পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ। রায়-গৃহিণীর বয়ঃক্রম পঞ্চাশ বৎসর পূর্ণ হইলে, বড়াল মহাশয় পুরস্কারস্বরূপ এক হাজার টাকা পাইবেন। পঞ্চম। যতদিন তাহার স্ত্রী জীবিত থাকিবেন, ততদিন বড়াল মহাশয় ৫০ টাকা হিসাবে বেতন পাইবেন । এইরূপ উইল করিয়া বড়াল মহাশয়কে তিনি বলিলেন,- “আমার স্ত্রীর জীবনের উপর আপনার স্বাৰ্থ রাখিয়া দিলাম। তাঁহাকে জীবিত রাখিতে আপনি যত্ন করবেন। আমার ভাই যাহাতে এ সম্পত্তি না পায়, ইহাই আমার একান্ত ইচ্ছা। এরূপ নারধম নিষ্ঠুর ভাই আমি কখনও দেখি নাই। আমাকে প্ৰবঞ্চনা করিয়া, বেণীবাবুকে ফুসলাইয়া সে এই সম্পত্তি লইতে চেষ্টা করিয়াছিল ।” রায় মহাশয় পুনরায় বলিলেন, — “উইল করিয়া এক্ষণে আমি নিশ্চিন্ত হইলাম। খাদা ভূতের যাহা ইচ্ছা এখন করুক। কিন্তু এবার ভাদ্রমাসে পুনরায় আসিয়া যদি সে পূৰ্ব্বরূপ হুঙ্কার শব্দ করে, তাহা হইলে, এ গ্রাম পরিত্যাগ করিয়া আমি অন্যত্র গমন করিব। ভাদ্রমাস আসিলা। খাদা ভূত যথারীতি উকি মারিতে না পারে, সেজন্য বাড়ীর ভিতরদিকের জানালা দুইটি রায় মহাশয় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করিয়া রাখিলেন। একদিন রাত্রিতে সহসা তাঁহার নিদ্রাভঙ্গ হইল। মনে পূৰ্ব্বের ন্যায় আতঙ্ক উপস্থিত হইল! “আলো জ্বলিব না, কোনওদিকে চাহিয়া দেখিব না,”— এইরূপ বার বার মনে মনে তিনি সঙ্কল্প করিলেন। কিন্তু কিছুতেই তিনি থাকিতে পারিলেন না। উঠিয়া আলো জ্বলিলেন। বাগানের দিকে জানালা খোলা ছিল। সেই জানালার ধারে দাঁড় করিলেন। দেখিলেন যে, নিম্নে একজন মানুষ দাড়াইয়া আছে। অন্ধকারে চিনিতে পারিলেন না; খাদা ভূত এবার এক অদ্ভুত বা ঐ করিল। অরন্ধর পূর্বদিন রায় মহাশয়ের বাটীতে প্রচুর পরিমাণে অন্ন-ব্যঞ্জন রন্ধন হইয়াছিল, পরদিন প্ৰাতঃকালে উঠিয়া সকলে দেখিল যে, ভূত এক হাঁড়ি ইলিস মাছ, আধ হাঁড়ি কচুশাক ও সেই পরিমাণে ভাত-দলি খাইয়া গিয়াছে। ভূতের খোয়াক, না রক্ষসের খোরাক! সেই রাত্রিতে ভয়ানক রবে পূৰ্ব্বরূপ ভূতের হাঁকে পৃথিবী কম্পিত হইল, এবার তেঁতুল গাছ ছিল না। এবার রায়মহাশয়ের বাটীর ছাদে আলিসার উপর বসিয়া ভূতে হাঁক দিল। হাঁকের পরদিন হইতে খাদা ভুতকে আর কেহ দেখিতে পাইল না। সেই রাত্রিতে রায় মহাশয় পক্ষাঘাত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হইলেন; তাহার অৰ্দ্ধ অঙ্গ একেবারে পড়িয়া গেল, তাহার চলৎশক্তি একেবারে রহিত হইয়া গেল। ডাক্তার বলিল,-“এ অবস্থায় তাঁহাকে নাড়া-চাড়া করিলে হঠাৎ মৃত্যু হইতে পারে। রায় মহাশয় সঙ্কল্প করিয়াছিলেন যে, এবার ভূতের হাঁক আসিলে তিনি অন্যস্থানে গমন করিবেন। তাহা আর হইল না। ঘোর কষ্টে রায় মহাশয় দিনযাপন করিতে লাগিলেন। আর এক বৎসর কাটিয়া গেল। পুনরায় ভাদ্র মাস আসিল। ভদ্রমাসের শেষে পুনরায় খাদা ভূতের উপদ্রব আরম্ভ হইল। গ্রামের প্রান্তভাগে একজন বিধবা সদূগোপনী বাস করিত। একদিন সন্ধ্যার পর ঘরের দাওয়া অর্থাৎ পিড়াতে বসিয়া সে রন্ধন করিতেছিল। হঠাৎ সেই স্থানে খাদা &ኃdኵAኃ দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com/f4র্জ্যািক্যনাথ রচনা সংগ্ৰহ