পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভ্ৰাতার নিকট হইতে আমার এ প্রস্তাবের কোনরূপ উত্তর পাইলাম না । করিতেছিলাম। সহসা সাত-আট জন লোকের সহিত আমার ভ্রাতা সেই ঘরে প্রবেশ করিল। ঘরে প্রবেশ করিয়াই তাহারা আমার হাত-পা বঁধিয়া ফেলিল। আমি চীৎকার করিতে চেষ্টা করিলাম, কিন্তু কাপড় দিয়া তাহারা আমার মুখ বন্ধ করিয়া দিল। তাহার পর, আমাকে শয়ন করাইয়া তাহারা আমার মস্তক মুণ্ডন করিয়া দিল ও সেই মুণ্ডিত মস্তকে ও ঘাড়ে কাগজের মত কি বসাইয়া দিল। অবশেষে আমার পদদ্বয় তাহারা শৃঙ্খলে আবদ্ধ করিল। কিছুক্ষণ পরে আমার মস্তক ও ঘাড় অতিশয় জুলিতে লাগিল। সে স্থানে হাত দিতে পারিলে আমার যাতনার অনেক শান্তি হইত। কিন্তু তাহারা আমার হাত বন্ধন করিয়া রাখিয়াছিল। শরীরের কোন স্থান চুলকাইতে অথবা কোন স্থানে বেদনা হইলে সে স্থানে হাত দিতে না পারিলে যে কি বিষম কষ্ট হয়, তাহা যে ভুগিয়াছে, সেই জানে। কিছুক্ষণ পরে আমার বোধ হইল যে, তাহারা আমার মস্তক ও ঘাড়ে বেলেস্তারা দিয়াছে, কারণ সেই দুই স্থানে বড় বড় দুইটি ফোস্কা হইয়াছে বলিয়া আমার অনুভব হইল। রাত্রি দুইপ্রহর পর তাহারা আমার মুখ খুলিয়া দিল। তখন আমি আমার ভ্ৰাতাকে ডাকিলাম। ভ্ৰাতা ঘরের বাহিরে ছিল, কিন্তু আমার নিকট আসিল না। আমার প্রতি এরূপ নিষ্ঠুর ব্যবহারের কারণ কি, তখন আমি আর সকলকে জিজ্ঞাসা করিলাম। নিকটস্থ গ্রামের সেই যে হাতুড়ে ডাক্তারের কথা ইতিপূৰ্ব্বে উল্লেখ করিয়াছিলাম, তিনি এই গুণ্ডাদের মধ্যে ছিলেন, আর তিনিই আমার মস্তক করিয়া ঘাড়ে ও মাথায় বেলেস্তারা দিয়াছিলেন। তিনি বলিলেন,- “মহাশয়ের মস্তিষ্ক কিছু বিকৃত হইয়াছে। চিকিৎসার নিমিত্ত আপনার ভ্ৰাতা আমাকে আনিয়াছেন। ভয় নাই, আরোগ্যলাভ করিতে পরিবেন। তবে আপনার এই উন্মত্ততা কিছু গুরুতর। অ্যান্থাগার্লাভ করিতে কিছু বিলম্ব হইবে। এইরূপ উন্মত্ততার গুণ এই যে, উন্মাদের মনে খুন করিতে প্ৰবৃত্তি জন্মে। সেজন্য মহাশয়কে বন্ধন করিয়া রাখিতে আমরা বাধ্য শ্ৰীইয়াছি । আমাদের অপরাধ ক্ষমা করিবেন। আপনার মঙ্গলের নিমিত্ত আপনাকে আপাততঃ কিছু কষ্ট দিতে বাধ্য হইতেছি।” আমি উত্তর করিলাম,- “আমি উন্মত্ত! আমি পাগল! আমার উপর এ অত্যাচার কেন? মা'র পেটের ভাই হইয়া জ্যেষ্ঠ সহােদরের উপর কেহ যে এরূপ নিষ্ঠুর ব্যবহার করিতে পারে, তাহা আমি স্বপ্নেও কখন ভাবি নাই। আর এ গ্রামের লোকই বা কিরূপ নিষ্ঠুর যে, তাহাদের সম্মুখে এরূপ ঘোরতর অত্যাচার হইতেছে, অথচ কেহ কিছু বলিতেছে না!” ডাক্তার উত্তর করিলেন, — “যে পাগল হয়, সে নিজে বুঝিতে পারে না। অন্য লোককে সে পাগল মনে করে। আপনিও সেইরূপ মনে করিতেছেন। গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই জানে যে, আপনি পাগল। তা না হইলে গুরুর নামে কেহ পুলিসে নালিস করে না, পাগল না। হইলে ওলাউঠা রোগগ্ৰস্ত একটা সাঁওতালকে মাঠ হইতে ঘরে কেহ আনে না।” আমি দেখিলাম যে, বাক্য দ্বারা এ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করা বৃথা। তথাপি আমি বুলিলাম,- “আমার ভ্রাতাকে একবার ডাকিয়া দাও। আমাকে ছাড়িয়া দিতে বল। পৈতৃক সমুদয় সম্পত্তি কল্যই তাঁহাকে আমি লিখিয়া দিব। পৈতৃক সম্পত্তির এক কপৰ্দাকেও আমার প্রয়ােজন নাই। তাহার পর কল্যই আমি এ স্থান পরিত্যাগ করিয়া আমার শ্বশুরালয়ে গমন করিব।” এইরূপ অনেক বিনয় করিয়া আমি বলিলাম, কিন্তু আমার ভ্রাতা আমার নিকটে আসিল না; কেহই আমাকে ছাড়িয়া দিল না। চীৎকার করিতে করিতে বন্ধন হইতে মুক্ত হইবার নিমিত্ত ଧ୍ରୁ ଓft-୩ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro VDS