পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার মানসিক দৃষ্টি যাইতেছে! জীবনের নানা বিষয় চিন্তা করিয়া আমার হৃদয় কম্পিত হইতেছে। আমি তোমাদিগকে বলিতেছি যে, পাপের প্রতিফল ভুগিতেই হয়, নিশ্চয় ভুগিতে হয়, তবে দুইদিন আগে আর দুইদিন পরে।” পক্ষাঘাতের শেষ আক্রমণ দ্বারা যখন তিনি আক্রান্ত হইলেন, তখন তাঁহার জ্ঞান ছিল না! মাঝে মাঝে গুটিকত কথা বিজ বিজু করিয়া তাহার মুখ দিয়া বাহির হইতেছিল। নিকটে যাহারা ছিল, কান পাতিয়া তাহারা শুনিল। একবার তিনি বলিলেন,- “নদীকূলে কে ও বসিয়া? কি ভয়ানক মূৰ্ত্তি! যমের কিঙ্কর? উহার নাক নাই। কাদা দিয়া নাক গড়িতেছে, মুখের উপর বসাইতেছে। তাহার পর ফেলিয়া দিতেছে। এইরূপ বারবার করিতেছে। ও কি পাগল, না ভূত, না যমদূত?” কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া আবার বলিলেন,- “অতি দূরে ঊষর প্রান্তর; পার্শ্বে, বৃক্ষলতায় বসিয়া কে ও স্ত্রীলোকটি কঁদিতেছে? আহা! উহার মলিন বদন দেখিয়া বড়ই দুঃখ হয়। তুমিও কি বাছা পাপ করিয়াছিলে, তাহার প্রতিফল তুমিও কি ভোগ করিতেছ? পূৰ্ব্বে তুমি এই বাড়ীর কত্রী ছিলে? পাপের ফলে এখন তুমি অনাথিনী? তোমার হৃদয় রাত্রিদিন দগ্ধ হইতেছে? বাছা! আমি আর তোমাকে কি বুঝাইব? আমিও সেইরূপ আগুনে দগ্ধ হইতেছি। অধিক কথা নহে, আমরা যদি লোকের মনে দুঃখ না দিতাম; লোককে আমরা যদি না কাদাইতাম, তাহা হইলে আমাদের কাঁদিতে হইত না।” ক্রমে রায়মহাশয়ের গলা ঘড়ঘড় করিতে লাগিল তাঁহার মুখমণ্ডল বিকৃত হইয়া অতি ভয়ানক মূৰ্ত্তি ধারণ করিল। পক্ষাঘাত রোগে হয় নাই, তাহার শরীরের সেইদিক আতি ভয়ানকভাবে প্রসারিত ও কুঞ্চিত লাগিল। তাঁহার যন্ত্রণা ও বিকট আকৃতি দেখিয়া উপস্থিত ব্যক্তিদিগের ঘোরতর আড়ষ্ক হইল। বড়ালমহাশয় বললেন,— “মৃত্যুকালে অনেক লোকের নিকটে আমি উপস্থিত , কিন্তু এরূপ ভয়াবহ ব্যাপার কখনও আমি দর্শন করি নাই। আমি আর দেখিতে পারি। এই বলিয়া সে স্থান হইতে তিনি পলায়ন করিলেন। অল্পক্ষিণ পরে রায়ণীও সেই কথা কাঁদিতে কাদিতে ঘর হইতে পলায়ন করিলেন । গদা৷ চাকরীও ভয়ে ভীত হইয়া পলায়ন করিলেন। মৃত্যুকালে রায়মহাশয় একলা পড়িয়া রহিলেন। var V-J রায়মহাশয়ের পরলোক হইলে, রায়-গৃহিণী সুবালাকে আনিতে পাঠাইলেন। সুবালা আসিয়া দাদামহাশয়ের জন্য অনেক কাদিল । “আমাকে তোমরা সংবাদ দাও নাই কেন? আমি দাদামহাশয়কে দেখিতে পাইলাম না।” এই বলিয়া সুবালা খেদ করিতে লাগিল । “রায়মহাশয়ের হঠাৎ মৃত্যু হইয়াছে, সংবাদ দিবার সময় ছিল না,”— এই কথা বলিয়া সুবালাকে সকলে বুঝাইতে লাগিল। সুবালাকে কাছে ডাকিয়া রায়-গৃহিণী অনেক আদর করিলেন। তিনি বলিলেন,- “সুবালা! °"”* *f°"" ifGrRIlg{ °ii%3° q35 zx8! ~ www.amarboi.com ~ چه وي