পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিনিয়াছি। কেবল লবণ দিয়া ইহারা ভাত খাইবে।” সুবালা জিজ্ঞাসা করিলেন, — “তাহার পর কি হইবে?” সুগ্ৰীব উত্তর করিল,- “ভগবান যাহা করিবেন, তাহাই হইবে।” সুবালা আর কোন কথা বলিলেন না। নিজের হাতের একগাছি বালা খুলিয়া সুগ্ৰীবকে দিলেন। কিন্তু সে কিছুতেই লইতে চাহিল না। সে বলিল,— “তুমি ছেলেমানুষ। বাপ রে! তোমার বালা কি আমরা লইতে পারি। তাহা কখনই হইবে না।” সুবালা তাহার কথা শুনিলেন। না। বালা ফেলিয়া তিনি চলিয়া গেলেন । কিন্তু বাড়ী গিয়া সুবালার বড় ভয় হইল। রায়-গৃহিণী তাঁহাকে ভৎসনা করিবেন, সেই ভয়ে তাহার সহিত তিনি সাক্ষাৎ করিলেন না। সন্ধ্যার পর রায়-গৃহিণী তাঁহাকে ডাকিতে পাঠাইলেন। কঁাপিতে কঁাপিতে সুবালা তাঁহার নিকট গিয়া উপস্থিত হইলেন। কিছু না বলিয়া তিনি রায়-গৃহিণীর গলা জড়াইয়া ধরিলেন। অনেক আদর করিয়া সুবালা বলিলেন, — “দিদিমণি! আজি আমি এক কাজ করিয়াছি। তাহার জন্য তুমি বোধ হয় আমাকে অতিশয় বকিবে। কিন্তু আমাকে ক্ষমা করিতে হইবে। বল যে, তোমাকে ক্ষমা করিলাম। তবে তোমার আমি গলা ছাড়িয়া দিব। তাহা না বলিলে তোমার গলা আমি ছাড়িয়া দিব না।” রায়-গৃহিণী ভাল মানুষ ছিলেন না। কিন্তু পৃথিবীতে মানুষ যতই দােষী হউক না কেন, তাহার একদিকে না একদিকে একটু গুণ থাকে। রুয়-গৃহিণী সুবালাকে প্রাণ অপেক্ষা ভালবাসিতেন। হাসিতে হাসিতে তিনি উত্তর “তুমি যে মন্দ কাজ করিয়াছ, এ কথা কখনই আমার বিশ্বাস হয় না। যে জন্যমে একটিও কটু বাক্য বলে নাই, জনমে যে কাহারও মনে কষ্ট প্রদান করে নাই, তাহাকৃেত্যুবীর আমি ক্ষমা করিব কি? কি হইয়াছে দিদি। বল, নিশ্চয় আমি তোমাকে ক্ষমা করিলামন্ত বালা অঙ্গীকার সত্ত্বেও রায়-গৃহিণী গভীরভাবে চুপ করিয়া রহিলেন, কোন উত্তর করিলেন না। এমন সময় একজন দাসী আসিয়া রায়-গৃহিণীকে বলিল,— “সুবালা দিদি কোথায় বালা ফেলিয়া আসিয়াছিলেন। সুগ্ৰীবের স্ত্রী মায়া তাহা দিতে আসিয়াছে।” “তুমি তবে বালা ফিরিয়া লইবে!”— এই কথা বলিয়া সুবালা কাঁদিতে লাগিলেন। সুবালার চক্ষু জল দেখিয়া রায়-গৃহিণী আর থকিতে পারিলেন না। তিনি বলিলেন,— “না দিদি! আমি বালা ফিরিয়া লইব না। আর যদি লই, তাহা হইলে মূল্য দিয়া লইব । সুগ্ৰীব বালা লইয়া কি করিবে? আমি তাহার নিকট কিনিয়া লইব ।” এই কথা বলিয়া তিনি বড়ালমহাশয়কে ডাকিতে পাঠাইলেন। বড়ালমহাশয় আসিলে রায়গৃহিণী তাঁহাকে বলিলেন, — “সুগ্ৰীব চাঙ্গ পীড়িত হইয়াছে। তাহাদের বড় কষ্ট হইয়াছে। আপনার হাতের বালা খুলিয়া সুবালা তাহাকে দিয়াছিল। মায়া এখন সেই বালা ফিরিয়া দিতে আসিয়াছে। মূল্য দিয়া তাহার নিকট হইতে বালা আপনি ফিরিয়া লউন।” এই কথা বলিয়া রায়-গৃহিণী বড়ালমহাশয়কে চক্ষু টিপিয়া ইসারা করিলেন। তাহার অর্থ এই যে, যৎসামান্য কিছু দিয়া তাহাকে বিদায় করুন। বালার সম্পূর্ণ মূল্য তাঁহাকে দিবেন না। সুবালা তবুও রায়-গৃহিণীর গলা ছাড়িয়া দিলেন না। আরও অধিক স্নেহের সহিত তাঁহাকে আদর করিতে লাগিলেন। “আমার লক্ষ্মী দিদিমণি!” এই কথা বলিয়া তিনি তাঁহার বক্ষঃস্থলে gajgfjq griljzjz webrS uskla »ižo 3333| a www.amarboi.comio