পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহা হইলে সে ধনে প্রয়োজন কি? যে তেঁতুল গাছ হইতে হাঁক আসিতেছিল, সেই গাছটি রায়মহাশয় কাটিয়া ফেলিলেন। বাড়ীতে নানরূপ পূজা-পাট স্বস্ত্যয়ন করাইলেন। ভূতের রোজাগণের দ্বারাও নানারূপ ক্রিয়াকলাপ করাইলেন। বড়ালমহাশয় বলিলেন, — “আমি আপনার বাটীতে বাস করি, কোন দিন আমার নিমিত্ত হয় তো হাঁক আসিবে। তেঁতুল গাছ কাটিয়া ফেলিলে কি হইবে? ভূত অন্য গাছে বসিয়া হাঁক দিবে। মন্ত্র-তন্ত্রে এ ভূত যাইবে না। খাদা ভূত কিজান্য আসিতেছে, বােধ হয়, তাহা আমি বুঝিয়াছি। সেই দ্রব্যটি তাহাকে আনিয়া দিলেই সে বোধ হয় আর আসিবে না।” রায়মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সে কি দ্রব্য?” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন,- “রাজাবাবুর নিকট শপথ করিয়াছিলাম যে, তাহার ঘরের কথা কাহাকেও আমি বলিব না। কিন্তু খাদা ভূতের দীেরাত্ম্যে যখন আমাদের প্রাণ লইয়া টানাটানি হইতেছে, তখন অগত্যা আমাকে বলিতে হইল।” রায়মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন, — “রাজাবাবু কে?” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন,- “বেণীবাবুকে আমরা বাজাবাবু বলিতাম।” বড়ালমহাশয় উত্তর করিলেন,- “এখনও আপনার প্রাণ, আপনার গৃহিণীর প্রাণ, সুচিন্তা এবং সুবালাদিদির প্রাণ, তাহাদের মাতার প্রাণ,- এই সমুদয় প্রাণের জন্য মঙ্গল কামনা করিতে হইবে। তাহার পর এই বাটীতে আমরাও বাস করি। আমাদেরও প্ৰাণের ভয় আছে।” পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, রায়গৃহিণীর ভগিনীর কন্যা এই বাটীতে বাস করেন। বিধবা হইয়া দুইটি কন্যা লইয়া মাসীর আশ্রয়ে তিনি দিনপাত করিতেছেন। তাঁহার কনিষ্ঠা কন্যা সুবালা এখনও নিতান্ত শিশু । রায়মহাশয় বলিলেন, — “ভাল! বেণীবাবু সংসারের কি কথা আমাকে বলিলেন, তাহা বলুন। যদি টাকা খরচ করিলে খাদা ভুত দূর হয়, তাহা আমি করিব।” বড়ালমহাশয় বলিতে লাগিলেন,- “রাজাবাবু অর্থাৎ বেণীবাবু, স্ত্রী লইয়া এই বাটীতে বাস করিতেন। তাঁহার পিতা পূৰ্ব্বদেশ হইতে আসিয়াছিলেন। এ অঞ্চলে তাঁহার আত্মীয়স্বজন কেহ। ছিল না। তাহার স্ত্রী সুন্দরী ছিলেন। সেজন্য সকলে তাঁহাকে সোনা-বীে বলিয়া ডাকিত। সোনা-বীে ধৰ্ম্মপরায়ণ স্ত্রীলোক ছিলেন। গরীব-দুঃখী লোককে কখনও এক পয়সা দিতেন না বটে, কিন্তু সৰ্ব্বদাই পূজা-পাঠ জপ-তপ লইয়া থাকিতেন। রাজাবাবু স্ত্রীকে বড় ভালবাসিতেন, কিন্তু সোনা-বীে তাঁহাকে সেরূপ ভালবাসিতেন না। রাজাবাবু রামপক্ষী, বিলাতী বিস্কুট প্রভৃতি

                  • দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ V8s