পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাশ্চটক-গৃহিণী ঘরের ভিতর গুলের অগ্নি করিয়া দ্বার জানালা বদ্ধ করিয়া শয়ন করিয়াছিলেন। প্ৰজ্বলিত কয়লা অথবা গুল হইতে যে বিষময় বাষ্প নির্গত হয়, তাহা হইতেই হঁহাদের মৃত্যু হইয়াছে, সকলে এইরূপ স্থির করিল। সেরূপ গলিত দুৰ্গন্ধবিশিষ্ট মৃত দেহ প্রতিবেশিগণ ঘাটে লইয়া যাইতে সম্মত হইল না। সরকারি লোক দ্বারা তাঁহাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হইল। মাশ্চন্টক মাশ্চটক্‌নীর মৃত্যু হইয়াছে জানিতে পারিয়া গোপালের মা তৎক্ষণাৎ কলিকাতায় সুরেশের নিকট একজন লোক প্রেরণ করিয়াছিলেন। মাতার আজ্ঞায়, তাঁহাদের সৎকারের নিমিত্ত, সুরেশ তিন জন বন্ধুর সহিত আসিয়া উপস্থিত হইল। কিন্তু সুরেশের পৌঁছিতে বিলম্ব হইয়াছিল। সে আসিয়া দেখিল যে, সরকারি লোক দ্বারা সে কাৰ্য সম্পাদিত হইয়াছে। মাশ্চটকদিগের বাটীতে প্ৰবেশ করিয়া সুরেশ, যে ঘরে প্রভাবতীর মৃত্যু হইয়াছিল, সেই ঘরে একবার গমন করিল। যে স্থানে প্ৰভাবতী শয়ন করিয়াছিল, সুরেশ তাহার নিকট গিয়া দাঁড়াইল । “প্ৰভা! বোন! দিদি আমার!” আস্তে আস্তে এইরূপ কথা সে বলিতে লাগিল। সেই সময় সহসা সেই ঘর এক অপূৰ্ব্ব সুগন্ধে পরিপূরিত হইল। সুরেশের মনে কে যেন শান্তি ঢালিয়া দিল। তাহার চক্ষু দিয়া টপ্‌টপূ করিয়া জল পড়িতে লাগিল। সে ঘর হইতে বাহির হইয়া সুরেশ মাশ্চন্টক মহাশয়ের ঘরে প্রবেশ করিল। তখনও ঘরে ভয়ানক দুৰ্গন্ধ ছিল। নাকে কাপড় দিয়া সুরেশ এদিক ওদিক দেখিতে লাগিল। মাশ্চটক মহাশয়ের তক্তপোষ, ঘরের দুই দিকের প্রাচীরের নিকট ছিল। সুরেশের দৃষ্টি সেই দেয়ালের উপর পড়িল। সুরেশ দেখিল যে, বসিয়া বসিয়া যত দূর পর্য্যন্ত পারিয়াছেন, মাশ্চন্টক মহাশয় কয়লা দিয়া সেই দেয়ালের গায়ে অনেক স্থানে বড় বড় অক্ষরে এই কয়টীি কথা লিখিয়াছেন, “ময়না কোথা গেল! টুক, টুক, টুক!” বাটী আসিয়া সুরেশচ— মাতার নিকট সমুদয় বিবরণ প্ৰদান করিল। বিরস বদনে, অশ্রুপূরিত লোচনে মাতা বলিলেন,- “এত দেখিয়া শুনিয়া লোকের যে জ্ঞান হয় না, তাহাই আশ্চৰ্য্য!” (S fitRig oirž3. g3 ze! A www.amarboi.comf937"ovo"***********