পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“যেমন করিয়া পারি, খরগোস-ছানাটি আমি লইব”—মনে মনে তিনি এইরূপ সঙ্কল্প করিলেন । বালক তাহার মনের ভাব বুঝিয়া খরগোস-ছােনাটি লুকাইয়া রাখিল। পরদিন প্ৰাতঃকালে পুণ্ডরীক চাদর লইয়া চলিয়া গেলেন। বালক মনে করিল যে, তিনি কলিকাতায় প্রতি গমন করিলেন। তখন সে লুক্কায়িত স্থান হইতে খরগোস-ছানাটিকে বাহির করিয়া কচি কচি পাতা তাহাকে খাইতে দিল। তাহার পর বুকে লইয়া তাহাকে আদর করিতে লাগিল। এমন সময় সহসা পুণ্ডৱীক আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বালকের নিকট হইতে বলপূৰ্ব্বক তিনি খরগোসছানাটি কাড়িয়া লইলেন। বালক তাহার পায়ে পড়িয়া উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে লাগিল,- “ও জ্যোঠামহাশয়! আমার খরগোসটি লাইবেন না। ও জ্যোঠামহাশয়! বড় কষ্টে আমি ইহাকে ধরিয়াছি। এই দেখুন, কাঁটা লাগিয়া আমার হাত কত ছড়িয়া গিয়াছে। এই দেখুন, আমার হাতে এখনও ঘা রহিয়াছে। ছানাটি ধরিতে আমার কাপড় ছিড়িয়া গিয়াছিল, বাবা তাহার জন্য আমাকে কত মারিয়াছিলেন। আপনার পায়ে পড়ি, জ্যোঠামহাশয়! আমার খরগোস-ছােনাটি আপনি লইয়া যাইবেন না।’ এইরূপ খেদ করিয়া কাঁদিতে কঁদিতে বালক পুণ্ডৱীকের পায়ে আছাড়ি-পিছাড়ি খাইতে লাগিল। তাঁহার পা দুই হাতে ধরিয়া চক্ষুর জলে ভাসাইয়া দিল। কিন্তু পুণ্ডৱীকের কিছুমাত্র দয়া হইল না। বালকের পিতা নিকটে দাড়াইয়াছিলেন। শিশুপুত্রের মৰ্ম্মভেদী কাতরোক্তি শুনিয়া তাহার বুক ফাটিয়া যাইতে লাগিল। কিন্তু জ্যেষ্ঠ ধনবান, তিনি গরীব। ভয়ে তিনি কিছু বলিতে পারিলেন না। বালকের মাতা ঘোমটা দিয়া সেই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। মাটিতে পড়িয়া ধূলায় ধূসরিত হুইয়া শিশুপুত্ৰ গড়াগড়ি দিতেছিল। তাড়াতাড়ি পুত্রকে তিনি কোলে লইলেন। ম &স্থলে মস্তক রাখিয়া বালক নীরবে: কঁদিতে লাগিল। মাতার দুই চক্ষু দিয়া অশ্রুধার্যঞ্জক্কুহিঁত হইতে লাগিল। দুইজনের চক্ষু-জলে কছুৰ্ম্মফ্ৰ’দয়া হইল না। নিজের পুত্রের নিমিত্ত শশকয়া গ্নেতুলন।” SK *P, *r** কুঁৱৰ্লন না। বালক যেরূপ কঁদিতেছিল, যুঁপিয়া ফুপিয়া তিনিও সেইরূপ কঁদিতে লাগিলেন, আঁর আঁচল দিয়া ক্রমাগত চক্ষু মুছিতে লাগিলেন। তাহার কান্না দেখিয়া বিনয়ও চক্ষুর জল নিবারণ করিতে পারিলেন না। তাঁহার নেত্রদ্বয় ছলছল করিতে লাগিল। দুই-একটি অশ্রুবিন্দু তীহার চক্ষু হইতে ভূতলে পতিত হইল। বিনয় বলিলেন,-“সুবালা কঁদিও না। যে স্থানে এই নৃশংস ব্যাপার সংঘটিত হয়, আমি তখন সেই স্থানে উপস্থিত ছিলাম। আমি তখন বালক ছিলাম, সেই বালকের সহিত অনেক কাঁদিয়াছিলাম। সে নিষ্ঠুর ব্যাপার দেখিয়া পাড়ার লোক সকলেই কঁদিয়াছিল। যাহা হউক, সে বালকের দুঃখ নিবারণ করিতে আমি সমর্থ হইয়াছিলাম। কলিকাতায় প্রত্যাগমন করিয়া পিতাকে আমি সকল কথা বলিলাম। আমার বাবা সেই বালককে চমৎকার একজোড়া বিলাতি সাদা খরগোস কিনিয়া দিলেন, তাহা পাইয়া বালকের আর আনন্দের পরিসীমা রহিল না। এত কাণ্ড করিয়া শশক-শাবক আনিয়া পুণ্ডৱীক নিজের পুত্রকে দিলেন বটে, কিন্তু তাহা ভোগ হইল না। তিনদিন পরে ছানাটি মরিয়া গেল।” ԳՀԵr află cios (gs se - www.amarboicom**