পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ওটা ঠাওর হয় নাই এই বলিয়া মাসী ঝনৎ করিয়া কপাট বন্ধ করিয়া দিলেন। আমি এমনি বোকা যে, তবুও মাসীর কথা বুঝিতে পারিলাম না। সন্ন্যাসী ও রসময়বাবু বৈঠকখানায় আছেন শুনিয়া, আমি সেইস্থানে গমন করিলাম। সে স্থানে গিয়া দেখিলাম যে, কেবল তাহারাই দুইজনে আছেন, অন্যকোন লোক নাই। তাঁহাদের দুইজনে কথোপকথন হইতেছিল। বৈঠকখানায় গিয়া আমি যাই পদাৰ্পণ আসিয়া আমাকে প্ৰণাম করিয়া আমার পদধূলি গ্ৰহণ করিলেন। আমি বলিলাম,- “ও কি করেন! ও কি করেন! বয়সে ছোট হইলে কি হয়, আপনি সন্ন্যাসী, আপনি নারায়ণ!” সন্ন্যাসী হাে হাে করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। তাহার পর তিনি বলিলেন,- “আপনি যে আমাকে চিনিতে পারেন নাই, প্রথমেই তাহা আমি বুঝিয়াছিলাম।” এইবার আমি ভালরূপে সন্ন্যাসীকে নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলাম। ভালরূপে তাঁহাকে দেখিয়া বিস্ময়ে ও আনন্দে আমার হৃদয় পূর্ণ হইয়া গেল!! আশ্চৰ্য্য হইয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “কে ও, বাবু!” “হাঁ, আমি সেই কাশীর বাবু”, এই কথা বলিয়া পুনরায় আমাকে প্ৰণাম করিল ও পুনরায় আমার পদধূলি লইল । কুসুমের মাসী বাড়ীক্টেরিতে কেন এত আপত্তি করিতেছিলেন, কেন আমাকে বার বার পাগল বলিতেছিলেনন্তের্গহার অর্থ এখন আমি বুঝিতে পারিলাম। সন্ন্যাসীবেশে হীরালাল উপস্থিত হইবামাত্ৰাৰ্থতিনি তাহাকে চিনিতে পারিয়াছিলেন। সেজন্য বিবাহসভা হইতে তিনি তৎক্ষণাৎ উঠিতুৰ্গিয়া, রসময়বাবুর স্ত্রীর নিকট হইতে টাকা লইয়া বাড়ী হইতে পলায়ন করিয়াছিলেন। ক কি করিয়া পুনরায় তিনি মুখ দেখাইবেন, সেই কুসুমও যে হীরালালকে চিনিতে পারিয়াছিল, তাহাও আমি এখন বুঝিতে পারিলাম। বাবুর কণ্ঠস্বর এখন বুঝিতে পারিলাম। বাবুর সেই ঔষধের বলেই তাহার চৈতন্য উৎপাদিত হইয়াছিল। চেতন হইয়া সহজে তাহার মনে প্রতীতি হয় নাই যে, মৃত্যমানুষ পুনরায় ফিরিয়া আসিয়াছে। সেজন্য সে বারবার নিরীক্ষণ করিয়াছিল ও চক্ষু মুদ্রিত করিয়া চিন্তা করিয়াছিল। অবশেষে যখন তাহার মনে প্ৰতীতি হইল যে, এই সন্ন্যাসী সত্য সত্যই তাহার “বাবু”, তখন সে আপনার হাতটি তাহার গলায় দিল, আপনার মস্তকটি তাহার বক্ষঃস্থলে রাখিল, যেন এ জীবনে আর তাহা হইতে সে বিচ্ছিন্ন হইবে না। আমি যে “বাবু”কে চিনিতে পারি নাই, তাহার কারণ এই যে, কাশীতে অল্পক্ষণের নিমিত্ত আমি কেবল দুই-তিন বার তাহাকে দেখিয়াছিলাম। তাহার পর, তাহার গোপ-দাড়ি উঠে নাই। এখন নবীন শ্মশ্র দ্বারা তাহার মুখমণ্ডলের আধোদেশ আবৃত হইয়াছিল। পথশ্রমে তাহার সে উজ্জ্বল কান্তিও অনেকটা মলিন হইয়া গিয়াছিল। রসময়বাবু আমাকে বলিলেন, — "জামাই বাবু আমাকে সকল কথা বলিয়াছেন। এরূপ ঘটনা উপন্যাসেও দেখিতে পাই না। এত অপমান এত লাঞ্ছনার পর আমার যে আবার সুখ হইবে, তাহা আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই। এখন কুসুমের মাসী বাড়ী আসিলেই হয়, তাহা হইলে Siso দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comাির্ড”**”**