পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইল। গাছতলায় বাস করিয়া, দিনান্তে শাকান্ন ভোজন করিয়া, ধৰ্ম্মপথে থাকিয়া, মানুষ যদি প্রিয়জনের অকাল-মৃত্যু-জনিত শোক হইতে নিস্কৃতি পায়, সেও ভাল; তথাপি শোক-বিদীর্ণ হৃদয়ে কোটিপতি হওয়াও কিছু নহে। তিনি ভাবিলেন যে,- “এই মুহূৰ্ত্তে সৰ্ব্বস্ব পরিত্যাগ স্ত্রী-পুরুষে ঘোর দুঃখে দিনপাত করিতে লাগিলেন। এক বৎসর কাটিয়া গেল। পুনরায় ভদ্রমাস আসিল । নদীর বানে গ্রাম পুনরায় প্লাবিত হইল। রায়মহাশয় নিদ্ৰা যাইতেছিলেন। সহসা তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইল। তাহার মনে কিরূপ একটা আতঙ্ক উদয় হইল। তাড়াতাড়ি তিনি আলো জুলিলেন। গত বৎসরের ন্যায় বাড়ীর ভিতর বারেণ্ডার দিকের খড়খড়ি খোলা ছিল, কিন্তু সারসি বন্ধ ছিল। সেইদিকে তাঁহার দৃষ্টি পড়িল। তিনি দেখিলেন যে, কাচের উপর মুখ রাখিয়া ঘোর কৃষ্ণবর্ণের সেই খাদা ভূত দাঁড়াইয়া আছে। রায়মহাশয় ভীরু ছিলেন না। এই অমানুষিক মূৰ্ত্তি দেখিয়া ঘোরতর ভীত হইয়াছিলেন বটে, তথাপি তিনি সাহস করিয়া ঘর হইতে বাহির হইলেন। কিন্তু কোন স্থানের ভূতের চিহ্নমাত্র পাইলেন না। চাকর উপরে আসিল । গোলমাল শুনিয়া বড়ালমহাশয় বাহির বাড়ী হইতে আসিলেন। তন্নতন্ন করিয়া সকলে সমুদয় বাড়ী অন্বেষণ করিল। কিন্তু ভূতের চিহ্নমাত্র কেহ দেখিতে পাইল না। সদর দ্বার ও খিড়কি দ্বার পূৰ্ব্বের ন্যায় বন্ধ ছিল। সুতরাং ভয় দেখাইতে অথবা চুরি করিতে, বাহির হইতে কেহ বাটীর ভিতর প্রবেশ করে নাই। বাড়ীটি বৃহৎ। দুই মহল, দুই তলা, কতক কতক একালের চক-মিলান বাটী। বাড়ীর ভিতর উত্তর দিকে দােতালায় দুইটি বৃহৎ ঘর দুই ঘরে রায়মহাশয় ও তাঁহার স্ত্রী বাস করেন। পশ্চিম দিকে দুইটি ঘর। हू5* য়র কন্যা ও জামাতা বাস। করিতেন। এক্ষণে একজন বি লইয়া তাহার কুন্ঠী একাকিনী দুই ঘরে বাস করেন। উত্তরপশ্চিম কোণে একটি সিঁড়ি। পূৰ্ব্বদিকে শয়নাগার। তাহাতে রায়মহাশয়ের স্ত্রীর ভগিনীকন্যা আপনার দুই কন্যা লইয়া । পূৰ্ব্বে এই দুইটি ঘরে বেণীবাবু ও তাঁহার স্ত্রী শয়ন করিতেন। ইহার পার্শ্বে অন্ধকার ঘর। তাঁহাতে বেণীবাবুর জিনিসপত্র থাকিত। তাহার পার্শ্বে পূৰ্ব্বদিকে আর একটি সিঁড়ি। অন্তঃপুরের দক্ষিণ দিকে পূজার দালানের পশ্চাৎপ্রাচীর। পূৰ্ব্বে দালানে পূজা হইত। এক্ষণে ক্রিয়াকলাপ বন্ধ হইয়া গিয়াছে। দালানের সম্মুখে, বাহির বাটীর প্রাঙ্গণ ঘাস ও বনে পরিপূর্ণ হইয়াছে। বাহির-বাটীতে উপর ও নীচে অনেকগুলি ঘর। তাহার দুইটি ঘরে বড়ালমহাশয় সপরিবারে বাস করেন। সদর দরজা সৰ্ব্বদাই বন্ধ থাকে। ভিতর-বাটীর পশ্চিম দিকে খিড়কি দ্বার। সেই দ্বারা দিয়া সকলে আনাগোনা করেন। প্ৰাতঃকালে রায় মহাশয় জানিতে পারিলেন যে, পূৰ্ব্ব দিকে যে অন্ধকার ঘর আছে, তাহার অনেকটা প্রাচীর ভূতে খনন করিয়াছে। তাহা দেখিয়া সকলে আশ্চৰ্য্যান্বিত হইল। ভূতে কি কখন কোন স্থান খনন করে? অন্ধকার ঘর তালা দ্বারা আবদ্ধ ছিল। তালা সেইরূপ বন্ধ ছিল। সুতরাং মানুষে ঘরের প্রাচীর খনন করে নাই। কিন্তু ভূতে দেয়াল খুঁড়িল কেন? বড়ালমহাশয়কে ডাকিয়া কৰ্ত্তা জিজ্ঞাসা করিলেন,— “ভূত গত রাত্রিতে চাের-কুঠরির প্রাচীর খনন করিয়াছে। ইহার কারণ কি, অনুমান করিতে পারেন?” বড়ালমহাশয় কারণ অনুমান করিতে পারিলেন না। রায়মহাশয় একটু চিন্তা করিয়া পুনরায় বলিলেন,- “এ স্থানে দেখিতেছি লোকের খনন করা বাই। মানুষেও খনন করে, ভূতেও খনন করে। এ বাড়ীতে প্ৰথম যখন আমরা আগমন পাপের পরিণাম sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro Վ98 Ղ