পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাপের বাড়ীর গ্রামে সেই তিনকড়ির মা; তাহারও দুইবার বিবাহ হইয়াছিল, এখন কেমন তাহার সুখ-ঐশ্বৰ্য হইয়াছে। আমি যদি চুপ করিয়া থাকি, আর এক কাজ যদি হইয়া যায়, তাহা হইলে দো-পড়ার মত ততটা দোষের কথা হয় না।” ইরালাল নাই। সেজন্য “ততটা।” দোষের কথা হয় না । হীরালালকে তাহার মনে পড়িয়া গেল। একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস তিনি পরিত্যাগ করিলেন, তাহার চক্ষুতে জল আসিয়া গেল। ইহার মধ্যে একটা একাদশী পড়িল। একাদশী করিতে মাসী,-কুসীকে বার বার মানা করিতেন; কিন্তু কুসী। তাহা শুনিত না। সে নিরন্থ উপবাস করিত। গ্ৰীষ্মকাল পড়িয়াছে, এই একাদশীর দিন সূৰ্যের বড়ই উত্তাপ হইল। জল-পিপাসায় তাহার বুকের ছাতি ফাটিয়া যাইতে লাগিল। সমস্তদিন কুসী মাথায় ও গায়ে জল ঢালিতে লাগিল। তাহা দেখিয়া মাসীর মনোদুঃখের আর সীমা পরিসীমা রহিল না। দো-পড়া মেয়ের কথা এখন হইতে সৰ্ব্বদাই তাহার মনে জাগিতে লাগিল। তা যদি হয়, তবে এ বা নয় কেন? তিনি এইরূপ চিন্তা করিতে লাগিলেন। যাহা হউক, কি করা কীৰ্ত্তব্য, এখনও মাসী তাহা স্থির করিতে পারিলেন না। কিন্তু পঞ্জাবে যাইবার নিমিত্ত তিনি জিনিষপত্ৰ গুছাইতে সে ভাঙ্গা বাক্স হইতে লোচন ঘোষের চিঠি ও সেই খবরের কাগজ বাহির হইল। পোড়াইবার নিমিত্ত সেই দুইখানি কাগজ মাসী রান্নাঘরে লইয়া গেলেন। উনানে ফেলিয়া দিবার পূৰ্ব্বে তিনি চিঠিখানি একবার পড়িয়া দেখিলেন। তাহার পর খবরের কাগজের সেই স্থানটিও পাঠ করিলেন। সেই লাল চিহ্নিত স্থানটি পাঠ করিয়া, তিনি কাগজখানির এ-দিক ও-দিক দেখিতে লাগিলেন। সহসা আর একটি স্থানে তাঁহার দৃষ্টি পড়িল। আর একটি সংবাদের প্রচুরুঞ্জ বড় বড় অক্ষরে “বিধবা-বিবাহ” এই দুইটি কথা ছিল। কোন স্থানে এক বিধবাকাগজে প্ৰকাশিত হইয়াছিল। চিঠি ও দুইখানি পুনরায় তুলিয়া রাখিলেন। মাসী ভাবিতে লাগিলেন, তবে বিপ্লৱী-বিবাহ হয়। বিদ্যাসাগরের কথা তিনি শুনিয়াছিলেন। আমার মুখপানে চাহিয়া য় মাসী বলিলে,— “দেখ ডাক্তারবাবু! কুসীকে আমি প্রতিপালন করিয়াছিলাম। তাহার অবস্থা দেখিয়া আমার বুক ফাটিয়া যাইতেছিল; আমি ভাবিলাম যে, ইহাতে যদি কোন পাপ থাকে তো সে পাপ আমার হউক, কুসীর যদি পুনরায় বিবাহ হয় তো হউক, তাহাতে আমি প্রতিবন্ধক হইব না। কিন্তু আমি তখন এই বলিয়া মনকে প্ৰবোধ দিলাম যে, ইহাতে কোন পাপ নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয় পণ্ডিত, ধাৰ্ম্মিক, দয়াবান, পরোপকারী লোক ছিলেন। ইহাতে যদি পাপ থাকিত, তাহা হইলে কখনই তিনি বিধান দিতেন। बना ।" আমি বলিলাম,-“যে-সকল বালিকা অতি অল্পবয়সে বিধবা হয়, স্বামীর সহিত যাহাদের কখন সাক্ষাৎ হয় নাই, সংসার-ধৰ্ম্মেৱ বিষয়ে যাহারা কিছুই জানে না, এইরূপ বিধবা বালিকাদিগের পুনরায় বিবাহ দিবার নিমিত্ত বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধান দিয়াছিলেন।” মাসী উত্তর করিলেন,- “অতশত আমি বুঝি নাই। কুসীর পুনরায় বিবাহ হইলে যে কোন পাপ হইবে না, তাহাই ভাবিয়া সে সময় আমি মনকে প্ৰবোধ দিলাম। আমি ভাবিলাম যে, আমি নিজে উদ্যোগ করিয়া এ কাজ করিব না। তবে হয় হউক, তাহাতে আমি আপত্তি করিব। না। এইরূপ ভাবিলাম বটে, কিন্তু হীরালালের জন্য আমার মনে যে কি শোক উথলিয়া উঠিল, তাহা আর তোমাকে আমি কি বলিব! যাহা হউক, আমি পঞ্জাবে আসিবার জন্য ব্যস্ত হইতে "* firls six gas se! - www.amarboicom a ՀԵ Գ