পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা প্রথম সেকথা শুনিয়া প্ৰাণসম পুত্ৰকে বিদেশে পাঠাইয়া কি করিয়া তিনি প্ৰাণ ধরিবেন, তাহাই ভাবিয়া তিনি আকুল হইলেন। কিন্তু পুত্রের বিনয়বাক্যে অবশেষে তাঁহাকে সম্মত হইতে হইল। কাঁদিতে কাঁদিতে রুস্তমকে তিনি বিদায় করিলেন। এক বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণের নিকট রুস্তম বিদ্যাশিক্ষা করিয়াছিলেন। প্রাচীন জেও ও সংস্কৃত ভাষায় লিখিত নানা শাস্ত্র তিনি অধ্যয়ন করিয়াছিলেন। শরীরেও তাহার অপরিমিত বল ছিল। সেইজন্য প্রতিবাসিগণের অনুরোধে মাতা তাহার নাম রুস্তম রাখিয়াছিলেন। বাঞ্জ নামক এক প্রকার বৃক্ষের শাখা কাটিয়া তিনি মোটা এক ছড়ি প্রস্তুত করিলেন। সেই ছড়িগাছটি হাতে করিয়া তিনি পথ চলিতে লাগিলেন। রাজধানীতে নানারূপ অর্থে পাৰ্জনের উপায় আছে। সে নিমিত্ত তিনি রাজধানী-অভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন। পথ চলিতে চলিতে একদিন তিনি গ্রামের নিকট এক মাঠের মাঝখানে গিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি দেখিলেন যে, সে স্থানে এক কৃষক একটি গাভীকে নিদারুণভাবে প্রহার করিতেছে। গাভী তাহার ক্ষেত্রে গিয়া কিছু শস্য খাইয়াছিল। এই অপরাধে দুৰ্ব্বত্ত সেই গাভীকে বাধিয়া অতি নিষ্ঠুরভাবে প্রহার করিতেছিল। নিগড়িবন্ধনে আবদ্ধ থাকিয়া গাভী পলাইতে পারিতেছিল না। প্ৰহারের যাতনায় তাহার দুই চক্ষু দিয়া দরদীর ধারায় অশ্রুধারা বিগলিত হইতেছিল। সেই সময় একটি কাক সেই কৃষকের একবার এদিকে একবার ওদিকে উড়িয়া তাহাকে ঠোকরাইতে চেষ্টা করিতেছিল। গাভীর ক্লেশ দেখিয়া কাক হেন পক্ষীর হৃদয় ব্যথিতু হইয়াছিল; কিন্তু দুৰ্ব্বত্ত কৃষকের হৃদয় ব্যক্তি যুক্ত নিষেধ করিলেন। কৃষক রুস্তমকে গুলি দিয়া গুরুক্লে আরও অধিক নিষ্ঠুরভাবে প্রহার করিতে লাগিল। রুস্তম আর ক্ৰোধ সংবরণ করিতে পৃছিলেন না। সম্মুখে মুটির উপর গােলাকার প্রস্তরখণ্ডের ন্যায় কি পড়িয়াছিল। রুস্তম সেই বস্তু তুলিষ্টলইলেন ও তাহা দিয়া কৃষককে ছুড়িয়া মারিলেন। কৃষকের গায়ে তাহা লাগিল না, তথাপ্লিসিহঁসা সে ঘোরতর ভীত হইল। ভয়ে তাহার। সৰ্ব্বশরীর কঁপিতে লাগিল, চক্ষুকোিটর হইতে তাঁহার চক্ষু দুইটি যেন বাহির হইবার উপক্রম হইল। বিকট চীৎকার করিয়া সে রুদ্ধশ্বাসে সে স্থান হইতে পলায়ন করিল। রুস্তম আশ্চৰ্য হইলেন। কি জন্য কৃষক এত ভীত হইল, তাহার কারণ তিনি বুঝিতে পারলেন না। যেস্থানে গোলাকার প্রস্তরখণ্ডটি পড়িয়াছিল, সেইস্থানে গিয়া তিনি দেখিলেন যে, তাহা প্রকৃত প্রস্তরখণ্ড নহে। তাহা নরমুণ্ড। রুস্তমকে দেখিয়া সেই নরমুণ্ড দুই পাটি ভীষণ দন্ত বাহির করিয়া খলখল শব্দে হাসিয়া উঠিল। তৃতীয় অধ্যায় সাদি ও তারা যাহাকে ঢ়িল মনে করিয়াছিলেন, তাহা মানুষের মাথা হইল দেখিয়া রুস্তম বিস্মিত হইলেন। মুণ্ডের হাসি দেখিয়া রুস্তম আরও বিস্মিত হইলেন। অবশেষে তাহার কথা শুনিয়া রুস্তম আরও আশ্চৰ্য্যান্বিত হইলেন। 8. দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্যািক্যনাথ রচনাসংখ্যাই