পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা ও রাণী কাঁদিতে লাগিলেন; কিন্তু কাঁদিলে আর কি হইবে! ডাক্তার-বৈদ্য আনিয়া ভানুমতীর যথাবিধি চিকিৎসা করিতে লাগিলেন। ডাক্তারেরা কালেমেল ও বৈদ্যাগণ মহাদেব-চুর্ণ পৰ্যন্ত ব্যবস্থা করিলেন, তথাপি কোনরূপ উপকার হইল না। ভানমতীর শরীর যে খড়ের, সেই খড়ের রহিয়া গেল। বৈদ্যগণ অনেকক্ষণ পৰ্যন্ত নাড়ী টিপিয়া দেখিলেন; কিন্তু কি জন্য ভানুমতীর শরীর খড়ের হইয়া গিয়াছে, তাহার কারণ নির্দেশ করিতে পারিলেন না। অবশেষে রাজা গুণিগণকে আনিয়া ভানুমতীর চিকিৎসা করাইলেন। গুণিগণ অনেক ঝাড়ান-কাঁড়ান করিল, ভানুমতীর শরীরে শত শত ফুৎকার দিল; তথাপি কিছুমাত্র উপকার হইল না। তাহার পর যাহারা ভূত নামাইতে জানে, রাজা তাহাদিগকে আনিয়া ভূত নামাইলেন। অন্ধকার ঘরে ভূতগণ দুপদাপ করিতে লাগিল, দুই সের দুধ ও তিন সের সন্দেশ খাইয়া ফেলিল, নাকে কথা বলিয়া অনেক জটিবুড়ীর নাম করিল। কিন্তু তাহাতেও কোন উপকার হইল না, ভানুমতীর শরীর যে খড়ের, সেই খড়ের রহিয়া গেল। নিতান্ত নিরুপায় হইয়া রাজা শেষে আপনার রাজ্যের ভিতর সোনার চেঙাড়া ফিরাইয়া দিলেন। সোনার চোঙড়া লইয়া রাজার লোকগণ নানা নগরে ও নানা গ্রামে ফিরিতে লাগিল, আর তাহার সহিত যে চুলি ছিল, সে এই বলিয়া ঢোঁটুরা দিতে লাগিল,- “রাজকন্যা ভানুমতীর মুখ ব্যতীত সৰ্ব্বশরীর খড়ের হইয়া গিয়াছে। যে রাজকন্যাকে ভাল করিতে পরিবে, রাজা তাহাকে অৰ্দ্ধেক রাজ্য দিবেন ও রাজকন্যার সহিত তাহার বিবাহ দিবেন, চ্যাং, চ্যাং চ্যাং।” সোনার চেঙড়ার সহিত রাজার ঢোঁটুরা গ্রামে গ্রামে লাগিল। কিন্তু সে সোনার চেঙড়া কেহই ধরতে সাহস করল না। মানুষের শরীর যদি ঃ খড় হইয়া যায়, তাহা হইলে তাহাকে সুস্থ করা বড় সহজ কথা নহে। অৰ্দ্ধেক রাজ্য ও রূঞ্জকন্যা পাইবার লোভ অনেকের হইল বটে; কিন্তু এ রোগের কথা পুথিতে লেখা নাই, స్టో ধর নামও কেতবে লেখা নাই । ধ্ৰুপম হইয়াছে। কিন্তু সেকালে এ-স্থানের লোকে সকাস্ট্রে৯ষ্ট্রদেশে অনেক ব্ৰাহ্মণেরও বাস ছিল। ইরাণ দেশের কোন গ্রামে এই সময় এক ব্ৰাহ্মণী ঘাস করিতেন। এক শিশুপুত্র রাখিয়া তাঁহার পতির মৃত্যু হইয়াছিল। বিধবা অতিকষ্টে সেই পুত্রটিকে প্রতিপালন করিতে লাগিলেন। সে শিশুটির নাম ছিল রুস্তম। এক্ষণে সেই পুত্র যৌবনকালে পদার্পণ করিয়াছে, তাহার বয়ঃক্রম আঠার বৎসর হইয়াছে। কিন্তু এখনও সে অর্থে পাৰ্জ্জন করিতে পারে নাই। সুতরাং মাতা ও পুত্রের অতিকষ্টে দিনাতিপাত হইতেছিল। মাঝে মাঝে সৰ্ব্বদাই তাহাদিগকে উপবাস করিয়া দিনযাপন করিতে হইত। এইরূপ একদিন তাঁহাদের ঘরে অন্ন ছিল না। মাতা-পুত্র সেদিন উপবাস করিয়া রহিলেন। নিজের যত কষ্ট হউক আর না হউক, বৃদ্ধ মাতার কষ্ট দেখিয়া রুস্তম অতিশয় কাতর হইলেন। পরদিন প্ৰাতঃকালে তিনি আপনার মাতাকে বলিলেন,- “মা! বিদেশ গিয়া অর্থে পাৰ্জন করিবার নিমিত্ত আমি বারবার তোমার নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিয়াছি। কিন্তু তুমি আমাকে সে অনুমতি প্ৰদান কর নাই। কিন্তু মা! তোমার কষ্ট আমি আর দেখিতে পারি না। বৃদ্ধ মাতাকে প্রতিপালন করা পুত্রের কৰ্ত্তব্য। তাহা যদি আমি না করি, তাহা হইলে ধৰ্ম্মে পতিত হইব, সকলে আমাকে কাপুরুষ নরাধম বলিয়া জানিবে। এক্ষণে বিদেশে গিয়া অর্থে পাৰ্জ্জন করিতে মা, তুমি আমাকে অনুমতি প্ৰদান কর। অনেক টাকা লইয়া শীঘ্রই আমি ঘরে ফিরিয়া আসিব। তখন দুই জনে সুখে-স্বচ্ছন্দে চিরকাল যাপন করিব।” মজার গল্প 8 sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro