পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইতেই অবগত ছিলেন। কুলমৰ্যাদা সম্বন্ধে দুই বংশ আদান-প্ৰদান হইতে পারে। বিনয়ের পিতা সঙ্গতিপন্ন ব্যক্তি। মায়ের মাসীর কল্যাণে সুবালা নগদ টাকা ও ভূসম্পত্তির অধিকারিণী হইবেন। তাহার পর, বিনয় পিতামাতার একমাত্র পুত্র। সুবালা সম্বন্ধে অনেক দিন হইতেই লোকে তাহার মনের ভাব বুঝিয়াছিল। এই কথা তাঁহাকে ও সুবালাকে অনেকে তামাসা করিয়াছিল। বিনয় যাহাতে সন্তোষ লাভ করেন, তাহার পিতা-মাতা নিশ্চয় তাহা করিবেন। সুবালার কাকমহাশয় মনে মনে এইরূপ চিন্তা করিয়া কথাবাৰ্ত্তা আরম্ভ করিলেন। সৌভাগ্যক্রমে বিনয়ের মাতা সেই সময় পিত্ৰালয়ে ছিলেন। প্ৰথম স্ত্রীলোকে স্ত্রীলোকে কথার সূচনা হইল। বিনয়ের মাতা সম্মত হইলেন। তাহার পর কাকমহাশয় বিনয়ের পিতার নিকট গমন করিলেন। তিনিও এ বিবাহে সম্মত হইলেন। কথা হইয়া থাকিবে, কিন্তু কেন সুবালার এখন বিবাহ হইবে না, সে সমুদয় বৃত্তান্ত কাকামিহাশয় বিনয়ের পিতাকে প্ৰদান করিলেন। কথাবাৰ্ত্তার সময় কাকা মহাশয় সুবালার পিতার নাম করিলেন। সুবালার পিতা কে, সে সম্বন্ধে অধিক পরিচয় দিতে হইল না। করে না। রায় মহাশয় সুবালার মায়ের মেসো ছিলেন, সুবালার সহিত তাঁহার অন্য কোন নিকট সম্বন্ধ ছিল না । সেজন্য বিবাহের কথাবাৰ্ত্তার সময় রায়মহাশয়ের নাম পৰ্যন্ত কেহ উল্লেখ করিল না। সুবালা যে রায়মহাশয়ের বাটীতে প্ৰতিপালিত হইয়াছেন, সুবালা রায়মহাশয়ের সম্পত্তির যে উত্তরাধিকারিণী হইবেন, এ কথার দুর্গ বিনয়ের পিতা জানিতে পারিলেন না। তিনি কেবল এইমাত্ৰ শুনিলেন যে, কন্যার মাসীর ভূসম্পত্তি আছে। কন্যা সেই সম্পত্তির অধিকারিণী হইবেন । কন্যা মায়ের থাকেন। বিনয়ের পিতা-মাতা সম্মত হইলেন। দুই বৎসর পরে, অর্থাৎ সুবালার পঞ্চদশ বৎসর পূর্ণ হইলে বিবাহ হইবে। এখন কথা স্থির হইয়া রহিল। দুই পী সত্য করিলেন । লোক-পরম্পরায় বিবাহের কথা র কানে উঠিল, বিনয়েরও কানে উঠিল। বলা বাহুল্য যে, দুইজনেই আহাদিত সুবালা ভাবিলেন, — “বিনয়কে দেখিয়া আমি কি করিয়া লজ্জা করিব। এখন আমি লজ্জা করিতে পারিব না। আমি যেন এ কথা শুনি নাই, সেইভাবে বিনয়ের সহিত কথোপকথন কিরিব।” বিনয় ভাবিলেন,- “সুবালাকে যদি কেহ এ কথা এখনও না বলে, তাহা হইলে ভাল হয়। এ কথা শুনিলে সুবালা হয় তো আর আমার সহিত ভাল করিয়া কথা কহিবে না। যাহা হউক, আমি এ বিষয়ের বিন্দুমাত্র উল্লেখ করিব না।” “বিবাহের কথা যেন আমি শুনি নাই, এইভাবে বিনয়ের সহিত আমি কথা কহিব”— সুবালা মনে মনে এইরূপ স্থির করিলেন বটে, কিন্তু কাজে তিনি তাহা করিতে পারিলেন না। স্বভাবতঃ লজ্জাশীলা স্ত্রীলোকের লজ্জা আপনা হইতে আসিয়া পড়ে। বিনয়ের সহিত তিনি কথোপকথন করিতেন বটে, কিন্তু মুখ তুলিয়া আর বড় চাহিতে পারিতেন না। এক প্রকার লজ্জিত, কুষ্ঠিত, শঙ্কিতভাবে তিনি বিনয়ের সহিত কথা কহিতেন। ক্ষয়কাস! দ্রুতবেগে রায়-গৃহিণী পীড়া বৃদ্ধি হইল না বটে, কিন্তু শুষ্ক হইয়া দেহ তাঁহার অস্থিচৰ্ম্মসার হইয়া পড়িল । প্রায় দুই বৎসর কাটিয়া গেল। এ বৎসর শ্রাবণ মাসের ২০শে রোগিণীর বয়ঃক্রম পঞ্চাশ পাপের পরিণাম। sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro wo