পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভানুমতীকে সে একটা ঘরে বন্ধ করিয়া রাখিল। তাহার পর আপনার ঘরে আসিয়া কুঁজে রাজা প্রথম সাবান দিয়া স্নান করিল। তাহার পর সুন্দর হইবার নিমিত্ত মুখে সে পাউডার মাখিল। পোড়া হাঁড়ির উপর ঈষৎ চূণের দাগ লাগিলে যেরূপ দেখায়, তখন তাহার মুখ সেইরূপ দেখাইল । তাহার পর সে ভাল ভাল সাচ্চার পোষাক পরিধান করিল। পাকা তাল হইতে স্থানে স্থানে খোসা ছাড়াইয়া লইলে যেরূপ দেখায়, জরির পোষাক পরিয়া তাহাকে সেইরূপ দেখাইতে লাগিল। তাহার পর সে গায়ে নানারূপ সুগন্ধ লেপন করিল। তাহার পর সে বাক্স হইতে সামান্য একটি টুপি বাহির করিল। মাথা হইতে সাচ্চার টুপিট খুলিয়া সেই সামান্য টুপিট একবার সে পরিধান করিল। সেই টুপিট পরিয়া আরসীর দিকে চাহিয়া ঈষৎ একটু হাসিল। তাহার পর সেই সামান্য টুপিট মাথা হইতে খুলিয়া সে আপনার পকেটে রাখিল ও মাথায় পুনরায় সেই সাচ্চার টুপি পরিধান করিল। যে ঘরে ভানুমতী আবদ্ধ ছিলেন, সাজগোজ করিয়া কুঁজে রাজা সেই ঘরে প্রবেশ করিল। ঘরে একখানি খাট ছিল। ভানুমতী সেই খাটের একপার্শ্বে বসিয়া কাঁদিতেছিলেন, অবিরল ধারায় চক্ষুর জলে তাঁহার বুক ভাসিয়া যাইতেছিল। কিন্তু কুজো রাজাকে দেখিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ চক্ষুর জল মুছিয়া ফেলিলেন ও তাহার পর তিনি আরক্ত-নয়নে তাহাকে বলিলেন, — “দুষ্ট! আমাকে তুই এখানে কেন আনিয়াছি সৃ? আমার বাবা এখন সসৈন্যে আসিয়া তোকে নিপাত করিবেন। যদি প্ৰাণের ভয় থাকে, তাহা হইলে শীঘ আমাকে বাড়ী রাখিয়া আয় ।” কুজো রাজা বলিল,— “ছি ভাই। অত রাগ আনিয়াছি। আমার মত বর পৃথিবা খুঁজিয়া তুমি ভানুমতী বলিলেন,- “তোরে আমি বিবাহ না? নিজের মুখ একবার আরাসীতে গিয়া দেখুধু মাখা হইয়াছে; দূর! দূর!” কুঁজে রাজা উত্তর করিল,- “ তেল মাখি নাই, আতর মাখিয়াছি। যদি স্ব-ইচ্ছায় আমাকে তুমি বিবাহ না কর, তাহা জোর করিয়া তোমাকে আমি বিবাহ করিব। দেখি, কে তোমাকে রক্ষা করিতে পারে। তোমার ব্যাপকে আমি ভয় করি না। একফুয়ে তোমার ব্যাপকে আমি উড়াইয়া দিব।” ভানুমতী বলিলেন, — “আমার বাপ যদি না পারেন, তাহা হইলে যে তোর গুরুর নাক কাটিয়াছে, সে আমাকে উদ্ধার করিবে, সে আসিয়া তোর দণ্ড করিবে।” গুরু যে বন্দী হইয়াছে, কুঁজে রাজা তাহা শুনিয়াছিল। সে মনে করিয়াছিল যে, ভানুমতীকে প্ৰথম বিবাহ করিয়া তাহার পর সে গুরুকে উদ্ধার করিতে চেষ্টা করিবে । গুরুর নাক কাটা গিয়াছে; এখন সেই কথা শুনিয়া সে অতিশয় ক্রুদ্ধ হইল। ভানুমতীর সে বামহাতটি ধরিল। বামহাত ধরিয়া দ্বারের দিকে টানিতে লাগিল, আর বলিতে লাগিল,—“চল, বাহিরে চল, দালানে গিয়া সভা করিয়া পুরোহিত ডাকিয়া এখনি তোকে আমি বিবাহ করিব। তাহার পর দেখা যাইবে, কে কি করে।” ভানুমতী আপনার হাত ছাড়াইয়া লইতে চেষ্টা করিতে লাগিলেন, আর দক্ষিণ হাত দিয়া তাহার মুখ আঁচড়াইয়া ও সেই সাত হাত দাড়ি ছিড়িয়া দিতে লাগিলেন। দাড়ি ছিন্ন ভিন্ন হইয়া শোণের ন্যায় চারিদিকে পড়িতে লাগিল, দাড়িটি কুজো রাজার সখের ছিল। দাড়ি ছিন্নভিন্ন হইয়া চারিদিকে পড়িতে লাগিল, তাহা দেখিয়া কুজো রাজার বড় ভয় হইল! সে ণ আর কি! সাত হাত দাড়িতে আবার তেল o দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comৰ্ম্মিসকীনাথ রচনাসংগ্ৰহ