পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রত্যুত্তরে রায়-গৃহিণী লিখিলেন,- “আমি মেয়েমানুষ, হতভাগিনী! আমার আবার ছবি কেন? যাহা হউক, তোমার যদি সাধ হইয়া থাকে, সে সাধ আমি পূর্ণ করিব। যদি সে লোক সম্মত হন, তাহা হইলে তুমি যখন এখানে আসিবে, সেই সময় তাহাকেও আসিতে বলিবে।” কাৰ্ত্তিক মাসে সুবালা বাড়ী ফিরিয়া আসিলেন। রায়-গৃহিণীর ছবি আঁকিবার নিমিত্ত অগ্রহায়ণ মাসে বিনয়ও সেই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। গায়ে নামাবলী ও হাতে জপের মালা দিয়া সুবালা তাঁহাকে বসাইতেন। বিনয় তাহার ছবি আঁকিতেন। প্রতিদিন এক ঘণ্টার অধিক রায়গৃহিণী বসিতে পারিতেন না। কারণ, কাসি এখনও তাঁহার ভাল হয় নাই। ক্রমেই তিনি দুৰ্ব্বল ও কৃশ হইয়া পড়িতেছিলেন। ছবি শেষ হইতে সেজন্য বিলম্ব হইতেছিল। বাহির-বাটীতে ভাল একটি ঘর বড়ালমহাশয় সাজাইয়া গুজাইয়া রাখিয়াছিলেন । সেই ঘরে বিনয় বাস করিতেছিলেন । যতক্ষণ ছবি আঁকা হইত, সুবালা ততক্ষণ সেই স্থানে উপস্থিত থাকিতেন। সেই সময় তিনজনে কথা-বাৰ্ত্ত হইত। বিনয় কত হাসির গল্প করিতেন। তাহা শুনিয়া রায়ণীও হাসিতেন, সুবালাও হাসিতেন। বিনয় ও সুবালার ভাব দেখিয়া রায়ণীর মনে সন্দেহ উপস্থিত হইল। রায়-গৃহিণী ভাবিলেন,- “সুবালা এখন আর নিতান্ত বালিকা নহে। আমি দেখিতেছি যে, ইহাদের দুইজনে প্ৰণয় হইয়াছে। তাহা ভাল নহে। যুবক ব্ৰাহ্মণ বটে। কিন্তু ইহার পরিচয় আমি জানি না। সুবালার বাপ কিরূপ ব্ৰাহ্মণ, কুলীন কি বংশজ।--তাহা আমি জানি না। ছেলেটি ভাল, ধীর, শান্ত, মিষ্টভাষী। ইহার শরীরে কোন দোষ আছে বোধ হয় না। কিন্তু তাহা হইলে কি । এখন আর খাদা ভূতের উপদ্রব নাই। ব না। সুবালার কাকাকে পত্ৰ লিখিব। যদি চিত্র অর্জনকাল ও অন্য সমািপ্প চিন্তা রায়-গৃহিণীর মুনে উদয় হইত। গুরু-মাকে সঙ্গে লইয়া বৈকাল বৈল সুবালা বাগানে বেড়াইতে যাইতেন, বিনয়ও কখন কখন সেই স্থানে যাইতেন। তিনজনে এ গাছ সে গাছ দেখিয়া বেড়াইতেন ও বেড়াইতে বেড়াইতে বিনয় নানারূপ গল্প করিতেন। সুবালা নিজে একটি ফুলের বাগান করিয়াছিলেন। বিনয় তাঁহাকে অনেক প্রকার বিলাতী ফুলের বীজ দিয়াছিলেন। সুবালা নিজ হাতে গাছগুলির গোড়া খুঁড়িয়া দিতেন, তাহাদের মূলে জলসেচন করিতেন। কোন গাছ অঙ্কুরিত হইতেছে, তিনি বড় ভালবাসিতেন। বিনয় ও সুবালাকে একসঙ্গে দেখিলে হিংসায় ধনুকধারীর বুক ফাটিয়া যাইত। ধনুকধারী মনে করিত,-“বাঁকড়া-চুলো এ উপসৰ্গটা কোথা হইতে উড়িয়া আসিয়া জুড়িয়া বসিল? আমি এখন কেহ নই। ধনুকধারী লবণ লইয়া এস, ধনুকধারী লঙ্কা লইয়া এস, ধনুকধারী আমড়া পাড়িয়া দাও, ধনুকধারী এ কাজ কর, সে কাজ কর, তখন ধনুকধারী গোলাম ছিল— এখন ধনুকধারী কেহ নয়। এখন ধনুকধারী কৰ্ম্মচারীর শ্যালকপুত্র কীটস্য কীট, পদদলিত করিবার উপযুক্ত পােত্র!” চিত্র-অঙ্কন কাৰ্য্যে নিযুক্ত শিল্পকারগণ মাথায় বড় বড় চুল রাখিয়া দেন। প্রচলিত প্ৰথা অনুসারে বিনয়ও মাথায় বড় বড় চুল রাখিয়াছিলেন। সেইজন্য ধনুকধারী দ্বারা তিনি “ঝোঁকড়া WʻqRO দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboicom"33"oro"***"o"PER*