পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই কথা শুনিয়া তিনুবাবুকে সম্বোধন করিয়া আডিডাধারী বলিলেন,- “মহাশয়! আপনার সহিত আমার আলাপ-পরিচয় নাই। কিন্তু আপনি যখন মাণিকের বন্ধু, তখন আমারও বন্ধু। অনুগ্ৰহ করিয়া যদি দুই-একটি সাপের গল্প করেন, তাহা হইলে, বড়ই বাধিত হই। যে পুস্তকখানি ছাপাইতে আমি মানস করিতেছি, তাহাতে আপনার নাম দিয়া গল্পগুলি ছাপাইব । আপনার দেশ কোথায়?” তিনুবাবু উত্তর করিলেন,- “অতি নিকটে । একদিন রেলে যাইতে হয়; তাহার পর, দুই দিন জাহাজে যাইতে হয়; তাহার পর, তিন দিন হাঁটিয়া যাইতে হয়। আমাদের দেশে রঙবেরঙের সাপ আছে। সেই সব সাপের গল্প আমি করিতে পারি।” আডিডাধারী জিজ্ঞাসা করিলেন,- “নৃতন গল্প, না পুরাতন?” তিনুবাবু উত্তর করিলেন,- “আনকোরা টনটিনে টাটুকা গল্প।” আড়াধারী জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সত্য গল্প? না মিথ্যা কল্পিত বানানো গল্প?” তিনুবাবু উত্তর করিলেন,- “সম্পূর্ণ সত্য গল্প। তামা-তুলসী, গঙ্গাজল হাতে লইয়া বলিতে পারি। যাহা আমার নিজের বাড়ীতে ঘটিয়াছে, যাহা নিজে আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি, সেইরূপ গল্প আমি করিব। এই যে সৰ্প, ইহারা নাগ জাতি। মানুষ অপেক্ষা ইহাদের বুদ্ধি শতগুণ অধিক। ইহাদের বুদ্ধি বিষয়ে আজ আমি দুই-তিনটি দৃষ্টান্ত দিব। তবে বলিতে ভয় হয়। একে তো পাষণ্ডগণ। আমাকে গ্যাজাখোর বলে। তাহার উপর গল্পগুলি কিছু অদ্ভুত। পাছে আপনারা বিশ্বাস না করেন, সেই ভয় ।” আড়াধারী, নবীন, মাণিক প্রভৃতি সকলে একবার্তা তিনু বলিতেছেন— “আমার বাড়ীর নিকট এক পুষ্করিণী আছে। তিন বৎসর বয়স্কা আমার একটি কন্যা আছে। একদিন প্ৰাতঃকালে বালিকাটি পুষ্করিণীতে পড়িয়া গিয়া হাবুডুবু খাইতেছিল। কেহই দেখিতে পায় নাই, আর একটু হইলেই জলমগ্ন হইয়া সে মরিয়া যাইত। এমন সময় কোথা হইতে একটি কৃষ্ণসৰ্প আসিয়া উপস্থিত হইল। বালিকার বিপদ দেখিয়া সাপটি তৎক্ষণাৎ জলে বাপ দিল ও তাহাকে ধরিয়া অবিলম্বে কিনারায় আনিয়া ফেলিল । সাপটি বালিকার প্রাণরক্ষা করিল; কিন্তু যেরূপ বুদ্ধিসহকারে সে এ কাৰ্যসাধন করিল, তাহাই আশ্চর্য্যের বিষয় ।” আডিডাধারী জিজ্ঞাসা করিলেন,- “কিরূপ বুদ্ধি?” (°)Aኃbr দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ wwamarboiconoo