পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুমি ইহাকে খুন করিয়াছ?” আমি বলিলাম,- “ও কি কথা, বেচু! আমি ইহাকে খুন করিয়াছি! আমি যদি খুন করিব, তবে চীৎকার করিয়া লোক ডাকিতে যাইব কেন?”— বেচু। বলিল,- “দেখ, মিহির! তোমার সে কথা কেহ বিশ্বাস করিবে না! তোমরা দুই জনে একঘরে থাক। তোমার সহিত কাল তাহার ঝগড়া হইয়াছিল, তোমার গায়ে রক্ত,--আর এ কি! এই বলিয়া ঘরের মেজে হইতে বড় একখানি ছুরি সে তুলিয়া লইল। ছুরিখানি রক্তমাখা ছিল। সে ছুরি আমার। ঘরের এক পার্শ্বে ছোট টেবিল ছিল । তাহার উপর কাগজ, কলম, পুস্তক প্রভৃতির সহিত আমার সেই ছুরিখানিও থাকিত। ছুরিখানি হাতে লইয়া বেচু বলিল,—“আর ক্ষণমাত্ৰ বিলম্ব করিও না। শীঘ তুমি পলায়ন কর।” আমি হতবুদ্ধি হইয়া পড়িলাম। পলায়ন করিতে আমি উদ্যত হইলাম, তখন বেচু বলিল,— ‘ও কি কর! ওরূপ রক্তমাখা কাপড়ে বাহিরে যাইও না। এখনি তোমাকে চৌকিদারে ধরিবে।” এই কথা বলিয়া সে দৌড়িয়া আপনার ঘরে গেল। আপনার একখানি কাপড় আনিয়া আমাকে দিল। সেই কাপড় পরিয়া আমি পলায়ন করিলাম। সে রাত্ৰিতে বেচু আমার অনেক উপকার করিয়াছে। আজও দেখ, সে আমাকে বীচাইতে চেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু মা! এখন বোধ হইতেছে যে, পলায়ন করিয়া আমি ভাল কাজ করি নাই । যখন আমি অপরাধ করি নাই, তখন কি জন্য যে আমি পলায়ন করিলাম, তাহা বুঝিতে পারি না । এরূপ অবস্থায় আর কতদিন কাল কাটাইবি। ইহা অপেক্ষা ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়া মরাই আমার পক্ষে ভাল। তোমাদিগকে না দেখিয়া আর পথে পথে ফিরিতে পারি না! আর কষ্টভোগ করিতে পারি না, মা!” মাতা কাদিতে লাগিলেন। পাল মহাশয়ের কন্যা কি লাগিল। পাল মহাশয়ের চক্ষে জল আসিল, আমারও চক্ষু দিয়া জল পড়তে লাগিল ॥২৮ মিহির পুনরায় বলিল,- “আজ আর গ্ন কোন উপায় নাই। কিন্তু তাহার জন্য আমি কিছুমাত্র দুঃখিত নই। পথে পথে আর পারি না ।” এইরূপ বলিতে বলিতে মিহির কাঁদিতেছেন। সেজন্য র্তাহাদিগকে প্ৰবোধ দিয়া সে পুনরায় বলিল,— “মা, কঁদিও না! তুমি ভয় করিও না! ভগবান মাথার উপর আছেন। বিনাদোষে তিনি আমাকে ফাঁসি যাইতে দিবেন। की ।” আমার নিজের সম্বন্ধে এই সময় একটি আশ্চৰ্য ঘটনা ঘটিল। মিহিরের দুঃখের কাহিনী শুনিয়া আমার বুকের ভিতর গুরু-গুরু করিয়া উঠিল। কেন বলিতে পারি না, কিন্তু এই সময় হইতে আমার স্বভাব পরিবৰ্ত্তিত হইতে আরম্ভ হইল। পাল মহাশয় বলিলেন,- “প্ৰাণ থাকিতে তোমাকে আমি ধরা দিতে দিব না। পলাইবার কোন উপায় কি নাই?” এই সময় বাটীর নিম্নে অন্দর মহলের দরজায় সবলে কে আঘাত করিতে লাগিল। দরজা যেন ভাঙ্গিয়া ফেলিতে লাগিল । ፳ শশব্যস্ত হইয়া সকলে আমরা উঠিয়া দাড়াইলাম। পাল মহাশয় বলিলেন,- “ঐ আসিয়াছে।” পাল মহাশয়ের কন্যা ও গৃহিণী কঁদিয়া উঠিলেন। মিহির পুনরায় তাহাদিগকে বুঝাইতে লাগিল। মিহির বলিল,— “ভয় নাই মা! কাদিও না । অন্তৰ্য্যামী ভগবান জানেন যে, আমি কোন দোষে দোষী নই! তিনি আমাকে রক্ষা করিবেন।” Wisit 8 মুক্তা sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro Œ “ስ