পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জানিস আমি থিয়েটারী বীর। এ জগতে এমন কে আছে যে, আমার চীৎকার সহ্য করিতে পারে? আমার কর্কশবচনে কাহার না কান ঝালা-পালা হয়? আমি যখন থিয়েটারের তক্তার উপর দাড়াইয়া ঘোর রবে চীৎকার করিতে থাকি, তখন কোন দর্শক, কোন শ্রোতা না কর্ণে অঙ্গুলি প্ৰদান করে? কে না। আমাকে শত শত গালি দিয়া থাকে? কে না বলে যে, যবনিকাপতন হইলে বঁচি? যুদ্ধং দেহি। যুদ্ধং দেহি।” গৌরীশঙ্কর অনেকক্ষণ পৰ্যন্ত থিয়েটারী বীরের বক্তৃতা প্ৰাণপণে সহ্য করিলেন, কিন্তু শেষকালে তিনি আর পরিলেন না! হায়! হায়। এত কষ্ট করিয়া শেষকালে সব বিফল হইল! তিনি মনে করিলেন, —বরাহ-ব্যাঘের উপদ্রব সহ্য করিলাম, ভূত-প্রেতের দীেরাত্ম্যেও মনকে স্থির রাখিলাম, অন্সরার মোহনী শক্তি আমাকে মোহিত করিতে পারে নাই, মাতার সকরুণ ক্ৰন্দনেও আমি বিচলিত হই নাই, কিন্তু এই থিয়েটারী বীরের বাক্যবাণে আমার কর্ণ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হইয়া গেল, আমার হৃদয় বিদ্ধ হইয়া জৰ্জ্জৱীভূত হইল। ইহার জ্যেঠামি আমি আর সহ্য করিতে পারি না ।” এইরূপ মনে করিয়া, গৌরীশঙ্কর আসন ত্যাগ করিবার উপক্রম করিলেন । কিন্তু এবারও কে যেন তাঁহার পিঠে চাপড় মারিয়া বলিল,- “কর কি? এ প্রকৃত থিয়েটারী বীর নহে, এ মায়াপ্রসূত ভূত। একটু ধৈৰ্য ধরিয়া থাক। এখনি এ চলিয়া যাইবে!” গৌরীশঙ্কর মন দৃঢ় করিয়া জপে প্ৰবৃত্ত হইলেন। কিন্তু থিয়েটারী বীর দ্বিগুণভাবে চীৎকার আরম্ভ করিল, তাহার চীৎকারে গগন ফাটিয়া যাইতে ।। গৌরীশঙ্কর আর ধৈৰ্য ধরিয়া থাকিতে পারিলেন না । থিয়েটারী বীরের জ্ঞানশূন্য হইয়া পড়িলেন। কানে দ্রুতবেগে পলায়ন করিবার উপক্ৰম করিত্যুেচ্ছৰ্দষ্ট এমন সময় চারিদিকে ঘোর কলরব উপস্থিত হইল। সিংহ ব্যাঘ্র বরাহ ভল্লুক প্রভৃতুি জন্তু, ভূত প্ৰেত পিশাচ দানা দৈত্য ডাকিনী শাকিনী বেতাল বটুক চেটক প্রভৃতি , ও শত শত থিয়েটারী বীর একসঙ্গে তর্জনগৰ্জ্জন করিতে লাগিল। কেহ লম্ফ প্ৰদান করিতে লাগিল। কেহ নৃত্য করতে লাগিল। অবশেষে ভয়ঙ্কর এক বেতাল আসিয়া গৌরীশঙ্করের টিকি ধরিল। তাঁহার টিকিট ধরিয়া তাঁহাকে দূরে পুষ্করিণীতে নিক্ষেপ করিল। ভাগ্যে পুষ্করিণীর মাঝখানে গিয়া তিনি পড়েন নাই, তাই রক্ষা । পুষ্করিণীর যেস্থানে কেবল কর্দম ছিল, সেই স্থানে গিয়া তিনি পড়িয়াছিলেন। পরদিন প্ৰাতঃকালে সকলে দেখিল যে, সেই স্থানে তিনি পড়িয়া রহিয়াছেন। সে সময় তাহার কিছুমাত্র সংজ্ঞা ছিল না। অজ্ঞান অভিভূত হইয়া তিনি পড়িয়াছিলেন। কেবল অল্প অল্প নিশ্বাস-প্ৰশ্বাস চলিতেছিল, কেবল অল্প অল্প গো-গো শব্দ করিতেছিলেন, কেবল অল্প অল্প রক্তমিশ্ৰিত ফেন তাহার মুখ হইতে নিৰ্গত হইতেছিল। জীবনের এই সামান্য মাত্র চিহ্ন কেবল जदभिछे छिल । মুক্তা-মালা sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro 8S9.