পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুণ্ডৱীকের এইরূপ অনেক কীৰ্ত্তি আছে। সেসব কথা বর্ণনা করিতে গেলে একখানি পুস্তক হইয়া পড়ে। তাহার তিন পুত্র ছিল। জ্যেষ্ঠপুত্রকে ঘরে পড়াইবার নিমিত্ত একজন শিক্ষক ছিলেন। এক বৎসর পুত্র পরীক্ষায় ভালরূপ উত্তীর্ণ হইয়াছিল। শিক্ষক কোনরূপ পুরস্কার প্রার্থনা করেন নাই, প্রত্যাশাও করেন নাই; কিন্তু মনের আনন্দে পুণ্ডরীক পুরস্কারস্বরূপ একটি আংটি দিলেন; বলিলেন যে,- “ইহা আসল হীরার আংটি ইহার মূল্য একশত টাকা।” কিছুদিন পরে শিক্ষকের টাকার প্রয়োজন হইল। পুণ্ডরীকের কথার উপর নির্ভর করিয়া সেই অঙ্গুরী। তিনি কোন লোককে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রয় করিলেন। কিছুদিন পরে ক্রেতার মনে সন্দেহ হইল। আংটি যাচাই করিবার নিমিত্ত তিনি বাজারে গমন করিলেন। যে দোকান হইতে পুণ্ডৱীক অঙ্গুরী ক্রিয় করিয়াছিলেন, দৈবক্রমে তিনি সেই দোকানে গমন করিলেন। দোকানদার বলিল যে,- 'এ অঙ্গুরীয় আমিই এক ব্ৰাহ্মণকে বিক্রয় করিয়াছিলাম। ইহা প্রকৃত হীরক নহে, ইহা কাচ। আড়াই টাকা মূল্যে আমি ব্ৰাহ্মণকে বিক্রয় করিয়াছিলাম। শিক্ষকের নিকট ক্রেতা টাকা ফিরিয়া চাহিলেন। শিক্ষক টাকা খরচ করিয়া ফেলিয়াছেন, ফিরিয়া দিতে পারিলেন না। জুয়াচুরির অভিযোগ উপস্থিত করিয়া ক্রেতা শিক্ষকের নামে আদালতে নালিশ করিলেন। কয়দিন হাজতে বাস করিয়া, অনেক টাকা খরচ করিয়া, বহু কষ্ট শিক্ষক সে বিপদ হইতে পরিত্রাণ পাইলেন; কিন্তু মোকদ্দমার খরচের নিমিত্ত পিতা-পিতামহের যাহা কিছু ভূমি-সম্পত্তি ছিল, সে সমুদয় তিনি বিক্রয় করিতে বাধ্য হইলেন। গরীব শিক্ষক সৰ্ব্বস্বাঢ়ন্ত হইলেন।” রূপ কীৰ্ত্তি করিয়াছিলেন। এত রৌপ্যনিৰ্ম্মিত দানসামগ্ৰী তিনি দিয়াছিলেন যে, কি বরযাত্রী, কি কন্যাযাত্রী, সকলেই আশ্চৰ্য্যান্বিত হইয়াছিল। সকলেই বলিল যে, রাজারাজড়াও এরূপ দানসামগ্ৰী দিতে পারে না । পুণ্ডরীকের মানসন্ত্রম যার-পর-নাই বৃদ্ধি হইল। কিন্তু সে দুইদিনের জন্য। তাঁহার জামাতার পিতা দুই-একটি বাসন হাতে করিয়াই জানিতে পারিলেন যে, সে রূপার বাসন নহে। তাহার পর পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন যে, দানসামগ্ৰী বার আনা কলাই করা তাম্রনিৰ্ম্মিত বাসন। তিনি ভদ্রলোক, এ কথা লইয়া আর গোলমাল করিলেন না। নূতন বৈবাহিকের গুণ তিনি ঢাকিয়া লইলেন। লোকের নিকট তিনি বলিলেন যে,~— ‘ভট্টাচাৰ্য মহাশয় ব্ৰাহ্মণপণ্ডিত লোক, বাসন-বিক্রেতা তাঁহাকে ঠকাইয়া রূপার বাসনে পরিবৰ্ত্তে কলাই করা তামার বাসন দিয়াছে।” কিন্তু বন্ধুদিগের নিকট তিনি অপেক্ষ করিয়া বলিলেন,-ভট্টাচাৰ্য মহাশয়ের নিকট আমি এত রূপার বাসন প্রার্থনা করি নাই। তবে মিছামিছি কেন তিনি এরূপ প্ৰবঞ্চনা করিয়াছে? ইহার পরিবৰ্ত্তে যদি তিনি পিতল-কাসার বাসন দিতেন, তাহা হইলে আমার কাজে লাগিতা। কলাই করা তামার বাসন লইয়া আমি কি করিব? একটু চুপ করিয়া বিনয় পুনরায় বলিতে লাগিলেন— “স্পষ্টভাবে তিনি কখনও কাহাকেও প্ৰবঞ্চনা করিয়াছিলেন কি না, তাহা আমি জানি না। তবে একজন গোয়ালাকে তিনি একবার অতি সামান্য বিষয়ে ফাঁসি দিয়াছিলেন। গোয়ালা ঘোল বেচিতে আসিয়াছিল। তাহার নিকট ԳՀՆ afraig -iibg gis so - www.amarboi.comf'37*********