পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখিতেছি। জ্ঞান হইয়া পৰ্যন্ত আমি যাহা কিছু করিয়াছি, ব্যোমজগতে সে সমুদয় ছাপ পড়িয়া গিয়াছে। আমার সমুদয় চিন্তা, কথা ও কাজের ফল আমার জন্য সঞ্চিত রহিয়াছে। সে সমুদয় আমাকে ভোগ করিতে হইবে। কাজ করিলেই যে তাহার ফল আছে, মানুষ অনুক্ষণ তাহা দেখিতেছে। হায় হায়! তবু মানুষ কেন কুকৰ্ম্ম করে! মদনাবাবু! মানুষ আর যাহা কারুক, মানুষ সত্য হইতে যেন বিচলিত না হয়। অন্য পাপ মানুষের বিরুদ্ধে, কিন্তু অসত্য ঈশ্বরের বিরুদ্ধে। মনুষ্যজীবন ছেলেখেলা নহে,-ধৰ্ম্মও খেলা করিবার বস্তু নহে যে, তাহা লইয়া যে যা মনে করিবে, সে তাহাই করবে। আমি সাত বলিতেছি যে, পরকাল আছে, নরক আছে। এই মৃত্যুকালে আমি একান্ত মনে মানুষকে এই উপদেশ প্ৰদান করি যে, মানুষ যেন সত্য হইতে বিচলিত না হয়।” তাহার কথা শুনিয়া, আমার শরীর রোমাঞ্চ হইয়া উঠিল। আমিও যেন নরক প্রত্যক্ষ দেখিতে লাগিলাম। পাপীদিগের পরিত্ৰাহি ডাক আমারও যেন কৰ্ণকুহরে প্রবেশ করিতে লাগিল। শিহরিয়া আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “সত্য-মিথ্যা কি, মোটামুটি তাহা আমি বুঝি। কিন্তু ধৰ্ম্ম-বিষয়ে সত্য কি?” বেচু উত্তর করিল,— “আপনি আমাকে বড় কঠিন কথা জিজ্ঞাসা করিলেন। ধৰ্ম্ম বিষয়ে প্রকৃত সত্য কি, সকলে তাহা অনুভব করিতে পারে না; অনুভব করিবার তাহাদের ক্ষমতা নাই।” এইরূপ বলিয়া সে আমাকে তাহার নিজের বিশ্বাসের কথা বলিল । অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত আমি মনোযোগের সহিত তাহা শ্ৰবণ করিলাম। আমার বোধ হইল যে, পীড়িত হইয়া পৰ্যন্ত নিয়োগী-পুত্র একান্ত মনে সৰ্ব্বদা ঈশ্বরকে ডাকিয়াছে। কুপা করিয়া তিনি তাহার চক্ষু উন্মুক্ত না। প্রথম প্রথম তাহার মুখ দেখিয়া ও তাহার ধ্ৰুবির্ত শুনিয়া, তাহার প্রতি আমার বিদ্বেষ জনিয়াছিল। কিন্তু এখন আমি বুঝিলাম গত ভগবানকে ডাকিয়া পিতৃদত্ত কলুষিত মনকে সে পবিত্ৰ করিতে সমর্থ হইয় ಶೃಙ್ಗಣಿ র নিকট বসিয়া, তাহার কথা শুনিয়া, আমারও পবার্তা ম গুণবান, আমি বুদ্ধিমান, আমি সাহসী পুরুষ,- আমার মনে এই প্রকার যে অভিমান ছিল, মুহূৰ্ত্তমধ্যে সে সমুদয় ভােব আমার চিত্ত হইতে তিরোহিত হইল। কীটস্য কীট-সামান্য একটা অধম জীব বিলিয়া, আমি আমাকে মনে করিতে লাগিলাম। বেচু ধৰ্ম্ম-বিষয়ে যাহা আমাকে বলিল, সেসব কথা এ স্থানে বলিবার আবশ্যক নাই। কিন্তু শেষকালে সে আমাকে এই কয়টি কথা বলিল,- “মদনবাবু! প্রকৃত সত্য কি, তাহা আমি আপনাকে বলিলাম। কিন্তু এ সত্য হৃদয়ঙ্গম করিবার ক্ষমতা সকলের নাই। সে নিমিত্ত সাধারণ মনুষ্যকে আমার উপদেশ এই যে, যাহার যেরূপ বিশ্বাস, সে যেন তদনুযায়ী কাজ করে। মনে একরূপ বিশ্বাস, বাহিরে অন্যরূপ কাজ, এ যেন কেহ করে না। সেরূপ অসত্য কপট জীবনের ক্ষমা নাই; সেরূপ লোককে নিশ্চয় নরকে ডুবিতে হইবে।” আমি চুপ করিয়া ভাবিতে লাগিলাম। বেচু পুনরায় আমাকে বলিল,— “যে কথা বলিবার নিমিত্ত আমি আপনাকে ডাকিয়াছি, তাহা এখনও আপনাকে বলি নাই। বড় বিষম কথা! কি করিয়া আপনাকে বলিব, তাই ভাবিতেছি। আপনি অনুতাপের কথা বলিতেছিলেন। আজ একবৎসর ধরিয়া ক্রমাগত ঘোর অনুতাপিত হৃদয়ে ঈশ্বরকে ডাকিতেছি। যখন সেদিন মিহিরের আগমন-সংবাদ পিতা পুলিশকে দিতে গেলেন, সেইজন্যই সেদিন মরিতে মরিতে অতিকষ্টে আমি পাল মহাশয়কে গিয়া সাবধান করিলাম। মিহিরের আমি সৰ্ব্বনাশ করিয়াছি। আমি ভাবিলাম যে, নিরপরাধ মিহিরকে যে আমার সাক্ষাতে বাধিয়া লইয়া যাইবে, তাহা 8 Α28 tfirls six 93, 3el - www.amarboicomf67777°