পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম অধ্যায় আবার সেই সবুজ রাক্ষস এই কথা বলিয়া নিয়োগী সে স্থান হইতে প্ৰস্থান করিল। আমিও আমার ঘরে গিয়া শুইয়া পড়িলাম। মনোদুঃখে সে রাত্ৰিতে আমি আর আহার করিলাম না। সে রাত্রি পাল মহাশয়ের নিকট মহাভারত পাঠ করিতেও যাইলাম না। ফলকথা, সেইদিন হইতে মহাভারত পাঠে আমার অরুচি জনিয়া গেল। পাল মহাশয়ের সহিত কথাবাৰ্ত্ত—তীহার গৃহে যাতায়াতও সেইদিন হইতে আমার অনেক কমিয়া গেল । এইরূপে কিছুদিন গত হইল। একদিন রাত্রিকালে আমি শয়ন করিয়া আছি। অঘোর নিদ্রায় আমি অভিভূত আছি। বাহির-বাটীতে আমার ঘর, আর ভিতর-বাটীতে পাল মহাশয়ের ঘর,— এই দুই ঘরের মাঝখানে যে দেয়াল, সেই দেয়ালের ঠিক গায়ে আমার বিছানা ছিল। সহসা পাল মহাশয়ের দিক হইতে সেই দেয়ালের গায়ে গুপ-গুপ করিয়া শব্দ হইতে লাগিল। সেই শব্দে আমার নিদ্রাভঙ্গ হইয়া গেল। শুইয়া শুইয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “কে শব্দ করে?” তাহার ঘর হইতে পাল মহাশয় উত্তর করিলেন,- “শীঘ উঠিয়া বাহিরে এস। বিশেষ প্ৰয়োজন আছে। গোল করিও না ।” আমি উঠিয়া প্ৰথমে ঘড়িতে দেখিলাম যে, রাত্রি তখন দুই প্রহর অতীত হইয়া গিয়াছে। তাহার পর, দ্বার খুলিয়া আমি বারেণ্ডায় গিয়া উপস্থিত হইলাম। স্থান্ত মহাশয়ও সেই সময় আপনার ঘরের ভিতর হইতে বাহির হইয়া, বারেণ্ডার দ্বারের খিল । আমার দিকে সেই দ্বার শৃঙ্খল দ্বারা আবৃদ্ধ ছিল। পাল মহাশয় আমাকে সেই শৃঙ্খল ফুল্লিতে বলিলুেন। আমি শৃঙ্খল খুলিলুম! ভিতরবাটী এবং বাহির-বাটী এক হইয়া গেল। য় আমি দেখিতে পাইলাম যে, লাঠি ধরিয়া কে একজন অতি ধীরে ধীরে পাল বু শ্ৰীষ্টিদিয়া নীচে নামিবার উপক্ৰম করিতেছে, আর প্রদীপ হাতে লইয়া পাল মহাশয়ের গৃহিণী উইীির পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইতেছেন। ভালরূপে দেখিয়া আমি য়াগীর পীড়িত পুত্র। শয্যাশায়ী মরণাপন্ন রোগী এত রাত্রিতে কেন সে স্থানে আসিয়াছে, তাহা ভাবিয়া আমি ঘোরতর বিস্মিত হইলাম। পাল মহাশয় চুপি-চুপি আমাকে বলিলেন, — “আস্তে আস্তে কথা কহিও । বিশেষ প্রয়োজন আছে । আমার ঘরের ভিতর এস । তাহার পর সকল কথা তোমাকে বলিব ।” পাল মহাশয়ের আজ্ঞায় বারেণ্ডার দ্বারে খিল দিয়া, নিঃশব্দে আমি তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলাম। পাঁচ-ছয় পা গিয়াই পাল মহাশয়ের ঘরের দ্বারের নিকট উপস্থিত হইলাম। পাল মহাশয় ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলেন। আমিও প্ৰবেশ করিবার উপক্ৰম করিতেছি, এমন সময়,-সৰ্ব্বনাশ! চাহিয়া দেখি না তাহার ঘরের ভিতর সেই রাক্ষস ! ঘরের মাঝখানে মাদুরের উপর আসন-পিঁড়ি হইয়া রাক্ষস মহাশয় গাঁটু হইয়া বসিয়া আছেন!! আরও আশ্চৰ্য্য কথা! লজ্জাসরমের মাথা খাইয়া, পাল মহাশয়ের কন্যা সেই মাদুরের একপার্শ্বে বসিয়া আছে! ভয়ে আমার পা থর-থর কঁাপিতে লাগিল। আমি ভাবিলাম যে, আর কিছু নয়, পাল মহাশয় এই রাক্ষসকে আপনার জামাতা করিয়াছেন ৷ জলখাবার স্বরূপ আমার দেহটি তাহাকে প্ৰদান করিবার নিমিত্ত এই ঘোর রাত্ৰিতে তিনি আমাকে ডাকিয়া আনিয়াছেন। মহাভারত পাঠ করাইয়া, নিমন্ত্রণ করিয়া, অনেক দিন হইতে তিনি ইহার যোগাড় করিতেছেন। আমার প্রতি কেন যে তিনি এত কৃপা করিয়াছিলেন, তাহার অর্থ এখন আমি বুঝিতে পারিলাম। আমি আরও মুক্তা-মালা By sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro