পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাশুড়ী ঠাকুরাণী উত্তর করিলেন,- “বালাই ! ডাকিনীর হাতে কেন পড়িবে? শৈল তোমাকে সকল কথা বলিবে। এখন শৈলর সহিত একটু কথাবাৰ্ত্ত করা। আজ তিন মাস বাছা আমার আহরনিদ্রা পরিত্যাগ করিয়াছে।” এই কথা বলিয়া শাশুড়ী ঘর হইতে প্ৰস্থান করিলেন। আমার স্ত্রীর সহিত কথোপকথনে আমি বুঝিলাম যে, সেই ডাক্তারের ঔষধ সেবন করিয়া সত্য সত্যই আমি জ্ঞান-হত হইয়া গিয়াছিলাম। আমি কলিকাতা গমন করি নাই, আমি গির্জার উপরে পতিত হই নাই, সমুদ্রের ঝিনুকের ভিতরও আমি বাস করি নাই। ডাকিনীদিগের সহিতও আমার সাক্ষাৎ হয় নাই। আমার গ্রামবাসীর পত্ৰ পাইবামাত্র স্ত্রী ও শাশুড়ী ঠাকুরাণী তাঁহাদের প্রতিবাসী যজ্ঞেশ্বরকে সঙ্গে লইয়া তৎক্ষণাৎ আমার গ্রামে গমন করেন ও সে স্থান হইতে তাহারা আমাকে আমার শ্বশুরালয়ে আনয়ন করেন । আমার শাশুড়ী, স্ত্রী ও আর সকলে বলিলেন বটে যে, সনাতন নস্কর, ভূমিকম্প মহাশয়, গির্জা, সে সমুদয় পীড়ার খেয়াল ব্যতীত আর কিছুই নহে, কিন্তু সকলের কথা এখন পৰ্যন্ত আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস হয় নাই। সে সমুদয় বিষয় আমি এত প্ৰত্যক্ষ করিয়াছি যে, তাহা সম্পূর্ণ অলীক বলিয়া আমি ভাবনা করিতেও পারি না। আমার স্ত্রী বলিলেন যে, শ্বশুরালয়ে আগমনের পর আমি জুর-বিকার দ্বারা আক্রান্ত হই। একচল্লিশ দিন অজ্ঞান অবস্থায় থাকিয়া সেই দিন আমার জ্ঞান হইয়াছিল। ডাক্তার বলিয়াছিলেন যে, জুর-বিকার কাটিয়া গেলে দােষও কাটিয়া যাইবে। প্রকৃত তাহাই হইল, সেই দিন হইতে আমার সম্পূর্ণ ভুৱনষ্টাইল। সেদিন আমার স্ত্রী আমাকে অধিক ဗုဒ္ဓါနှိပါ့ করিতে দিলেন না। আমার ভ্রাতার বিষয় আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, কিন্তু আমার সে কথার কোন উত্তর দিলেন না। কিছু সুস্থ ও সবল হইলে, দুই-চারিদিন পরে, পুনরায় আমি আমার ভ্রাতার কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। আমার গৃহিণী তখনও পরিষ্কার করিয়া কোন উত্তর করিলেন না। “আমি শুনিয়াছি যে, ওন্ধুর কলিকাতায় আছে।” তখন তিনি কেবল এই কথা বলিলেন। প্রায় একমাস পরে, যখন আমি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হইলাম, তখন একদিন আমার স্ত্রী আমাকে কলিকাতা যাইতে বলিলেন । আমি কারণ জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি বলিলেন যে, “আমরা শুনিয়াছি যে, ওকুরের বড় বিপদ হইয়াছে। উচ্চ ছাদের উপর বসিয়া সে একদিন মদ খাইতেছিল। সেই সময় নিকট দিয়া একটি চিল উড়িয়া গেল। তাহা দেখিয়া চিলের মত উড়িতে তাহার সাধ হইল। চিলের মত উড়িতে গিয়া সে ছাদ হইতে পড়িয়া গিয়াছে। তাহার দুইটি পা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। ডাক্তার তাহার পা দুইটি কাটিয়া দিয়াছে। এখন সে হাসপাতালে পড়িয়া আছে।” এই কথা শুনিয়া আমি তৎক্ষণাৎ কলিকাতা গমন করিলাম। কলিকাতায় আসিয়া দেখিলাম যে, সত্য সত্যই অক্রুর হাসপাতালে পড়িয়া আছে, আর তাহার পদদ্বয় কৰ্ত্তিত হইয়াছে। শ্বশুরালয়ে আমি যখন জ্বরবিকারে অজ্ঞান অবস্থায় পড়িয়ছিলাম, কলিকাতায় সেই সময় এই ঘটনা ঘটিয়াছিল। আমি আরও জানিতে পারিলাম যে, পৈতৃক সম্পত্তির নিজের অংশ অক্রুর বিক্রয় করিয়া ফেলিয়াছে। সম্পত্তি বিক্রয় করিয়া যে টাকা পাইয়াছিল, তাহা সে অপব্যয় করিয়াছে। তাহার হাতে এখন আর একটি পয়সাও নাই। 8ዓbr frr:Ruig aniž3. g3 ze - www.amarboi.com%3"*"*"*************