পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম অধ্যায় ফণ্ডে টাকা কন্যাকে লইয়া মাধব চক্ৰবৰ্ত্তী আদালতে উপস্থিত হইলেন। হাকিম তৎক্ষণাৎ সরলার সাক্ষ্য গ্ৰহণ করিলেন। সরলাকে বড় অধিক কিছু বলিতে হইল না। গিরিশের পক্ষ হইয়া সরলার আগমন, তাহাই যথেষ্ট হইল। এরূপ সুশীলা সুরূপা ভদ্রকন্যা যাহার সপক্ষ সাক্ষী, সে যে গিরিশের নিকট তিনি মোহর দেখিয়াছিলেন, সরলাকে কেবল এই কথা বলিতে হইল। সরলার আন্তরিক ভাব হাকিম বুঝিতে পারিলেন। গিরিশকে ছাড়িয়া দিবার সময় ঈষৎ হাসিয়া তিনি সরলাকে বলিলেন, — “ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করি, যেন তোমরা দুই জনে সুখী হও!” লজ্জায় সরল ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল। বিপদ হইতে মুক্ত হইয়া গিরিশ, মাধব চক্ৰবৰ্ত্তী ও সরলা তিন জনে বাটী ফিরিয়া আসিলেন । চক্ৰবৰ্ত্ত মহাশয়ের বাটীতে সেদিন আর আনন্দের সীমা রহিল না। সরলার মাতা সন্ধ্যার সময়ে হরি-লুট দিলেন। তাহার পর দিন গোপীবাবু মাধব চক্ৰবৰ্ত্তাঁকে কৰ্ম্ম হইতে জবাব দিলেন। বিরাসবদনে চক্ৰবৰ্ত্তাঁ বাটী প্ৰত্যাগমন করিলেন। গিরিশ বলিলেন, — “মহাশয়! এজন্য কিছুমাত্র ভয় করিবেন না। আর একমাস পরে আমি পাশ হইব, পাশ হইব। তখন আমি ডাক্তার হইব। যে কোন প্রকারে হউক, নিশ্চয় আ পালন করিতে পারিব। আপাততঃ আমার তিন শত টাকা জমা আছে, সেই তিন খরচ করিব। তবে আর ভাবনা কি? আপনার যদি অমত না থাকে, তাহা একটা ভাল দিন দেখাইয়া সরলাকে আমার হন্তে প্ৰদান করুন।” এই ঘটনার আট দিন পরেই সরলীর সহিত গিরিশের শুভ বিবাহকাৰ্য সম্পন্ন হইল। গিরিশ শ্বশুরের সংসারেই রহিলেন। একমাস পরে গিরিশ সুখ্যাতির সহিত ডাক্তারি পাশ দিলেন। তিন শত টাকার যাহা অবশিষ্ট ছিল, তাহা দিয়া নিকটে ভাল একটি বাটী ভাড়া লইয়া নিজের ডাক্তারখানা খুলিলেন। কিন্তু গোপীবাবু তাঁহার পরম শক্ৰ হইয়া উঠিলেন। গিরিশ চোর, গিরিশের চরিত্র ভাল নহে, ভদ্রলোকের বাড়ীতে ইহাকে প্রবেশ করিতে দেওয়া উচিত নহে, চারিদিকে এইরূপ কুৎসা রাটাইতে লাগিলেন। সেজন্য গিরিশের পসার ভাল হইল না, ভালরূপ অর্থে পাৰ্জন হইল না। যাহা হউক, তিনি শ্বশুর-শাশুড়ীকে পিতা-মাতার ন্যায় ভক্তিসহকারে প্রতিপালন করিতে লাগিলেন। মাধব চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয় দুই-এক স্থানে কৰ্ম্মের যোগাড় করিয়াছিলেন। কিন্তু তাঁহার শরীর দুৰ্ব্বল ও রুগ্ন, সেজন্য গিরিশ তীহাকে আর চাকরি করিতে দিলেন না। চাকরি আর তিনি করিতেও পারিতেন না। কারণ, অল্পদিন পরে বাতিরোগ দ্বারা আক্রান্ত হইয়া তিনি শয্যাশায়ী হইয়া পড়িলেন। ধন না হউক, গহনা না হউক, মনের মত পতি পাইয়া, বাপমায়ের কাছে থাকিয়া, সরলা সুখে কালব্যাপন করিতে লাগিল। কিছুদিন পরে সরলার এক কন্যা হইল। মাতামহ আদর করিয়া কন্যার নাম রাখিলেন, লীলা । গোপীবাবুর ধন-ঐশ্বৰ্য অনেক ছিল বটে; কিন্তু মনে তাহার সুখ ছিল না। যত বয়স হইতে লাগিল, তাহার হাঁপানি-কাশি ততই প্ৰবল হইতে লাগিল। জীবন তাহার কষ্টময় হইল, শরীর ত্ৰৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ re af :Iist ~itë 3 q<; &&! a www.amarboi.comi“