পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাসা-খরচ বঁাচাইতেন ও দক্ষিণা গ্রহণে যৎকিঞ্চিৎ উপাৰ্জন করিতেন। আমি শুনিয়াছিলাম যে, ঠাকুর মহাশয়ের উদ্যোগে দুই-একজন খোলার-বাটী-নিবাসিনীর সহিত আমার ভ্রাতার আলাপ-পরিচয় হইয়াছিল। কিন্তু এ সকল কথা আমি বিশ্বাস করি নাই। এক্ষণে আমার মনে সন্দেহ হইল যে, ওকুর যেভাবে চলিতেছে, সেইভাবে চলিলে গুরুদেবের লাভ আছে, নিতান্ত অলাভ নাই। কথোপকথন করিতে করিতে খোয়াড়ের ভিতর হইতে ছাগলীদিগের কাতরতাসূচক চীৎকার আমি বারবার শুনিতে পাইলাম। অনেকক্ষণ সেইস্থানে বসিয়া এখন আর আমার ততটা অন্ধকার বোধ হইল না। আমি দেখিলাম যে, ছাগলগুলি অস্থিচৰ্ম্মসার হইয়া গিয়াছে, ক্ষুধায় ও পিপাসায় তাহারা ছট্‌ফটু করিতেছে। খোয়াড়ে স্থান অতি সঙ্কীর্ণ ছিল। তাহার ভিতর দশটি ছাগল ধরে কি না সন্দেহ। কিন্তু ঠেশাঠেশি করিয়া ঠাকুর মহাশয় পঁচিশটির অধিক ছাগলে তাহা পূর্ণ করিয়াছিলেন। অতিকষ্টে গায়ে গায়ে ঠেশা-ঠেশি করিয়া তাহারা দাড়াইয়াছিল, শয়ন করিবার স্থান একেবারেই ছিল না। আমি বলিলাম,- “ঠাকুর মহাশয়! আপনার ছাগলগুলির বোধহয় বড় জল-পিপাসা পাইয়াছে।” গুরুদেব উত্তর করিলেন,- “দুই-একদিনে সমুদয় শেষ হইয়া যাইবে। জল দিবার আর আবশ্যক নাই।” আমি বলিলাম,- “উহাদের ক্ষুধাও বোধ হয় পাইয়াছে।” গুরুদেব বলিলেন, — “ক্ষুধা নিশ্চয় পাইয়াছে। ভূৰু ভিন্ন দিন উহাদিগকে ক্ৰয় করিয়া আমি বলিলাম,- “এরূপ কয় অনাহারে থাকে?” গুরুদেব বলিলেন,- “সাত-আট দিনের অধিক ইহাদিগকে অনাহারে থাকিতে হয় না। সাত-আট দিনের মধ্যেই এক এক খোপ শেষ হইয়া যায় ।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “একটু একটু জলপান করিতে দেন না কেন?” গুরুদেব উত্তর করিলেন,- “উহারা গায়ে গায়ে দাড়াইয়া আছে। পিপাসায় উহাদের জ্ঞান নাই। জল দিলে বড়ই গোলমাল করে।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “তবে এ সাত-আট দিন একটু জল পৰ্যন্ত উহারা পায় না?” গুরুদেব বলিলেন,- “পূৰ্ব্বে দুই-একদিন অন্তর এক-আধা কলসী জল দিতাম। কিন্তু জল দেখিলে তাহা পান করিবার নিমিত্ত বড়ই হুড়াহুড়ি করে । সেজন্য আর দিই না।” খোয়াড়ের দিকে একটু নিরীক্ষণ করিয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “এগুলি কি খাসি?” গুরুদেব উত্তর করিলেন,- “খাসি! খাসি কোথায় পাইব! খাসির দাম দিবে কে? দুই পয়সা উপাৰ্জ্জন হইবে বলিয়া ব্যবসা করিতেছি। খাসির মাংস দিলে কি আর চলে!” আমি বলিলাম,- “পাঠাও তো নয়!” গুরুদেব বলিলেন,- “পাঠা?” তুমি পাগল! পাঠার দাম কত! লোককে দেখাইবার নিমিত্ত কেবল তিন-চারিটিা পাঠা। রাখিয়াছি। বাকিগুলি পাঠী ।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “ পাঠী! স্ত্রী পশু না খাইতে নাই?” \} ত্ৰৈলোক্যনাথ রচনাসঃ SSR uskla »ižo 333) a www.amarboi.como §න්දී