পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আপনার মস্তক রাখিলেন । রায়-গৃহিণী বলিলেন,- “আবার কি? যাহা বলিলাম, তাহা তো শুনিলে। এখন আমার গলা ছাড়িয়া দাও।” সুবালা উত্তর করিলেন, — “না দিদিমণি! আমার একটি নিবেদন আছে। সে কথাটিও তুমি বড়ালমহাশয়কে বলিয়া দাও, তবে তোমার গলা ছাড়িয়া দিব।” রায়-গৃহিণী বলিলেন, — “দেখ সুবালা! এই সমুদয় বিষয় তোমার। তুমি যাহা বলিবে, তাহাই হইবে। পৃথিবীতে আমার কোন সুখ নাই। তুমিই আমার একমাত্র সুখ। আর কি চাই, दब्न?" সুবালা উত্তর করিলেন,- “দেখ দিদিমণি! সুগ্ৰীবের শিশুপুত্রের কথা তোমাকে এইমাত্ৰ বলিলাম। দুইদিন সে উপবাসী ছিল। ক্ষুধায় সে চীৎকার করিতেছিল। সেই সময় আমি পথ দিয়া যাইতেছিলাম। তাঁহাদের দুঃখের কাহিনী শুনিয়া আমার বুক ফাটিয়া যাইতে লাগিল। আহা! যাহারা অতি শিশু, পৃথিবীর কথা তাহারা কি জানে? ক্ষুধা পাইলেই পিতামাতার নিকট শিশু ক্ৰন্দন করে। মনে করে, মা আমাকে আজ খাইতে দিতেছে না কেন? এইরূপ শিশু গ্রামে উপবাস করিয়া থাকিবে, আর আমি পাঁচ ব্যঞ্জন দিয়া ভাত খাইব, তাহা হইবে না। দিদিমণি! সে ভাত আমার পক্ষে বিষ তুল্য হইবে। যোড়হাতে তোমার নিকট আমি প্রার্থনা করি, দিদিমণি! বড়ালমহাশয়কে তুমি আজ্ঞা কর, আজ হইতে এই গ্রামে কেহ যেন উপবাসী না থাকে।” এই কথা বলিতে বলিতে সুবালা রায়-গৃহিণীর গলা ছাড়িয়া দিলেন। তাঁহার সম্মুখে তিনি লাগিল। জলে পূর্ণ হইয়া তাঁহার সেই মৃদু নয়ন দুইটি উজ্জ্বল হইল। আহা স্বর্গের শোভা যেন সেই চক্ষু দুইটিতে আবির্ভূত হইল। রায় মন যতই নিষ্ঠুর হউক না কেন, সে অলৌকিক ভাব দেখিয়া তাহার চিত্ত হইল। বড়ালমহাশয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি বলিলেল,— “বড়ালমহাশয়! যাহা বলিতেছে, তাহা আপনি করিবেন। আপনি দেখিবেন, যেন আজ হইতে এ গ্রামে কৈহ উপবাসী না থাকে।” কিন্তু নিজের স্বভাব। তিনি একেবারে পরিত্যাগ করিতে পারিলেন না। তিনি পুনরায় বড়ালমহাশয়ের প্রতি চক্ষু টিপিয়া ইসারা করিলেন। তাহার অর্থ এই যে, “সুবালাকে এখন ভুলাইবার নিমিত্ত আমি এইরূপ আজ্ঞা করিতেছি, কাজে আপনি কিছু করিবেন না।” কিন্তু সুবালা ছাড়িবার পাত্রী ছিলেন না। রায়-গৃহিণী যতই ইঙ্গিত করুন না কেন, তাঁহার সে ইঙ্গিত বিফল হইল। সুবালা আঁহার সে আজ্ঞা কাৰ্য্যে পরিণত করিলেন। বড়ালমহাশয় মন্দ লোক ছিলেন না। তিনি সুবালার পক্ষে হইলেন। বালার সম্পূর্ণ মূল্য সুগ্ৰীবকে প্ৰদান করা হইয়াছিল কি না, সুবালা তাহা জানেন না। কিন্তু সেইদিন হইতে তাহার দুঃখ দূর হইল। কিন্তু সেইদিন হইতে তাহারা উদর পূর্ণ করিয়া খাইতে পাইল। সুগ্ৰীবের চিকিৎসাও হইল। অল্পদিন পরে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করিয়া পুনরায় সে কাজকৰ্ম্ম করিতে সমর্থ হইল । গ্রামে পাছে কেহ উপবাসী থাকে, সে সম্বন্ধে সুবালা সৰ্ব্বদা খরতর দৃষ্টি রাখিতেন। গত কয় বৎসর যথাসময়ে ভালরূপে বৃষ্টি হয় নাই। সেজন্য ধানও ভালরূপ জন্মে নাই। তাহার পর নদীর বানে বালি পড়িয়া অনেকের ভূমি নষ্ট হইয়া গিয়াছিল। গ্রামের লোকের সেজন্য বড় কষ্ট হইয়াছিল। সুবালা যথাসাধ্য সকলের কষ্ট দূর করিতে লাগিলেন; অন্ততঃ অন্ন বিনা কাহাকেও ጭ]gጓg ጭቬ85ijw sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro re