পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিবে। কলিকাতার লোক জানিতে পারিলে, আমার দেশের লোকও জানিবে। সেজন্য কুসীর নিকটও গোপন করিব, এইরূপ আমি স্থির করিলাম। কিন্তু তাঁহাতে যে এরূপ বিপদ ঘটিবে, তাহা আমি বুঝতে পারি নাই। “তাহার পর আজি ভাবিলাম যে, সংসার খরচের নিমিত্ত মাসী-মায়ের নিকট কিছু টাকা পাঠাইতে হইবে। সেইজন্য আমি নিজেই নিজের মৃত্যু-সংবাদ দিতে বাধ্য হইলাম। লোচন ঘোষের নামে সেই পত্ৰখানি লিখিয়া পাঠাইলাম, আর আমার মৃত্যুসংবাদ সম্বলিত একখানি সংবাদপত্রও প্রেরণ করিলাম।” “কিন্তু এত অধিক দিন যে আমাকে অজ্ঞাতবাসে থাকিতে হইবে, তখন তাহা আমি ভাবি নাই। আমি মনে করিয়াছিলাম যে, আপাততঃ আমাকে একটি চাকরীর যোগাড় করিতে হইবে। চাকরী হইলেই আমি কুসীকে আপনার নিকটে আনিব। গেরুয়া বস্ত্র ধারণ করিলে অল্পখরচে নানা স্থান ভ্ৰমণ করিতে পারিব, সেজন্য সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করিলাম। কিন্তু এরূপ বেশ ধারণ করিয়া আমি ভাল কাজ করি নাই। পাছে লোকে আমাকে ভণ্ড মনে করে, সেজন্য অনেক স্থানে চাকরীর চেষ্টা করিতে পারি নাই। সত্যকথা বলিতে কি, আমি চাকরীর চেষ্টা ভাল করিয়া করি।-- ও নাই। মনে করিলাম যে, কুসীর নিকট আমি দুইশত টাকা প্রেরণ করিয়াছি। তাহাতে দুই বৎসর পল্লীগ্রামে একরূপ চলিয়া যাইবে । এই মনে করিয়া ভারতবর্ষের নানা স্থানে আমি ভ্ৰমণ করিতে লাগিলাম । “আজ প্ৰায় একমাস হইল, কুসীর জন্য আমার প্রাণ্ড বড়ই কাতর হইল। আমি তখন মহীশূর অঞ্চলে ভ্ৰমণ করিতেছিলাম। তৎক্ষণাৎ আসিলাম। কলিকাতা হইতে ::::ಜ್ಜೈ নিকট গমন করিয়াছেন। কুসীর পিতা এ আছেন, সে কথা আর আমি কাহাকেও জিজ্ঞাসা করিলাম না। কুসীর পিতা যে থাকিতেন, তাহা আমি জানিতাম। আমি মনে করিলাম যে, এখনও তিনি সেই আছেন । আমি কলিকাতায় প্ৰত্যাগমন করিলাম । কলিকাতা হইতে ব্ৰহ্মদেশে গমন করিলাম। ব্ৰহ্মদেশে গিয়া আমি জানিতে পারিলাম যে, তিনি পঞ্জাবে বদলি হইয়াছেন। তখন আমার বড় ভয় হইল। আমি ভাবিলাম,-কোন বিপদ ঘটিবে না কি? তা না হইলে এরূপ বিড়ম্বনা হয় কেন? যাহা হউক, তাড়াতাড়ি আমি কলিকাতায় কালবিলম্ব না করিয়া পঞ্জাবে আসিলাম। শ্বশুর মহাশয় প্রথম যে বড় ছাউনিতে বদলি হইয়াছিলেন, গতকল্য সেই স্থানে এই বিবাহের কথা শুনিলাম। প্রথম মনে করিলাম যে, শ্বশুর মহাশয়ের অন্য কোন কন্যা আছে! কিন্তু দুই বৎসর পূৰ্ব্বে আমি শুনিয়াছিলাম যে, তিনি আমি সেই বড় ছাউনি হইতে রওনা হইলাম। পথে কত কি যে ভাবিতে লাগিলাম, তাহা আপনাকে আর কি বলিব। আমি যে গাড়ীতে আসিলাম, সেই গাড়ীতে দিগম্বরবাবুর স্ত্রীও আসিয়াছিলেন। ফলকথা, আমিই তাঁহাকে ও বিন্দীকে টিকিট কিনিয়া দিয়াছিলাম, কিন্তু তিনি যে আমার স্ত্রীর বরের স্ত্রী, আর এই অভিনয়ে তিনি যে একজন প্ৰধান Actress (নায়িকা), তখন তাহা আমি জানিতে পারি নাই। তাহার পর কি হইল, আপনি জানেন।” Α. VOO দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comন্মিলাক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ