পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰাণ পাইয়া যুধিষ্ঠির ঘোষ আহাদে আটখানা হইয়াছিল। তৎক্ষণাৎ গীেরবিণীকে সে ঐ সকল দ্রব্য প্ৰদান করিল। গীেরবিণীর একটি গাই গরু ছিল। তুক ক্ষান্ত হইল না। বুধবার দিন প্ৰাতঃকালে সকলে দেখিল যে, গ্রামের কোন পথে কতকগুলি ছেড়া চুল, কোন পথে সিন্দুর, কোন পথে কণাকড়ি পড়িয়া আছে। দুৰ্ব্বত্ত যাদুকর মঙ্গলবার রাত্ৰিতে এইরূপ গুণ করিয়াছিল। গ্রামের লোক অতি সাবধানে সে সমুদয় তুক্‌ পোড়াইয়া ফেলিল। এখানে পা ফেলিয়া, সেখানে পা ফেলিয়া, অতি সন্তৰ্পণে সকলে পথ চলিতে লাগিল। ফলকথা, এ গ্রামে বাস করা লোকের পক্ষে ভার হইয়া উঠিল। যাহারা এ সৰ্ব্বনাশ করিতে প্ৰবৃত্ত হইয়াছেন, তাঁহারা বড়লোক। ভয়ে কোন কথা তাঁহাদিগকে বলিতে পারিল না। কি কুক্ষণে যে এ গ্রামে রায়মহাশয় ও তাঁহার গৃহিণী পদার্পণ করিয়াছিলেন, সকলে তাহাই ভাবিতে লাগিল। সকলে আরও বলিল যে, সুবালা দিদি এখানে থাকিলে আমাদের উপর এরূপ অত্যাচার হইত না। নিশ্চয় তিনি আমাদের দুঃখ দূর করিতেন। কত আর সতর্ক হইয়া লোক পথ চলিতে পারে? একদিন না একদিন কেহ না কেহ গুণের উপর পা ফেলিয়া বসিবে, অথবা গুণকে ডিঙ্গাইয়া যাইবে । সেই আশঙ্কায় লোক অস্থির হইয়া পড়িল। যাহাদের উপায় ছিল, তাহারা আপন আপন পুত্ৰ-কন্যাদিগকে মাতুলালয়ে অথবা অন্য আত্মীয়স্বজনের নিকট পাঠাইয়া দিল। কিন্তু যাহাদের সে উপায় নাই, তাহারা করে কি? এই দুঃসময়ের গীেরবিণী তাহাদিগকে রক্ষা করিল। গীেরবিণী বলিল যে, যেমন তুকুতাক গুণী-জ্ঞান হউক না কেন তাহারা নেকুড়ার পুঁটুলি অর্থাৎ মাদুলি গলায় পরিধান করিয়া সে তুক মাড়াইলে অথবা ডিঙ্গাইলে কিছুমাত্র অনিষ্ট হইবে না। তাহা শুনিয়া র প্রাণ অনেকটা সুস্থির হইল। প্ৰাণ আগে না পয়সা আগে। অতি দীন দুঃখীও এক মাদুলির জন্য পাঁচটি পয়সা, পাঁচ সের ধান্য, পাঁচ গণ্ডা পান, পাঁচ গণ্ডী সুপারি ওষ্ট্রেষ্ট/গণ্ডা বিচালির আঁটি জানান দিতে লাগিল। পয়সা, ধান প্রভৃতির কথা যাউক, .ে র দাঁত পড়িয়া যায় নাই। অনায়াসে সে পান চিবাইতে পারিত। এক্ষণে কু খাইয়া সৰ্ব্বদাই সে মুখ রাঙা করিয়া রাখিত । একগাল পান চিবাইতে চিবাইতে যখন সে বিনামূল্যে লোকদিগকে ঔষধ বিতরণ করিত, তখন তাহার সেই রক্তবর্ণেরঞ্জিত মুখ দেখিয়া লোকের মন ভক্তিরসে ভিজিয়া যাইত। রাত্রিতে উঠিয়া নিকটস্থ অন্যান্য গ্রামে গীেরবিণী ঔষধ তুলিতে যাইত। সেই সময় হইতে সে গ্রামেও তুক আরম্ভ হইত। কাজেই অন্যান্য গ্রামের লোকও আসিয়া গীেরবিনীর নিকট হইতে ঔষধ গ্ৰহণ করিত। অন্যান্য গ্রামেরও এই সুযোগে পুরুষ-চিকিৎসক ও স্ত্রী-চিকিৎসকের আবির্ভাব হইল। গীেরবিণীর ন্যায় তাহারাও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করিতে লাগিল। কিন্তু ততদূর পসারপ্রতিপত্তি আর কাহারও হইল না। গ্রামে মাতুঠাকুরাণী অর্থাৎ মাতঙ্গিনী নামে এক বিধবা ব্ৰাহ্মণী বাস করেন। তাঁহার কয়েক বিঘা। ভূমি আছে। ভাগে দিয়া তাহা হইতে যে ধান্য লাভ করেন, তাহাতে সুখে-স্বচ্ছন্দে তাঁহার দিন কাটিয়া যায়। সেজন্য মৃত্যুকে তিনি বড় ভয় করেন। তামাসা করিয়া কেহ তাঁহাকে “মর” বলিলে আর রক্ষা থাকে না । গালি দিয়া সে লোকের তিনি প্ৰাণান্ত করেন। একদিন প্ৰাতঃকালে তিনি উঠিয়া দেখিলেন যে, তাহার দ্বারে একটি শুষ্ক শুভ্ৰবর্ণের গরুর মাথা পড়িয়া রহিয়াছে। সৰ্ব্বনাশ! মাথায় আবার সিন্দুর! গ্রামের লোক দলে দলে আসিয়া তাঁহার দ্বারে দাঁড়াইল । কিন্তু এ যে কিরূপ গুণ, কেহ তাহা ভাল বুঝিতে পারিল না। অবশেষে ধনুকধারী আসিয়া ইহার প্রকৃত অৰ্থ ব্যাখ্যা করিয়া দিল। ধনুকধারী বলিল, “এই যে তুক্‌টি তােমরা দেখিতেছি, এ

              • '16'afraig -iibg gis so! - www.amarboi.com وهما