পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিয়া আপনার কােজ সারিয়া লইতে হয়। তোমরা কি বল! আমি নিজে কি করি? রাজা থাকুন, প্ৰজা থাকুন, আমি কাহাকেও গ্ৰাহ্য করি না। ঘাটের উপর উঠিয়া স্বচ্ছন্দে আমি কোমর হইতে ভিজা কাপড় খানি ফেলিয়া দিই। তবু আমার কাপড় কত শুদ্ধ। রাত্ৰিতে কাপড় পরিয়া শুই না। দিনের বেলাও প্ৰায় সমস্ত দিন ন্যাঙটো হইয়া থাকি। কোথাও শগুড়ি লাগিয়া যায়, কি-কি লাগিয়া যায়, তার চেয়ে কাপড় না পরিয়া থাকাই ভাল। তোমরা কি বলা একটু খানির জন্য উলঙ্গ হইতে লজ্জা! আমন বীে থাকিতে আমার অধীরের সুখ হইবে না। তোমরা কি বলা। তার পর আমি হেন শ্বাশুড়ী ! আমার কাছে যদি প্ৰশংসা না পাইল, তবে আর কাহার কাছে প্ৰশংসা পাইবে? তোমরা কি বল! পড়িত আমার শ্বাশুড়ীর পাল্লায়, তাহা হইলে বুঝিতাম। গুরুজনের নিন্দা করিতে নাই, কিন্তু আমার শ্বাশুড়ীর কথা যদি সব বলি, তাহা হইলে আর জ্ঞান থাকে না। কেবল একটা কথা বলি শুন । দেশে থাকিতে জল খাবারের জন্য প্রতিদিন বৈকাল বেলা আমি বারো খানি করিয়া পরোটা করিতাম। চারি খানি কৰ্ত্তার জন্য, চারি খানি আমার নিজের জন্য, আর চারি খানি অধরের জন্য। সন্ধ্যা বেলা আমাদের খাবার সময় বুড়ী করিত কি তা জান, বুড়ী সেই পরেটার পানে জুলুর জুলুর চাহিয়া থাকিত। ইচ্ছা যে, তাহাকেও দুই এক খানা আমরা দিই। কিন্তু তখন মাশ্চন্টক মহাশয়ের অবস্থা ভাল ছিল না। এত কোথা হইতে আসিবে, বুড়ীর সে বিবেচনা ছিল না। তোমরা কি বলা। তাঁর কি আর দুইটী মুড়ি খাইলে চলিত না!! দাঁত ছিল না। সত্য। তা, কত লোক মাড়ি দিয়া যে পাহাড় পৰ্ব্বত চিবায়, মাড়ি দিয়া লোহার কড়াই খাইয়া যে হজম করে! তােমরা কি বল! বুড়ির দৃষ্টিতে সেই পরোটা আমাদের প্লেটে গিয়া গজগজু করিত। এক দিন অধরের পেট কামড়াইতে লাগিল। পেটের ব্যথায় কাটা ছাগলের মত ছটুফটু করিতে লাগিল। আমার সহ্য হইল না। আমি কৰ্ত্তাকে । আমি বলিলাম,- “দেখ মাশ্চন্টক মহাশয়। তোমার মায়ের জ্বালায় আমাদের নড়িবার যো নাই। মুখটী নাড়িলেই আমনি ডাইনীর মত মিটির মিটির চাহিয়া দৃষ্টিতে আমাদের পেটের ভাত চাল হইয়া যায়। গ্ৰাহিণী রোগে সকলকে হইবে!” তোমরা কি বল! মাশ্চন্টক মহাশয় মাকে ঘা কতক উত্তম মধ্যম দিয়া দিলেন Y বুড়ী কাঁদিতে লাগিল। তা দেখিয়া আমার হাড় জুলিয়া গেল। আমি বলিলাম,- “তোমার বেটা! দশ মােস দশ দিন পেটে ধরিয়াছ। না হয় ঘা কতক মারিয়াছে। আদিখ্যাতা করিয়া তাতে আবার কান্না কেন, বাছা?” তোমরা কি বল। কৰ্ত্তাকে আমি বলিলাম,- “দেখ মাশ্চন্টক মহাশয়! এক দিন একটু শাসন করিলে চলিবে না। তোমার মাকে মাঝে মাঝে ঐ রূপ শাসন করিতে হইবে। তবে অভ্যাস হইয়া যাইবে। তা না হইলে এক আধ বার মারিলে ধরিলে ভ্যান ভ্যান করিয়া কাঁদিবে। কান্নার জ্বালায় বাড়ীতে আমি তিষ্টিতে পারিব না। তোমরা কি বল! মাশ্চন্টক মহাশয় তাহাই করিতে লাগিলেন। তবে বুড়ীর ডাইনীর মত সে মিটির মিটির চাউনি গেল। ভগবান মাথার উপর আছেন। আমি না হয় সহিলাম; কিন্তু তিনি সহিবেন কেন? তোমরা কি বলা আমি কাঁদিতে মানা করিয়াছিলাম। আমার কথা তিনি শুনিলেন না। কাঁদিয়া কঁদিয়া শেষে তাঁহার চক্ষু দুইটী অন্ধ হইয়া গেল। তার পর এক দিন সকাল বেলা দেখি না যে, বিছানায় কাঠ হইয়া পড়িয়া আছেন। তখন আমার হাড় জুড়াইল। তোমরা কি বল! যাহা হউক, তিনি এখন স্বর্গে গিয়াছেন। অধিক কথা আর বলিবার আবশ্যক নাই। তাই বলি যে, পড়িত আমার শ্বাশুড়ীর পাল্লায়, তাহা হইলে বুঝিতাম। তোমরা কি বল!” অন্য পক্ষের কথা এইরূপ। এমন শ্বশুর শাশুড়ী পাইয়াও প্রভাবতী যে সুখে ঘর কন্না করিতে পারিল না, তাহাই আশ্চর্য্যের কথা। কলিকালের বীে! কত ভাল হইবে! frr:Ruig aniž3. g3 ze! A www.amarboi.com%37*****"***"******