পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধরিয়াছে। ইহার শরীরে আর কিছু নাই। রাজা প্ৰজা সকলকে যে লইয়া যায়, যাহার হাত হইতে কাহারও নিস্তার নাই, সেই বোধ হয়, আজ রাত্ৰিতে আপনার কন্যাকে লইয়া যাইবে, আপনাকে লইয়া যাইতে হইবে না।” ডাক্তার রাত্রিতে, আরও দুই তিন বার আসিলেন। প্ৰভাবতীকে বাঁচাইবার জন্য অনেক যত্ন করিলেন। কিন্তু প্ৰভাবতীর অবস্থা ক্রমেই মন্দ হইতে লাগিল। সন্ধ্যার পর প্রভাবতী বলিল,— “বাবা! বড় দাদা মেজ দাদাকে দেখিতে পাইব না?” মুস্তফি মহাশয় তৎক্ষণাৎ কলিকাতায় একজন লোক পাঠাইয়া দিলেন। ভাই দুইজন যথাসময়ে আসিয়া উপস্থিত হইল। দুই ভ্রাতার দুই হাত ধরিয়া প্ৰভাবতী বলিল,- “আমি ভাই, চলিলাম। বাবা মাকে তোমরা দেখিও । বাবা মায়ের মনে কখন কষ্ট দিও না।” রাত্রি দুই প্রহরের পর প্রভাবতীর সর্বশরীর শীতল হইয়া গেল। শ্বাস প্রশ্বাস যেন ক্ৰমে কমিয়া আসিতে লাগিল। পিতা মাতা ও দুই ভ্ৰাতা তাহাকে ঘিরিয়া বসিয়া রহিলেন। প্রভাবতী বলিল, — “আর আমার এখন কোন কষ্ট নাই। কেমন শান্তি! কেমন সুখ! সুখ ও স্বচ্ছন্দতায় সৰ্ব্বশরীর যেন পূর্ণ হইয়া আসিতেছে। মরণে যে এমন সুখ, পূৰ্ব্বে তাহা জানিতাম না। মনে করিতাম, মৃত্যুকালে লোকের কত না যাতনা হয়। কিছুমাত্র কষ্ট হয় না, মা! বড় সুখ। এ যে কি সুখ, তাহা তোমাদিগকে আমি বলিতে পারি না!” পিতা মাতা ভ্রাতা সকলেই কাঁদিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ নিঃশব্দে থাকিয়া প্ৰভাবতী পুনরায় বলিল, “আমি একটু নিদ্রা গিয়াছিলাম। চমৎকার একটী স্বপ্ন দেখিলাম! না, সে স্বপ্ন নহে, কথা। বাবা! তোমাকে সেই সব কথা তিনি আমাকে বলিতে আজ্ঞা করিয়াছেন।” মুন্তফি মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “ ? কে তোমাকে আজ্ঞা করিয়াছেন?” প্রভাবতী অতি মৃদুস্বরে উত্তর কব্লিট:১২ত “ এইমাত্র একজন বৃদ্ধ লোক আমার নিকট আসিয়াছিলেন। ঠিক মুনি ঋষিদের মতপার্তাহার শরীর তপ্তকাঞ্চনের ন্যায় উজ্জ্বল। কি প্ৰসন্ন মূৰ্ত্তিা! স্নেহ, দয়া ও ভালবাসা দিয়া বিধাতা যেন তাঁহার মুখখানি গড়িয়াছেন। হাসি হাসি মুখে তিনি আমাকে বলিলেন,- “প্রভাবতি! মরিতে কি তোমার ভয় হইতেছে?” আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আপনি কে?” তিনি উত্তর করিলেন,- “তোমার মত আমিও একদিন পৃথিবীতে মানুষ হইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছিলাম। পৃথিবীতে থাকিতে যথাসাধ্য আমি ভাল কাজ করিতে চেষ্টা করিয়াছিলাম। ভগবানকে আমি ভক্তি করিতাম ও ভাল বাসিতাম। তাহার জীবীগণকেও আমি ভাল বাসিতাম। পরের দুঃখ মোচন করিতে ও সকলকে সুখে রাখিতে আমি চেষ্টা করিতাম। সাধ্য মতে কখন কাহারও মনে আমি দুঃখ দিতাম না। সত্য পথে থাকিয়া জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিতে সৰ্ব্বদা চেষ্টা করিতাম। সেই জন্য আমি এখন দেব-শরীর প্রাপ্ত হইয়াছি। অতি পবিত্ৰ মনোরম স্থানে পরম সুখে বাস করিতেছি। তোমাকে এখন সেই স্থানে লইয়া যাইব। কিছুদিন পরে তোমার পিতা মাতাও সেই স্থান যাইবেন। তোমার দ্বারা তোমার বােপকে এই সব কথা বলিতে আমি আদিষ্ট হইয়াছি।” প্রভাবতীর পিতা জিজ্ঞাসা করিলেন,- “তাহার পর?” 6:SR fitRig sniž3. g3 ze! A www.amarboi.comf33"*"***"*"*