে দেখিয়াছেন।” আর একজন বলিল,— “তাহার নাম হীরালাল ছিল। ছেলেটি বড় ভাল ছিল। আহা! তার ফোকুলা দিগম্বর Sbrరి sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro