পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার যাহা হইবার তাহা হইয়া গিয়াছে। একে একে সকলেই গেল। বাকী কেবল আমি আর তুমি । ভগবান তোমার মঙ্গল করুন, ইহাই আমার প্রার্থনা। তুমি কোন পাপে নাই। আমার নিশ্চয় বিশ্বাস যে, খাদা ভূত তোমার অনিষ্ট করিতে সাহস করিবে না। ভগবান তোমাকে রক্ষা করবেন।” সুবালা বলিল,- “তোমাকেও, দিদিমণি, তিনি বঁাচাইয়া রাখিবেন।” রায়ণী বলিলেন, — “বাঁচিয়া থাকিতে আমার তিলমাত্ৰ সাধ নাই। তবে, কেবল তোমার নিমিত্ত আর সাত বৎসর পৃথিবীতে থাকিতে ইচ্ছা হয়। তাহা হইলে তোমাকে এই বিষয় দিয়া যাইতে পারি। এই সম্পত্তি তোমাকে দিয়া একজন রূপবান গুণবান বরের হস্তে তোমাকে সমৰ্পণ করিয়া মানে মানে যাইতে পারিলেই আমি এখন কৃতাৰ্থ হই!” রায়-গহিণী পুনরায় বলিলেন,- “আরও কথা এই, সুবালা! এই সম্পত্তি পাছে অন্য লোকের হাতে পড়ে, সেজন্য আমার বড় ভয়! তুমি বোধ হয় শুনিয়া থাকিবে যে, রায়মহাশয়ের এক ছোট ভাই আছে, তাহার নাম বিজয়। সে কলিকাতায় থাকে। তাহার বড় অহঙ্কার। সে বড় দুষ্ট । তোমার দাদামহাশয় আমাকে বারবার বলিয়া গিয়াছেন যে, সম্পত্তি কিছুতেই যেন সে না পায়। যদি আমার বয়ঃক্রম পঞ্চাশ বৎসর পূর্ণ না হয়, যদি সম্পত্তি তোমাকে আমি উইল করিয়া দিতে না পারি, তাহা হইলে সেই দুৰ্বত্ত ইহা পাইবে।” সুবালা জিজ্ঞাসা করিল,— “তিনি বড় দুষ্ট!” রায়-গৃহিণী উত্তর করিলেন,- “সে বড় দুষ্ট! যকৃত্যু বিষয় লইতে চেষ্টা করিয়াছিল। তাহার পর খাদা ভুতীেয় উপদ্রবে। উৎপীড়িত হইয়া, তোমার না। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার প্রতি তাহার কিছুমাত্র মম। না। তবেই বুঝিয়া দেখা যে, সে কেমন নিৰ্দয়, কেমন নিষ্ঠুর!” সুবালা জিজ্ঞাসা করিল,-“তিনি-ষ্ট্ৰেখিতে কিরূপ, দিদিমণি?” রায়-গৃহিণী উত্তর করিলেন- আঁমি অনেক দিন পূৰ্ব্বে তাহাকে দেখিয়াছি। এখন বােধ হয়, বিভীষণের মত তাহার মুখ হইয়া থাকিবে । চক্ষু দুইটা জবা ফুলের মত হইয়া থাকিবে। ভগদত্তর হাতীর মত তাহার শরীর হইয়া থাকিবে। নাকটা বাঁশের মত হইয়া থাকিবে।” সুবালা বলিল,— “সৰ্ব্বনাশ! কি ভয়ঙ্কর চেহারা!” রায়-গৃহিণী বলিলেন, — হাঁ, সে পাপাত্মার নাম করিও না; তোমার ভয় হইবে।” পুনরায় বর্ষাকাল পড়িল। শ্রাবণ মাসে সুবালা কাকা-মহাশয়ের গৃহে গমন করিলেন। ক্ৰমে তিনি বড় হইতে লাগিলেন, সেইসঙ্গে খেলাধূলাও বন্ধ হইতে লাগিল। বিনয়ের সহিত আর তিনি সেরূপ খেলা করিতেন না। তবে মনে মনে দুই জনে বিলক্ষণ প্ৰণয় হইয়াছিল। সেই প্ৰণয় দিন দিন পরিবদ্ধিত হইতে লাগিল। দেখা-সাক্ষাৎ করিবার নিমিত্ত, এক স্থানে বসিয়া গল্প-গাছা করিবার নিমিত্ত, দুইজনে সৰ্ব্বদাই উৎসুক হইয়া থাকিতেন। পূৰ্ব্বের ন্যায় এখন আর ঘন ঘন দেখা হইত না। যখন দেখা হইত, তখন দুইজনে লেখা-পড়ার গল্প করিতেন। গত বৎসর রক্ষাকালীর পূজা করিয়া গ্রামের লোক শাকচুন্নির হাত হইতে পরিত্রাণ পাইয়াছিল। এ বৎসরও তাহারা রক্ষাকালীর পূজা করিল। একেবারেই গ্রামে আসিল না। গ্রামের লোকের আনন্দের আর পরিসীমা রহিল না। সকলে বলিল,— “রক্ষাকালী জাগ্রত দেবতা। ভূত-প্ৰেত সকলে তাঁহাকে ভয় করে। তাঁহার কৃপায় খাদা ভূতের হাত হইতে আমরা ty দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্য"ক "*******