পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার পর সুবালার দিকে দৃষ্টি করিয়া বড়ালমহাশয় পুনরায় বলিলেন,- “সুবালা দিদি! বৃথা রোদন করিও না। তোমার দিদিমণির প্রাণরক্ষা করিতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছিলাম। তাঁহার সেবা-শুশ্ৰষা সম্বন্ধেও কিছুমাত্র ক্রটি হয় নাই। সকলেই আমরা প্ৰাণপণে তাহার সেবা করিয়াছিলাম। কয়দিন তাঁহাকে বরফে রাখিতে হইয়াছিল সত্য, কিন্তু নিরুপায় হইয়া আমাদিগকে এ কাজ করিতে হইয়াছিল।” বিনয় বলিলেন,- “তাঁহাতে আর দোষ কি? বশিষ্ঠ মুনি মহারাজ দশরথের মৃতদেহকে কিরূপে রাখিয়াছিলেন, তাহা একবার স্মরণ করিয়া দেখ।” সুবালা একটু স্থির হইলে, বড়ালমহাশয় পুনরায় বলিলেন,- “এ সমুদয় কথা আমার বোধ হয় কিছুতেই প্ৰকাশ হইত না। ডাক্তারের উপদেশে সমুদয় কাৰ্য হইয়াছিল। তিনি প্ৰকাশ করবেন। না। ভয় কেবল ধনুকধারীকে। আমি বিলক্ষণ জানি যে, সে ভাল লোক নহে। কিন্তু ধনুকধারীও এ কাৰ্য্যে সম্পূর্ণ লিপ্ত ছিল। আদালতে দণ্ডের ভয়ে সেও বােধ হয় এ কথা প্ৰকাশ করিবে না। উকীল দুইজন কখনও রায়-গৃহিণীকে দর্শন করেন নাই। তাঁহারা কিছু বুঝিতে পারেন নাই। বাকী আমরা দুইজন। তোমরা যদি আমাদিগকে উৎপীড়িত না করিতে, তাহা হইলে আমরা কখনও এ সম্বন্ধে একটিও কথা মুখ দিয়া বাহির করিতাম না। সকল বিবরণ এক্ষণে শ্রবণ করিলে; কিন্তু তাঁহাতে তোমাদের কি লাভ হইল, তাহা আমি বুঝিতে পারি না। এক্ষণে আমার অনুরোধ এই যে, এ কথা আর কেহ যেন না জানিতে পারে। সুবালা দিদি সম্পত্তির অধিকারিণী হইয়াছেন। অগ্রহায়ণ মাস আসিলে তুমিও ইহার হইবে। সে সম্বন্ধেও রায়-গৃহিণী আমাকে বার বার সত্যে আবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। নিকট কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি যে, তােমরা দুইজনে সুখে-স্বচ্ছন্দে এই সম্পূঞ্জভোগ করতে থাক। বিনয়বাবু! এই উইলে তোমার সম্পূর্ণ স্বাৰ্থ রহিয়াছে। দেখিও, যেন আর অধিক প্ৰকাশ হয় না।” টাকা দিবার নিমিত্ত রায়মহাশয় করিয়াছিলেন। যে রাত্রিতে কালা-বাবার নাসিক ছেদন হয়, সেই রাত্রিতে রাজাবাবুও আমাকে এক হাজার টাকা দিবেন বলিয়াছিলেন। অন্ততঃ এক হাজার টাকা মূল্যের একখানি সোনার ইট দিতে তিনি প্রতিশ্রুত হইয়াছিলেন।” আশ্চৰ্য্য হইয়া কিছু উচ্চৈঃস্বরে বিনয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সোনার ইট! সে আবার কি?” আর চুপি চুপি কথা না কহিয়া, বড়ালমহাশয়ও সহজ স্বরে উত্তর করিলেন,- “রাজাবাবু সকল বিষয়ে বুদ্ধিমান লোক ছিলেন। কিন্তু টাকা-কড়ি সম্বন্ধে তাঁহার ভাব অনেকটা সেকালের লোকের ন্যায় ছিল। একবার তাঁহার অনেকগুলি মূল্যবান নোট ও খানকয়েক কোম্পানীর কাগজ উইপোকায় নষ্ট করিয়াছিল। সেই অবধি তিনি নোট অথবা কোম্পানীর কাগজ ক্রিয় করিতেন না। লম্বা লম্বা ছোট সোনার ইট গড়াইয়া তিনি রাখিয়া দিতেন। চৌকোণা কাষ্ঠখণ্ড দেখিয়াছ? ইটগুলির আকৃতি ঠিক সেইরূপ ছিল। অথবা কাপড় কাচা বিলাতি সাবান—যাহাকে বার-সোপ বলে, ইটগুলি সেইরূপ ছিল; তবে তাহা অপেক্ষা অনেক ছোট ছিল। এইরূপ অনেক টাকার ইট তিনি প্ৰস্তুত করিয়াছিলেন। হাজার টাকার সেইরূপ একখানি ইট তিনি আমাকে দিবেন। বলিয়াছিলেন।” বিনয় জিজ্ঞাসা করিলেন,- “যখন এ বাটী পরিত্যাগ করিয়া তিনি বিদেশে গমন করিলেন, তখন সেই ইট তিনি সঙ্গে লইয়া গিয়াছিলেন?” ԳoԵr fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**