পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে রাত্রি এইভাবে কাটিয়া গেল। পরদিন প্ৰাতঃকালে গির্জার নিম্নে দুই-একটি লোককে আমি দেখিতে পাইলাম। উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিয়া আমি তাহাদিগকে ডাকিতে লাগিলাম। কিন্তু আমার চীৎকার কেহই শুনিতে পাইল না, কেহই আমাকে দেখিতে পাইল না। সমস্ত দিন আমি বায়ুবলে সেইরূপ চক্ৰবৎ ঘুরিতে লাগিলাম। মাঝে মাঝে সমস্ত দিন আমি চীৎকার করিলাম। কিন্তু প্ৰাণ বঁাচাইবার নিমিত্ত আমার সমুদয় চেষ্টা বিফল হইল। গির্জার সেই চূড়া অনুসরণ করিয়া কতবার নিম্নে অবতরণ করিবার চেষ্টা করিলাম, কিন্তু তাহাতেও আমি কৃতকাৰ্য হইতে পারিলাম না। এইরূপে চারিদিন ও পীচ রাত্রি কাটিয়া গেল। ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় আমার শরীর অবসন্ন হইয়া পড়িল। কখন আমাকে সেই আশ্রয়স্থান ছাড়িয়া দিতে হয়, জ্ঞানশূন্য হইয়া কখন আমি ভূতলে পতিত হই, এখন কেবল সেই চিন্তা মনে উদিত হইতে লাগিল। কিন্তু বলিতে আমার লজ্জা হয়, জীবনধারণের নিমিত্ত এই সময় আমি একটি উপায় আবিষ্কার করিলাম। সে উপায়টি অতি ঘূণিত! কিন্তু কি করিব! এরূপ অবস্থায় পড়লে মানুষের ভাল-মন্দ বিচার থাকে না । মহাদেববাবুকে লক্ষ্য করিয়া ঘনশ্যাম বলিলেন, — “আডিডাধারী মহাশয়! আমরা দেখিলাম যে, গড়গড়ি মহাশয় সেই জীবনধারণের উপায় গোপন করিতেছেন। সে নিমিত্ত আঁহাকে আমরা নানারূপ প্ৰবোধবচনে উৎসাহিত করিলাম। আমাদের প্রবোধবাক্যে আশ্বাসিত হইয়া গড়গড়ি মহাশয় পুনরায় তাহার গল্প আরম্ভ করিলেন।” এই কলিকাতা সহরে অসংখ্য কাক আছে। সকল তাহা উপবিষ্ট হয়। গির্জার মাথায় কয়দিন আমাকে ঘূর্ণিত হইতে দেখিয়া কাকেরা মনুেdকরিল যে, এ বস্তুটা মানুষ নহে, বায়ুর গতিনিৰ্দেশ করিবার নিমিত্ত কোনরূপ একটা যন্ত্র“। সাহেবরা এই যন্ত্র এরূপ উচ্চ স্থানে সংস্থাপিত করিয়াছেন। এইরূপ মনে করিয়াঙ্কসকেরা নিৰ্ভয়ে আমার মস্তকে বসিতে আরম্ভ করিল। সেই কাক ধরিয়া আমি ভক্ষণ লাগিলাম, তাহার মাংসভক্ষণে ক্ষুধা ও শোণিত পানে তৃষ্ণা নিবারণ করিতে মণ্ডস্টংএরূপ স্থানে রন্ধন করিবার সুযোগ ছিল না; সুতরাং কাকগুলিকে কাচা অবস্থাতেই ভক্ষণ করিতে হইল। গির্জার মাথায় এইরূপে আমি দিনাতিপাত করিতে লাগিলাম! কিন্তু এরূপ ঘূর্ণায়মান অবস্থায় গির্জার শিখরদেশে মানুষ চিরজীবন অতিবাহিত করিতে পারে না। কিরূপে এই ঘোর বিপদ হইতে মুক্ত হইব, সৰ্ব্বদাই সেই চিন্তা করিতে লাগিলাম। চিন্তা করিতে করিতে বেলুনের কথা আমার স্মরণ হইল। বেলুনের সহায়তায় মানুষ আকাশে উডতীয়মান হয়। তাহার পর পারাচুট, অর্থাৎ বৃহৎ একটি ছাতার সহায়তায় মানুষ অনেক উচ্চ স্থান হইতে পৃথিবীতে অবতরণ করে। আমি মনে করিলাম যে, সেই উপায়ে আমি ও আপনাকে এই বিপদ হইতে উদ্ধার করিব । নিকট দিয়া যাইতে দেখিয়াছিলাম। প্রতিদিন অনেকগুলি কাটা ঘুড়ির সূতাও আমার গায়ে ও গির্জার মাথায় লাগিয়া যাইতেছিল। এখন হইতে আমি সেই ঘুড়িগুলি ধরিতে লাগিলাম। এইরূপে প্ৰায় দুইশত ঘুড়ি সংগ্ৰহ করিলাম। তাঁহাদের সূতা একত্রিত করিয়া মোটা রজ্জ্বর ন্যায় করিলাম। তাহার সহিত আমার চাদরখানিও যোগ করিলাম। সেই দুইশত ঘুড়ি পৃথক পৃথক রাখিলাম বটে, কিন্তু সকলেই সেই রজ্জ্ব ও চাদরে সংযুক্ত করিলাম। এইরূপ আয়োজন করিয়া যেদিন বায়ু প্রবলবেগে প্রবাহিত হইতেছিল, সেইদিন আমি ঘুড়িগুলি ছাড়িয়া দিলাম। সেই রজ্জ্ব voS8 $75zii>iඳිනු දී sÀ 315 až 35 GK RG! MV www.amarboi.comï**