পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাছতলায় অজ্ঞান হইয়া পড়িয়াছিল। কি করিয়া সে মাঠের মাঝখানে আসিয়াছিল, তাহা আমি বলিতে পারি না। আমি দেখিতে পাইয়া এখন তোমাদের বাড়ী লইয়া যাইতেছি।” তাড়াতাড়ি দিদিমণিকে আমি তাহার কোল হইতে আপনার কোলে লইলাম। কিন্তু দিদিমণির সর্বশরীরই ঠাণ্ডা দেখিয়া আমার প্রাণ উড়িয়া গেল। আমি ভাবিলাম, সে মরিয়া গিয়াছে। কাঁদিতে কাঁদিতে আমি তাহার নাকে ও বুকে হাত দিয়া দেখিলাম। দেখিলাম যে, নাক দিয়া অল্প অল্প নিশ্বাস পড়িতেছে। আর বুক অল্প অল্প ধুক্‌-ধুক করিতেছে। তাহা দেখিয়া প্ৰাণে আমার কতকটা আশা হইল। তাড়াতাড়ি মাঠ পার হইয়া আমরা বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। অনেক তাপ-সেক করিতে করিতে দিদিমণির চেতনা হইল। সেই চন্দ্ৰমুখে মধুর হাসি দেখা দিল, সুধামাখা দুই-একটি কথা দিদিমণির মুখ হইতে বাহির হইল। অল্প গরম দুধ আনিয়া সহচরী তাঁহাকে খাইতে দিলেন। তাহার সেই পদ্মচক্ষু দুইটি ঘুমে বুজিয়া গেল। সে রাত্রিতে দিদিমণিকে আমরা কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলাম না। দূরে মাঠের মাঝখানে একেলা সে কি করিয়া গিয়াছিল, পরদিন সেই কথা দিদিমণিকে আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম। দিদিমণি বলিলেন,- “বারেণ্ডায় আমি খেলা করিতেছিলাম। তাহার পর যে ঘরে আমার খেলা-ঘর আছে, আমি তাহার ভিতর যাইলাম। সেই ঘরের জানালার ধারে যেই দাঁড়াইয়াছি, আর দেখি না ঠিক তাহার নীচেতে বাগানে একটি মেয়ে রহিয়াছে। মেয়েটি আমার মত বড়, কিন্তু খুব সুন্দর। উপরদিকে আমার পানে চাহিয়া সে বলিল,— “সীতা! নেমে আয় না ভাই, আমরা দুইজনে করি।” আমি বলিলাম,- “না ਜਰ মীর্জাির্সয়া আমাকে বকিবে। কাল সকালবেলা শ্ৰেষ্টাির্করিব।” মেয়েটি বলিল,- “এখনও তেমন সন্ধ্যা হয় নাই, এখনও অনেক আলো বৃষ্ট্রিছে। এই দেখ আমার মাথা দিয়া রক্ত পড়িতেছে, তবুও দেখ আমি খেলা করিতেছি। ভূণ্ঠী ভাই।” তবুও আমি নামিলাম না। নীচে নামিতে মেয়েটি আমাকে বারবার বলিতে লাগিল। শেষে সে মাটির উপর বসিয়া পড়িল, বসিয়া হাপুসা নয়নে কাঁদিতে লাগিল। আমি আর থাকিতে পারিলাম না। নীচে নামিয়া বাটীর বাহির হইয়া আমি তাহার কাছে যাইলাম। কিছুক্ষণ বাগানের ভিতর আমরা দুইজনে খেলা করিলাম। এক স্থানে অনেকগুলি রজনীগন্ধা ফুল ফুটিয়া ছিল, তাহা আমরা তুলিলাম। সাদা টগরফুল ফুটিয়া আর একটি গাছ আলো করিয়াছিল। নীচে হইতে যত পারিলাম, সেই টগরফুলও আমরা তুলিলাম। কেমন করিয়া জানি না, তাহার পর বাগান পার হইয়া আমরা মাঠে গিয়া উপস্থিত হইলাম। কেমন করিয়া জানি না, সেই মেয়েটির সঙ্গে অনেক পথ চলিয়া ক্ৰমে মাঠের মাঝখানে গিয়া উপস্থিত হইলাম। সে-স্থানে একটি গাছ ছিল। সেই গাছতলায় একটি মেয়েমানুষ বসিয়া কাঁদিতেছিল। আমার মাকে স্বপ্নের ন্যায় আমার মনে পড়ে। সে মেয়েমানুষটি ঠিক আমার মায়ের মত। সেই রকম রং, সেই রকম মুখ, সেই রকম চুল, সেই রকম কথা। আদর করিয়া তিনি আমাকে কোলে লইলেন, আমার মুখে তিনি কত চুমা খাইলেন। কোলে বসাইয়া আমার মাথায় তিনি হাত বুলাইতে লাগিলেন। তাহার পর কি হইল, আর আমার মনে নাই।” -2lysis is! sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro 62 qq