পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vo VSKU আমি হেন শ্বাশুড়ী! পোড়ার-মুখী প্ৰভাবতীর আরও দোষ এই যে, এত মারা খাইয়াও কখন সে মুখ ফুটিয়া একটী কথা বলিত না। নীরবে প্রহার সহ্য করিত। তাহার রূপও সামান্য ছিল না। যেমন ধবধবে রং, তেমনি চক্ষু, তেমনি মুখের ও শরীরের গঠন। শরীর যেন মাখন দিয়া গঠিত ছিল। সেইজন্য দারুণ প্ৰহারে তাহার কষ্ট হইত না? সেইজন্য কি সে কাদিত না? চক্ষু দুইটী ছলছল করিয়া চুপ করিয়া থাকিত? তাহার পর পোড়ার-মুখীর চুল। দীর্ঘ নিবিড় উজ্জল কেশরাশি তাহার হাঁট পৰ্যন্ত পড়িয়াছিল। এক দিন রাত্রিতে শুইয়া শুইয়া অকস্মাৎ শ্বাশুড়ীর মনে উদয় হইল,- “সৰ্ব্বনাশ!! ঐ চুলের ভিতর শপৃড়ি তো লাগিয়া থাকিতে পারে! তবে তো আমার জাতি জনম আর কিছুই নাই। তবে তো এত দিন আমাদের ধৰ্ম্ম কৰ্ম্ম সব পণ্ড হইয়া গিয়াছে! কাল ইহার প্ৰতিকার করিতে হইবে।” পর দিন শ্বশুর মহাশয় ও অধর বাবু প্ৰভাবতীকে উত্তমরূপে ধরিলেন। প্ৰভাবতীকে ধরিবার কোন আবশ্যক ছিল না। চুপ করিয়া নীরবে সে প্রহার সহ্য করিত। তবে ধরিয়া মারিলে সাজােটা ভালরূপ হয়, দেখিতে শুনিতেও ভাল হয়, সেইজন্য তাহাকে ধরিয়া প্ৰহার করা হইত। শ্বশুর ও স্বামী দুই জনে দুই দিকে ধরিলেন। শ্বাশুড়ী ঠাকুরাণী নিজে বঁটি দিয়া পোচাইয়া পোচাইয়া তাহার চুলগুলি কাটিতে লাগিলেন। বঁটি দিয়া ভুল ভালরূপ কাটা যায় না। সেজন্য কতক তিনি কাটিলেন, কতক তিনি ছিড়িয়া প্রভাবতীর চোখে কান্না আসিল। ক্লেশে ও দুঃখে আজ তাহার দুই চক্ষু দিয়া *ধারায় বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল । “চুপ কর, হারামজাদী!” এই কথা বলিয়ার্থক্টড়ী তাহার মুখে দুই-চারিটী ঠোেনা মারিলেন। সেই আঘাতে প্ৰভাবতীর ঠোঁট কাটিয়া দাঁত দিয়া রক্ত পড়িতে লাগিল। এই সমুদয় কথা কলিকাতায় য়র বাটীতে আসিতে লাগিল ৷ প্ৰভাবতী লিখিতে পড়িতে জানিত। কিন্তু সে নিজে পিতা মাতাকে কখন একটী কথাও লেখে নাই; কিম্বা লোক দ্বারা একটী কথাও কখন বলিয়া পাঠায় না! পাড়া প্রতিবেশীরা এই সকল কথা মুস্তাফি মহাশয়কে বলিয়া পাঠাইল। মুস্তফি মহাশয়ের গৃহিণীর মন ব্যাবুল হইয়া পড়িল। কন্যাকে দেখিতে যাইবার নিমিত্ত স্বামীকে তিনি বার বার অনুরোধ করিলেন। কিন্তু মুস্তফি মহাশয় বলিলেন যে- “সে নরাধমের বাড়ী আমি আর যাইব না।” কন্যাকে তিনি তিন চারি বার আনিতে পাঠাইলেন। কিন্তু মাশ্চন্টক মহাশয় তাহাকে পিত্ৰালয়ে পাঠাইলেন না। তিনি বলিলেন,- “যাদব বড় কদাচারী। তাহার পুত্রেরা সন্ধ্যা আহ্নিক করে না, বিস্কুট খায়, বাজারের মাংস খায়। সে বাড়ীতে আমি আমার পুত্রবধূকে পাঠাইতে পারি না। তাহার হাতে আমাকে ভাত জল খাইতে হইবে।” প্রভাবতীর মাতা দুই তিন বার তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ সুরেশকে পাঠাইলেন। কিন্তু প্ৰভাবতী তাহাকে কোন কথাই বলিল না। প্রথম বারে সুরেশ জিজ্ঞাসা করিল,- “প্ৰভা! তোর চুল কি ? প্রভাবতী কোন উত্তর করিল না। শ্বাশুড়ী নিকটে ছিলেন। তিনি বলিলেন, — “প্রতিদিন ওর মাথা ব্যথা করিত; সে জন্য ডাক্তারে চুল কাটিয়া দিতে বলিয়াছিল।” প্রভাবতীর মাতা একবার এক জন ঝি পাঠাইয়া দিলেন। তাহাকেও প্ৰভাবতী কিছু বলিল (*OW friis ožogo &8! Mwww.amarbo.como SK