পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিদিমণিকে লইয়া আমি সেই স্থানে বাস করিতে লাগিলাম। একবার এই সময় ঘোরতর দুৰ্যোগ করিয়াছিল। বাহিরে বাতাস হুহু করিয়া বহিতেছিল। দিদিমণিকে লইয়া আমি শুইয়া আছি। সহসা বাহির বাড়ীতে বেহালার শব্দ হইল। রাত্রি তখন প্রায় দুই প্রহর হইয়াছিল। আমি মনে করিলাম যে, এত রাত্ৰিতে আমাদের বাহির বাড়ীতে বেহালা বাজায় কে? বাহির বাড়ীতে তো কেহ বাস করে না। পরদিন আমি বাহিরবাড়ীতে গিয়া চারিদিক দেখিলাম। জনপ্ৰাণীকেও সে-স্থানে দেখিতে পাইলাম না। পোড়ো ভাঙ্গা বাড়ীর যেরূপ অবস্থা হয়, বাহির বাড়ীর সেইরূপ অবস্থা হইয়াছিল। সেদিন বিলাসীকে একবার একেলা পাইয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “বিলাসি! কাল রাত্রিতে বাহির-বাটীতে বেহালা কে বাজাইতেছিল?” আমার কথা শুনিয়া বিলাসীর মুখ শুষ্ক হইয়া গেল। আমৃতা আমৃতা করিয়া সে উত্তর করিল,- “বেহালা! বেহালা আবার কে বাজাইবে? ও বাতাসের শব্দ।” বিলাসীর কথায় আমার প্রত্যয় হইল না। আমি নিশ্চয় বুঝিলাম যে, সে আমার নিকট কোন বিষয় গোপন করিতেছে। বিলাসী পুনরায় বলিল,— “যাহা হউক, দিদিমণিকে তুমি সদর-বাড়ীতে যাইতে দিও না। সাপ-খোপ কি আছে না আছে, কাজ কি ওদিকে গিয়া।” আরও কিছুদিন গত হইয়া গেল। একবার নয়, আরও অনেকবার আমি সেই বেহালার শব্দ শুনিতে পাইলাম । যখনই রাত্রিকালে বাদলা ও Y 9 প্ৰাণপণে বেহালা বাজায় । কেবল বেহালা নহে সর পূজার সময় মহা-অষ্টমীর রাত্রিতে বাহির বাড়ীতে আমি শাকঘণ্টার শব্দও ভূমি , ধূপ-ধূনার গন্ধও পাইয়াছিলাম। বলিদানের সময় যেমন একজন ভক্ত স্বরে মা মা বলিয়া চীৎকার করে, সে শব্দ শুনিয়াছিলাম। এ সমুদয় ব্যা র্থ কি, তাহা জানিবার নিমিত্ত বৃদ্ধা সহচরীকে, পিতোমকে, বিলাসীকে আমি বারবার করিয়াছিলাম। কিন্তু কেহই আমাকে বলে নাই। “ও কিছু নয়,” এই কথা বলিয়া সকলে প্রকৃত তত্ত্ব আমার নিকট গোপন করিতে চেষ্টা করিয়াছিল । এইরূপে সে স্থানে আমাদের দিন কাটিতে লাগিল। কত শতবার আমি সেই বেহালার শব্দ শুনিতে পাইলাম। পুনরায় পূজার সময় আসিল। মহাষ্টমীর দিন দুই প্ৰহরের সময় দিদিমণি, পিতেম ও বিলাসীর সহিত গ্রামের ভিতর পূজা দেখিতে গিয়াছিল। আমি বিদেশী লোক, আমাকে কেহ নিমন্ত্রণ করে নাই, সেজন্য আমি তাঁহাদের সঙ্গে যাই নাই। পূজা দেখিয়া বেলা পাচটার সময় দিদিমণি ফিরিয়া আসিল। বিলাসী আমাকে বলিল,— “যদু ভড়ের বাড়ী পূজার এবার খুব ধুম। আহা! কি চমৎকার প্রতিমা করিয়াছে। আর শামীদিদি, ভড়গিনী তোমাকে অনেক করিয়া যাইতে বলিয়াছে।” আমি বলিলাম,- “আচ্ছা, বিলাসী! তবে আমি একবার মাকে দেখিয়া আসি। ‘তুই ভাই দেখিস, যেন দিদিমণি কোথাও না যায়।” এই কথা বলিয়া আমি ভড়েদের বাড়ী ঠাকুর দেখিতে যাইলাম। ভড়গিনী আমাকে অনেক আদর করিলেন। অনেকগুলি খই-মুড়কি, নারিকেল-সন্দেশ, রসিকরা—আরও কত কি আমার কাপড়ে বাধিয়া দিলেন। ফিরিয়া আসিতে আমার সন্ধ্যা হইয়া গেল। মজার গল্প ርእ ግርr sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro