পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমস্ত রাত্রি ধনুকধারীর ভাব-ভঙ্গী ও কথা চিন্তা করিতে লাগিলেন। সমস্ত রাত্রি তাঁহার নিদ্রা হইল না । প্ৰাতঃকালে উঠিয়াও সুবালা সেই চিন্তা করিতে লাগিলেন,- “কাহাকে জিজ্ঞাসা করি? বড়ালমহাশয়কে জিজ্ঞাসা করিতে পারি না। ধনুকধারী তাঁহার আত্মীয়। কাহার সহিত পরামর্শ করি? কাকা মহাশয়কেও বলিতে পারি না। এ কথা শুনিলেই তিনি হুলস্থল করিবেন, ধনুকধারীকে তৎক্ষণাৎ দূর করিয়া দিবেন। যদি সে সুরাপান পরিত্যাগ না করে, তাহা হইলে পরে তাহাকে তাড়াইতে হইবে। কিন্ত। আপাততঃ তাহার মন্দ করিতে আমি ইচ্ছা করি না । উন্মত্ত অবস্থায় সে হয় তো প্ৰলাপ করিয়াছে; আমাকে সে যাহা বলিয়াছে, তাহা পাগলের কথা ব্যতীত আর কিছুই নহে। যাহা হউক, এ সম্পত্তি যদি প্রকৃত আমার না হয়, অথবা ইহার ভিতর যদি কোনরূপ। জুয়াচুরি থাকে, তাহা হইলে, এ বিষয় আমি লইব না। যাহার বিষয়, তাহাকে ফিরাইয়া দিব। কিন্তু কাকামহাশয়কে এ কথা বলিতে পারি না। তিনি আমার কথায় কৰ্ণপাত করিবেন না। কাহাকে জিজ্ঞাসা করি? কাহার সহিত পরামর্শ করি?” অনেক ভাবিয়া-চিন্তিয়া, লজ্জা-সরমে জলাঞ্জলি দিয়া, বিনয়কে তিনি পত্র লিখিলেন, — “বিশেষ একটা কথা আছে। একদিনের জন্য যদি তুমি এখানে আসিতে পাের, তাহা হইলে আমার বড় উপকার হয়।” বিনয়ের ঠিকানা তিনি জানিতেন না। তাঁহার পিতার নাম পৰ্যন্ত সুবালা জানিতেন না। বিনয়ের মাতুলালয়ে সেই চিঠি পাঠাইলেন। সৌভাগ্যক্রমে বিনয় সে চিঠি পাইলেন। দুইদিন :::::$ যথারীতি সুবালা তখন বাগানে গি কোন ফুলগাছটিতে ফুল ফুটিয়াছে, বড় ভালবাসিতেন। এদিক ওদিক গাছগুলি তিনি দেখিতেছিলেন। নিকটে দুইটি কাঠবিড়াল একবার এ গাছে পুনরায় তাহা হইতে নামিয়া দ্রুতবেগে অন্য গাছে উঠিতেছিল। চারি পাঁচটি নীলকণ্ঠ পক্ষী ফুলগাছের মূলে কীট-পতঙ্গের অনুসন্ধান করিতেছিল। ছাদের আলিসা হইতে একঝাক গোলা পায়রা নামিয়া সুবালার চারিদিকে বিচরণ করিতেছিল। বিনয় সেই স্থানে গমন করিলেন। সুবালা এখন অতি সলজ্জভাবে বিনয়ের সহিত কথোপকথন করিতেন। প্ৰথম, ফুলগাছ সম্বন্ধে তাঁহাদের নানারূপ কথাবাৰ্ত্ত হইল। তাহার পর বিনয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সুবালা! আমাকে তুমি কি কথা বলিবে?” ধনুকধারী যাহা যাহা বলিয়াছিল, সুবালা আদ্যোপােন্ত তাহা বৰ্ণনা করিলেন। সুবালাকে সে বিবাহ করিতে চাহিয়াছিল, এই কথা শুনিয়া বিনয় হাে হাে করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। কিন্তু বড়ালমহাশয়ের নামে সে যেভাবে হাসিয়াছিল ও সুবালাকে সম্পত্তি সম্বন্ধে সে ইঙ্গিতে যাহা বলিয়াছিল, যখন তাহা তিনি শুনিলেন, তখন তিনি গম্ভীরভাবে নীরব হইয়া রহিলেন। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বিনয় বলিলেন,— “জুয়াচুরি আছে, তুমি সেই সন্দেহ করিতেছ?” সুবালা উত্তর করিলেন,- “হাঁ, আমি যতই ভাবিতেছি, ততই আমার বিশ্বাস হইতেছে যে, ইহার ভিতর কোনরূপ প্রতারণা আছে। সে প্রতারণা কি, তাহা আমি জানিতে ইচ্ছা করি।” এতক্ষণ দাঁড়াইয়া কথা হইতেছিল। নিকটে একটি শুষ্ক বৃক্ষ পড়িয়াছিল। সুবালা সেই bo afraig -iibg gis so! - www.amarboi.comf'37*******