পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহারা চুপি-চুপি কথা কহিতেছেন, আর খুব আমোদ করিতেছেন।” রায় মহাশয় বলিলেন, — “বটে।” রায় মহাশয় পুনরায় হাসিয়া বলিলেন,- “বিনয়! তোমার কোন ভয় নাই, ঠাকুর যদি আপনি পড়িয়া যাইত, তাহা হইলে হয়তো বাচিতাম না। কিন্তু ঠাকুর আপনি পড়ে নাই, তুমি ফেলিয়াছ। আমি খুব ভালো আছি। এবার আমি মরিব না। এই দেখ, আজ আমি উঠিয়া বসিতে পারিয়াছি।” ঠাকুরদাদার আশ্বাস।বাক্য শ্রবণে বিনয়ের মন আহিলাদে পূর্ণ হইল। চক্ষু মুছিয়া পিতামহের সহিত সে গল্প করিতে লাগিল । কিছুক্ষণ পরে পিতামহ বলিলেন, — “আমি মরিয়া গেলে টাকা পাইবে, সেইজন্য হাড়েরা আহাদে আটখানা হইয়াছিল। সৰ্ব্বদাই আমার মৃত্যুকামনা করিতেছিল। আমি এবার মরিব না। তাহারা টাকা পাইবে না। খুব জব্দ হইবে। বিনয়! তুমি খুব সাহসের সহিত কাজ করিয়াছ। এবার পূজার সময় তুমি যাহা চাইবে, তাহা আমি তোমাকে দিব। পূজার সময় তুমি কি লাইবে, এখন হইতে তাহা ভাবিয়া রাখা।” রায় মহাশয়কে দেখিবার নিমিত্ত সেদিন যখন ডাক্তার আসিলেন, তখন তাঁহার প্রতীক্ষায় হড়বংশ উৎফুল্লমুখে নীচে দাড়াইয়া রহিলেন। রোগীকে দেখিয়া ডাক্তার যখন নীচে আসিলেন, তখন হাড় মহাশয় ঘোরতর আগ্রহসহকারে জিজ্ঞাসা করিলেন,- “কেমন মহাশয়! আজি কেমন দেখিলেন? আর অধিক বিলম্ব নাই, না? আজ রাত্রি কি কাটিবে বলিয়া বোধ হয়? এতবড় একটা লোকের কাল হইলে, তাহার সব যোগাডু করা আবশ্যক, সেইজন্য জিজ্ঞাসা করিতেছি।” 9)م ঈষৎ হাসিয়া ডাক্তার উত্তর করিলেন,- 'আৰ্জি রোগীর কোনরূপ পীড়া আছে বলিয়া বৃদ্ধ হেয় না। এ যাত্রা ইনি রক্ষা পাইলেন।” হাড় মহাশয় একেবারে বসিয়া প্ৰ দুৰ্ত্তেম। বৃন্দাবনের মুখ শুষ্ক হইয়া গেল। রায় মহাশয় দুৰ্ব্বল রহিলেন বটে, কিন্তু দুইচারিদিনের মধ্যে তিনি সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যলাভ করিলেন। তাঁহার পীড়ার জন্য পূজার আয়োজন সমুদয় বন্ধ হইয়াছিল। এতবড় রোগ হইতে নিকৃতিলাভ করিয়া রায় মহাশয় মনের আনন্দে এবার ধূমধামের সহিত দুর্গোৎসব করিতে মানস করিলেন। চারিদিকে সেইরূপ আয়োজন হইতে লাগিল । পূজার পঞ্চমীর দিন রায় মহাশয় বিনয়কে জিজ্ঞাসা করিলেন,- “বিনয়, আমি বলিয়াছিলাম যে, পূজার সময় তুমি যাহা চাহিবে, তাহাই আমি তোমাকে দিব। তোমার কি চাই, তাহা এখন বল দেখি?” বিনয় উত্তর করিল,- “আগে তুমি বল যে, আমি যাহা চাহিব, তাঁহাই তুমি দিবে? তবে আমি বলিব ।” পিতামহ বলিলেন,- “হাঁ, তুমি যাহা চাহিবে, তাহাই আমি তোমাকে দিব।” বিনয় বলিল,- “আমি আমার মাকে চাই। আমার মায়ের উপর আর কখন তুমি রাগ করিবে না। মাকে বকিবে না, আমি তাই চাই। এই পূজার সময় আমার মাকে আনিবে, মায়ের বাবাকে আনিবে, মায়ের মাকে আনিবে, অন্নপূর্ণ মাসীকে আনিবে, আমি এইসব চাই।” এবার রোগ হইতে উঠিয়া আসন্ন মৃত্যুমুখ হইতে অব্যাহতি পাইয়া, রায় মহাশয়ের স্বভাব সম্পূর্ণরূপে পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছিল। সংসারে সুখ নাই, জীবন ক্ষণভঙ্গুর, ধন, ঐশ্বৰ্য নিতান্ত তুচ্ছ S8 află cios (gs se - www.amarboi conf**