পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণকারকে আমি আজ্ঞা করিয়াছিলাম। গিনি সোনার মূল্যও আমি তাহাকে দিয়াছি। স্বর্ণকার যদি কোনরূপ প্ৰবঞ্চনা করিয়া থাকে, তাহা হইলে সে দোষ আমার নাহে।” পুণ্ডরীক উত্তর করিলেন- ‘দোষ কাহার, তাহা আমি জানি না, জানিতে ইচ্ছাও করি না । আমি এইমাত্র জানি যে, যদি স্বর্ণ রৌপ্যের ব্যবসা না করিতাম, যদি স্বর্ণ-রৌপ্য পরীক্ষা করিতে না জানিতাম, তাহা হইলে আজ আপনি আমাকে বিলক্ষণ ঠকাইতেন। আমি ক্ষতিগ্ৰস্ত হইতে পারি না। আপনার কন্যা আপনি ঘরে ফিরিয়া লইয়া যাউনা।” ব্ৰাহ্মণ আর তর্ক করিলেন না। পুণ্ডৱীকের পা দুইটি ধরিয়া অনুনয় বিনয় করিতে লাগিলেন। কিন্তু পুণ্ডরীকের পাষাণসদৃশ কঠিন হৃদয় ব্ৰাহ্মণের দুঃখে অণুমাত্র ব্যথিত হইল না। পাড়ার দুই-চারিজন ভদ্রলোক, পুণ্ডরীকের দুইতিনজন কুটুম্ব সেই স্থানে বসিয়াছিলেন। ব্ৰাহ্মণের দুঃখ দেখিয়া তাঁহারা দুঃখিত হইলেন। তাঁহারা পুণ্ডরীককে বলিলেন, — ‘পুত্রবধূ ঘরে লাইবেন না, সে কেমন কথা! পিতৃবংশের সহিত কন্যার এখন আর কোন সম্বন্ধ নাই। সে এখন আপনার বংশভুক্ত হইয়াছে। আপনার গোত্র প্রাপ্ত হইয়াছে। আপনার অশৌচ এখন তাহার অশৌচ ৷ তাহার কোনরূপ আখ্যাতি হইলে আপনার অখ্যাতি । তাহা হইলে কি করিয়া। আপনি পাঁচজনকে মুখ দেখাইবেন?” এই সমুদয় কথা শুনিয়া পুণ্ডৱীক কিয়ৎ পরিমাণে ভীত হইলেন। বৈবাহিকের নিকট হইতে একশত টাকার খৎ লইয়া পুত্রবধূকে তিনি ঘরে তুলিলেন। “তোমার কন্যাকে আর আমি তােমার নিকট পাঠাইব না। তুমি শঠ। জুয়াচাের। কনুকে তুমি কুশিক্ষা প্ৰদান করিবে”— এইরূপ কতকগুলি মধুর বাক্যদ্বারা নব বৈবাহিকরূেক্টেরিতোষ করিয়া তিনি তাঁহাকে বিদায় করিলেন । SN পুণ্ডরীক ও তাঁহার স্ত্রী ভাবিতেন যে, পুত্রুেঠিবাহ দিয়া বৈবাহিকের উপর। সৰ্ব্বদাই চক্ষু রাঙ্গা করিয়া থাকিতে হয়, সৰ্ব্বদাই তাহাকে দিয়া থেৎলাইতে হয়। কয়েক মাস পরে সেই একশত টাকার জন্য তাগাদা আরম্ভ । “আমি সৰ্ব্বস্বান্ত হইয়াছি, আমার আর কিছু নাই, একেবারে একশত টাকা প্ৰদান করি, সে ক্ষমতা আমার নাই; ক্রমে ক্রমে পরিশোধ করিব।”—এইরূপ মিনতি করিয়া বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণ সময় প্রার্থনা করিলেন। পুণ্ডৱীক সে প্রস্তাবে সম্মত হইলেন না। ব্ৰাহ্মণের নামে তিনি নালিশ করিলেন, ডিক্রি করিলেন, ডিক্রি জারি করিলেন । কিন্তু বেচিয়া কিনিয়া লইবেন, ব্ৰাহ্মণের এরূপ কোন সম্পত্তি ছিল না। ডিক্রির টাকা আদায় হইল না। ব্ৰাহ্মণকে পুণ্ডরীক কারাবাসে পাঠাইলেন। দুই মাস তিনি কারাগারে আবদ্ধ রহিলেন। অবশেষে একজন জ্ঞাতি পুণ্ডরীকের ঋণ পরিশোধ করিয়া বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণকে খালাস করিয়া আনিলেন; নিজের বাটীতে তাঁহাকে আশ্রয় প্রদান করিলেন। লজ্জায়, ঘূণায়, মনােদুঃখে ব্ৰাহ্মণের শরীর জীর্ণ শীর্ণ হইয়াছিল। অল্পদিন পরেই তিনি নিদারুণ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হইলেন । তাহার আসন্নকাল উপস্থিত হইল। কন্যা ললিতাকে তিনি একবার দেখিতে চাহিলেন। পুণ্ডরীক পাঠাইলেন না। তিনি বলিলেন যে— ‘ও পাপিষ্ঠ প্ৰতারকের নিকট আমি আমার পুত্রবধূকে পাঠাইব না। মৃত্যুকালে কন্যাকে সে কুশিক্ষা দিয়া যাইবে।” বৈবাহিকের নিষ্ঠুর বাক্য শ্রবণ করিয়াও কন্যাকে একবার দেখিবার বাসনা বৃদ্ধ পরিত্যাগ করিতে পারিলেন না। জ্ঞাতি এবং অন্যান্য লোকদিগকে কাকুতি-মিনতি করিয়া ক্রমাগত তিনি বলিতে লাগিলেন, — ‘ও’ গো! তোমরা একবার আমার ললিতাকে আনিয়া দাও। একবার তাহার qS0o দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~) www.amarboi.com"র্ভ","র্থী রাষ্ট”সখিৰ