পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিয়াছে। সেজন্য এটি বেড়ে বোড়া সাপ। গৰ্ত্তের ভিতর হইতে বাহির হইয়া ক্রমে শিশুর নিকটে আসিয়া সাপটি বসিল। তাহার পর শিশুর মুখপানে চাহিয়া চক্ষু টিপিয়া কি ইশারা করিল। অবশেষে সাপ পিছন ফিরিয়া, আপনার সেই বেড়ে লেজটি শিশুর হাতে পুরিয়া দিল। আডিডাধারী বলিলেন– “বটো! তাহার পর?” তিনু উত্তর করিলেন- “বেঁড়ে লেজটি হাতে পাইয়া মায়ের স্তন মনে করিয়া, শিশু সন্তোষের সহিত তাহা চুষিতে লাগিল। আমরা ভাবিলাম— ওঃ, এই জন্যে ছেলে আর কাদে না বটে। এইরূপ প্ৰতিদিন আসিয়া সাপ আপনার বেড়ে লেজটি শিশুর হাতে প্ৰদান করে। শিশু তাহা চুষিয়া চুপ করিয়া থাকে, কখন বা লেজটি মুখে করিয়া নিদ্রায় অভিভূত হইয়া পড়ে। এইরূপে কিছুদিন যায়, এমন সময় একদিন দেখি না যে,- ছেলে পুনরায় কাঁদিতে আরম্ভ করিল। সাপের দেখা নাই। আমরা ভাবিলাম যে, বড়ই বিপদ হইল, সাপ আসিল না, এখন ছেলে ভুলাই কি করিয়া? ঘোর চিন্তায় আমরা নিমগ্ন আছি, এমন সময় কোথা হইতে আর একটি কিছু বড় বেঁড়ে বোড়া সাপ হুড়তে-পুড়তে ছেলের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইল। সেও সেইরূপ চক্ষু টিপিয়া ছেলেকে প্রথমে ইশারা করিল, তাহার পর আপনার বেঁড়ে লেজটি তাহার হাতে গুজিয়া দিল। লেজটি মুখে দিয়া ছেলে চুপ করিল। এই নূতন সাপটি এইরূপে সাতদিন ছেলের নিকট আনাগোনা করিল। তাহার পর সেই পুরাতন সাপটি পুনরায় আসিয়া উপস্থিত হইল। আমরা দেখিলাম, পুরাতন সাপটি কিছু রোগ হইয়া গিয়াছে। তাহা দেখিয়া ভাবিলাম, ওঃ, আর কিছু নয়, পুরাতন সাপটির জ্বর হইয়াছিল, তাই নূতন সৃপ্তিকে এই কয়দিনের নিমিত্ত আপনার একটনী করিতে সে পাঠাইয়া দিয়াছিল। চট করিয়ু মত আর একটি বেড়ে সাপ সে খুঁজিয়া পায় নাই। পাঠাইতে তাই একটু বিলম্ব হইয়াছিল। কেমন মহাশয়, এ গল্পটি কেমন?” আডিডাধারী বলিলেন- “অতি চমৎকার!% তিনু বলিলেন— “ছেলেটির নাম আত্মমরী সুরেন্দ্র রাখিয়াছি। তাহার নামটি ছাপাইবেন। তাহা হইলে তাহার গর্ভধারিণীর আনন্দ হইবে। আর শিশুদের সরল হৃদয়,- কালসর্পকেও তাঁহাদের বিশ্বাস; এইরূপ নানাপ্রকার অলঙ্কার দিবেন। আর ‘সাপিনী তাপিনীতাপে বিবরে লুকায়”— এইরূপ ছাড়াও তাহার ভিতর দুই-একটি দিবেন।” আড়াধারী বলিলেন,- ছড়ায় আবশ্যক নাই, গল্পটি অতি চমৎকার। তাহাই যথেষ্ট। আর আছে?” চতুর্থ অধ্যায় গরুর দড়ি তিনু উত্তর করিলেন— “আছে বই কি! আর একটি গল্প বলি, তবে শুনুন। দাঁড়াশ সাপ করে বলে তা জানেন? আমাদের বাড়ীর কাছে প্ৰকাণ্ড এক দাঁড়াশ সাপ ছিল। বিশ হাতের কম নয়। জাহাজি দড়া বলিলেও চলে। প্রতিদিন রাত্ৰিতে গোয়ালে আমার গরু বাঁধা থাকে; তাহার একটু দূরে বাছুরটি বাঁধা থাকে। একদিন রাত্রিতে কি করিয়া গরুর দড়িটি ছিড়িয়া গিয়াছিল। আর 9 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com%ি"*********