পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰথম অধ্যায়। সূচনা বিজয় কলিকাতায় পড়িতেন। অনেকদিন পূৰ্ব্বে তাঁহার মাতার পরলোক হইয়াছিল। এক্ষণে পিতার পরলোক হইল। খরচ অভাবে তাহার লেখাপড়া বন্ধ হইয়া গেল। এক জ্যেষ্ঠভ্ৰাতা ব্যতীত সংসারে তাহার। আর কেহ ছিল না। জ্যেষ্ঠভ্রাতা পশ্চিমে কৰ্ম্ম করিতেন। নিরুপায় হইয়া বিজয় তাহার নিকট চলিয়া গেলেন। ভ্ৰাতৃজায়া তাহাতে বড় অসন্তুষ্ট হইলেন। প্রথমদিন হইতেই বিজয়কে তাড়াইতে চেষ্টা করিলেন। ভাই, স্ত্রীর নিতান্ত অনুগত। তাঁহার নিজের চক্ষু থাকিয়াও ছিল না, কৰ্ণ ছিল না, মন ছিল না। গৃহিণীর চক্ষু দিয়া তিনি দেখিতেন, তাহার কর্ণ দিয়া শুনিতেন, তাহার মন দিয়া তিনি ভাল-মন্দ বিচার করিতেন। ফলকথা, গৃহিণী তাঁহাকে যাহা বলিতেন, তিনি তাঁহাই করিতেন। ভাইও বিজয়কে দূর করিবার নিমিত্ত চেষ্টা করিতে লাগিলেন। ইতিপূৰ্ব্বে দেশ হইতে একজন ভদ্রলোক এই স্থানে আসিয়াছিলেন। সামান্য একটি ঘর ভাড়া করিয়া নিৰ্জ্জনে একাকী তিনি বাস করিতেন। বিজয়ের সহিত তাহার আলাপপরিচয় হইয়াছিল। সন্ধ্যার সময় তিনি ও বিজয়গঙ্গাতীরে কােন এক নিভৃত স্থানে গিয়া বসিতেন । a 9 একদিন বিজয়কে নিতান্ত বিষ য়া তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন । বিজয় আপনার দুঃখের কাহিনী তাঁহাকে । এই লোকটির নাম বেণীমাধব হালদার। বেণীবাবু বলিলেন,- “তুমি ভাবিও না, কলিকাতা গিয়া কৰ্ম্মকাজের চেষ্টা কর। এক বৎসর খরচের নিমিত্ত তোমাকে আমি দুইশত টাকা দিব। এক বৎসরের ভিতর কৰ্ম্মকাজ হয় ভালই; না হয়। পরে দেখা যাইবে।” বিজয় তাহাকে বার বার ধন্যবাদ করিলেন, আর তিনি বলিলেন,- “এ টাকা আমি ভিক্ষাস্বরূপ লইব না। সাধ্য হইলেই আপনার টাকা আমি পরিশোধ করিব।” বেণীবাবু বলিলেন,- “ধন্যবাদে আমার প্রয়োজন নাই। যদি যথার্থই তোমার মনে হয় যে, আমি তোমার উপকার করিলাম, তাহা হইলে পরে আমার নিন্দা করিও না, আর আমার কোন অনিষ্ট করিও না ।” বিজয় বলিলেন,- “বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কথা।” বেণীবাবু উত্তর করিলেন, — “লোকে বলে বটে, কিন্তু ইহা ঠিক বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কথা নহে। অনেক পূৰ্ব্বে একজন ফরাশি বলিয়াছিল,— “অমুক আমার নিন্দা করিতেছে বটে, কেন বল দেখি? আমি তো কখন তাহার কোন উপকার করি নাই।” পাপের পরিণাম 9 sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro