পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেন এত নিদয় হইলে প্ৰথম অধ্যায় নটাবর দাস নটাবর দাস জাতিতে কায়স্থ, নিবাস কলিকাতা, সৌখিন যুবক, বয়স বাইশ বৎসর। প্রায় এক বৎসর হইল নটবরের পত্নীবিয়োগ হইয়াছে। পুনরায় বিবাহ করিবেন, দুই-তিন স্থানে কন্যা দেখিতে গিয়াছিলেন, এখনও মনের মত স্ত্রীরত্ন লাভ হয় নাই। নটবর ভাবিলেন যে, পুনরায় সংসার-শৃঙ্খলে আবদ্ধ হইবার পূৰ্ব্বে একটু আমােদ করিয়া বেড়াই। ফিটুফাটু পোষাক পরিয়া তাই তিনি খড়দহে ফুলদোল দেখিতে গেলেন। রাত্রি দুইটার সময় নিদ্রার ঘোরে তাঁহার চক্ষু দুইটি আচ্ছন্ন হইয়া আসিল। সেই সঙ্গে ফুলদোলে তাঁহার অরুচি জনিল। কলিকাতা প্ৰত্যাগমনের মানসে ষ্টেশনে আসিলেন। গাড়ীতে তিল রাখিবার স্থান নাই, নটবর উঠিতে পারিলেন না। দু নটবর মনে করিলেন,—“পাঁচ ক্রোশ পথ বই তো নয়! এমন পূর্ণিমার রাত্রি, এমন দক্ষিণ বায়ু! হাঁটিয়া যাই।” ஜூ এইরূপ স্থির করিয়া তিনি বড় রাস্তা । কিন্তু পথ-চলা তাহার অভাস ছিল না। শীঘ্রই ক্লান্ত হইয়া পড়িলেন। রাত্রি প্রায় চারিন্ট্রির সময় বামদিকে একটি প্রশস্ত পথ দেখিয়া তিনি মনে করিলেন যে, এই রাস্তা দমদমা গিয়াছে। বাকি পথটুকু রেলগাড়ীতে যাইবেন, এইরূপ মানস করিয়া সেই বামদিকের পথ ধরিলেন। কিন্তু অনেকক্ষণ চলিয়াও নাটাবর দমদমার ষ্টেশন পাইলেন না। পথ ক্রমে সঙ্কীর্ণ হইয়া আসিল । কেবল বন ও বাগান। জনমানবের সহিত সাক্ষাৎ নাই। নটাবর বড় বিপদে পড়িলেন। আর পা উঠে না। নিতান্ত শ্ৰান্ত হইয়া এক গাছতলায় তিনি বসিয়া পড়িলেন। গাছতলায় বসিয়া আছেন, এমন সময় দূর হইতে আগত সুমধুর নারীকণ্ঠস্বর তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল। কে যেন অতি মধুরস্বরে গান গাহিতেছে। গীতের কথাগুলি এইরূপ কেন এত নিদয় হইলে? অবসান নিশি, অস্ত গেল শশী, দাসীরে ভুলিয়া নাথ কোথায় রহিলে। এই পৰ্যন্ত নটাবর শুনিতে পাইলেন। পরীক্ষণেই ভয়ানক এক হৃদয়ভেদী চীৎকার হইল। অমানুষিক চীৎকার। সেই নিৰ্জ্জন স্থানে নটাবর একাকী। প্ৰাণে তাঁহার ঘোর আতঙ্ক উপস্থিত হইল। দ্রুতবেগে সে স্থান হইতে তিনি পলায়ন করিলেন। পুনরায় অনেক ঘুরিয়া-ফিরিয়া ষ্টেশন পাইলেন। প্ৰাতঃকালে কলিকাতা আসিয়া উপস্থিত হইলেন।

  • ISi-*i 8.Σ.Σ.

sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro