পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুৰ্থ অধ্যায়। ফিং ফোং ফা পাঁচ বৎসর কাটিয়া গেল। একদিন প্ৰাতঃকালে দুইজন চীনেম্যান আসিয়া আমাকে বলিল,— ‘মোঙ্গ নামক যে চীনের হাত আপনি কাটিয়াছিলেন, গত রাত্রিতে তাহার মৃত্যু হইয়াছে। আপনার নিকট হইতে সেই হাতটি লইয়া কবরে দিতে সে বারবার অনুরোধ করিয়াছে। সেই হাতের নিমিত্ত আমরা আপনার নিকট আসিয়াছি।” আমার মাথায় যেন বাজ পড়িল! হাতটি ফিরিয়া দিতে আমি বারবার তিন সত্য করিয়াছিলাম। সেই সত্য হইতে আজ আমি ভ্ৰষ্ট হইলাম। কি আর করিব? দৈবক্রমে হাতটি নষ্ট হইয়া গিয়াছে, আমি সেই কথা তাহাদিগকে বলিলাম। বিরসবদনে তাহারা চলিয়া গেল। সেইদিন রাত্রিতে ঘরে শয়ন করিয়া আমি নিদ্রা যাইতেছি। রাত্রি দুই প্রহর অতীত হইয়া গিয়াছে। ঘরে অল্প অল্প আলো জুলিতেছে। সহসা কে আসিয়া চুল ধরিয়া শয্যা হইতে আমাকে তুলিয়া বসাইল। চকিত হইয়া আমি চাহিয়া দেখিলাম। দেখিলাম যে, একজন চীনে আমার বিছানার পার্শ্বে তোমার মামী শয়ন করিয়াছিলেন। সেই শব্দে তাহারও নিদ্রাভঙ্গ হইল। তিনিও চীনাকে দেখিতে পাইলেন। কিছুক্ষণ আমার খাটের পার্শ্বে দাড়াইয়া চীনে কুপিত কটাক্ষে আমার দিকে চাহিয়া ঘোরতর ভৎসনাসূচক ভঙ্গী করিয়াণ্ডাহার দক্ষিণ হাতের আধখানি অর্থাৎ কেবল বাহুটি আমাকে তুলিয়া দেখাইল। তাহার। পূৰ্ব্ব সৈ ঘর হইতে সে অদৃশ্য হইয়া গেল। পরে যে-ঘরে শিশি থাকে, সেই ঘরে খুঁটিখাট শ্লষ্ট হইতে লাগিল। পরে অবগত হইয়াছি যে, প্ৰত্যেক শিশি নিরীক্ষণ করিয়া সে আপনার ইবতের অনুসন্ধান করে। শিশিতে আপনার হাত দেখিতে না পাইয়া, তাহার পর বাড়ীরূড়ান্যান্য ঘর সে পাতি-পাতি করিয়া অনুসন্ধান করে। আজ কয় বৎসর ধরিয়া প্রতি রাত্ৰিত্নেস্ট এইরূপ করিতেছে। প্ৰথমে শয্যা হইতে সে আমাকে উত্তোলন করে, তাহার পর কুপিত ও ভৎসনার ভাবে সে আমাকে তাহার হাতের আধখানি দেখায়, তাহার পর শিশিগুলিকে দেখিয়া বেড়ায়, তাহার পর অন্যান্য ঘর অনুসন্ধান করে। রাত্রিকালে সহসা মাথার চুল ধরিয়া তুলিলে আমার বড় কষ্ট হয়। সেইজন্য মাথাটি আমি নেড়া করিয়াছি। এখন সে হাত ধরিয়া আমাকে উত্তোলন করে। যাহা হউক, তোমার মামী ও আমি এই রোগে আজ কয় বৎসর ভূগিতেছি। চাকর-চাকরাণী আমার বাড়ীতে তিষ্ঠিতে পারে না। এখন যাহারা আছে, রাত্রিতে তাহাদের কেহ আমার বাড়ীতে থাকে না। এই রোগের জন্য কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া আমি দেশে আসিয়াছি! কিন্তু চীনে ভূত আমার সঙ্গে সঙ্গে আসিয়াছে। বলা বাহুল্য যে, “এই বিপদ হইতে নিকৃতি পাইবার নিমিত্ত আমি না করিয়াছি—এমন কাজ নাই। অন্ত্র, মন্ত্র, জড়ি, বড়ি, কবচ, মাদুলী, ঝাড়ান, কাঁড়ান, ভূত নামানো, চণ্ডু নামানো, যাহা কিছু আছে, সব করিয়াছি। তাহার পর দেশে আসিয়া চীনের নামে শ্ৰাদ্ধ করিয়াছি, গয়াতে পিণ্ড দিয়াছি, গরীবদুঃখীকে দান করিয়াছি, এক তীৰ্থস্থান হইতে অন্য তীৰ্থস্থানে পলায়ন করিয়া বাস করিয়াছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় নাই। যেখানে যাই না কেন, চীনে ভূত সেইখানেই আমার সঙ্গে সঙ্গে যায়। আর একটি আশ্চৰ্য্য কথা এই যে, শিশিগুলি যদি আমি সঙ্গে না লইয়া যাই, তাহা হইলে উপদ্রবের আর পরিসীমা থাকে না। রাত্ৰিতে আমাকে শয্যা হইতে তুলিবার পর যখন সে শিশি ysig og 6አbrእ$ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro