পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার প্রতি ভালবাসা এখনও ভুলিতে পার নাই। আমার ঘোর দুৰ্গতি দেখিয়া তোমার মনে দয়া হইয়াছে। আমার অপরাধ তুমি ক্ষমা করিয়াছ। অনাথিনী দাদাকে তুমি লইতে আসিয়ােছ। পুনরায় আমি তোমার সোনা-বীে হইব । পুনরায় তুমি আমাকে আদর করিবে । পুনরায় সেই সুখের দিন ফিরিয়া আসিবে। “তোমার পা দুইটি ধরিবার নিমিত্ত দুই হাত বাড়াইয়া, বসিয়া বসিয়াই আমি তোমার দিকে অগ্রসর হইলাম। হায়! ঘোর ঘূণার চক্ষে আমার প্রতি কটাক্ষপাত করিয়া তুমি সরিয়া দীড়াইলে। গলিত পচিত দুৰ্গন্ধযুক্ত অপবিত্র বস্তুর স্পৰ্শভয়ে লোকে যেরূপ সত্বর দূরে গমন করে, সেইরূপ তুমি আমার নিকট হইতে সরিয়া দাঁড়াইলে। হায়, হায়! আমি কি ছিলাম আর কি হইলাম! “তুমি বলিলে,- “সোনা-বীে! বলি দিবার নিমিত্ত তোমরা আমাকে উৎসর্গ করিয়াছিলে। দেবী আমাকে গ্ৰহণ করিয়াছেন। আমার মৃত্যু হইয়াছে। এখন বাড়ী যাও। তোমাদের সুখের পথ হইতে কণ্টক দূর হইয়াছে। কোথায় আমি সব সোনার ইট লুক্কায়িত রাখিয়াছি, তাহা তুমি অবগত আছ। যাও, সেই ধন গিয়া বাহির করা। কালা-বাবাকেও আমি সেই স্থানে যাইতে অনুরোধ করিয়াছি, সেও সেই বাড়ীতে যাইতেছে। তুমিও যাও। সোনার ইট বাহির করিয়া দুইজনে পরম সুখে কালব্যাপন কর।” “আমি বলিতে যাইতেছিলাম যে,-রাজাবাবু! আমি আর দেশে যাইব না, আমি আর সে বাড়ীতে যাইব না। আমি আর কলা-মুখ সন্ন্যাসীর মুখ দেখিব না। তোমার সোনার ইটে আমার প্রয়ােজন নাই। পৃথিবীর ঐশ্বর্ঘ্যে আর আমার নাই। আমি কেবল এই চাই যে, তােমার ঐ পা দুখানি একবার আমার মাথায় উপ্ৰৱঞ্জাখিয়া দাও। “কিন্তু মুখ তুলিয়া যেই চাহিলাম, আর দুৰ্গলাম যে, তুমি সে স্থানে নাই। কি জানি কেন, কিন্তু সেইদিন হইতে সকলে বলিতে যে, ঐ ক্যাঙ্গালিনী ক্ষিপ্ত হইয়া গিয়াছে। তুমি তাহার পর আমার নিকট সৰ্ব্বদা এবং এই বাড়ীতে আসিবার নিমিত্ত সৰ্ব্বদা আমাকে উত্তেজিত করিতে। আমি তোমাকে” দেখিতে পাইতাম, কিন্তু অন্য কেহ তোমাকে দেখিতে পাইত না;—সেই জন্য কি লোকে আমাকে পাগলিনী বলিত? আমি তোমার সহিত কথা কহিতাম, ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া সৰ্ব্বদা আমি রোদন করিতাম, নিজের দুঃখের কাহিনী স্মরণ করিয়া অফুটস্বরে বিলাপ করিতাম;— সেই জন্য কি লোকে বলিত যে, ঐ দেখ, পাগলী প্ৰলাপ বকিতেছে। রুক্ষ কেশ, মলিন বেশ, কাদা ধূলা মাখিয়া থাকিতাম। ব্ৰাহ্মণী দয়া করিয়া আহার দিলে, সে আহার পড়িয়া থাকিত, সেদিকে ফিরিয়াও চাহিতাম না। রাত্রিতে নিদ্রা যাইতাম না, বসিয়া বসিয়া কেবল কাদিতাম,-সেই জন্য কি লোকে বলিত যে ঐ স্ত্রীলোকটা ক্ষিপ্ত হইয়াছে? “কোন মুখে এ বাড়ীতে আমি আসিব? যে স্থানে আমি রাজরাণী ছিলাম, এ পোড়ামুখ সে স্থানে আমি কি করিয়া দেখাইব? বাড়ী আসিতে আমার প্রবৃত্তি হইল না। কিন্তু তুমি আমাকে টানিয়া আনিলে। দিন নাই, রাত্রি নাই, সৰ্ব্বদা তুমি আমার নিকট আসিয়া বলিতে, —“চল, চল, বাড়ী চল। বাড়ী গিয়া সোনার ইট লও।” “ঘোর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাকে এইদিকে আসিতে হইল। কলিকাতা কোন দিক দিয়া যাইতে হয়,-“এই কথা লোককে জিজ্ঞাসা করিয়া ধীরে ধীরে আমি বঙ্গদেশের দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলাম। কোনদিন আধক্রোশ, কোনদিন একক্রোশ পথ চালিতাম। কখন বা পথ Գ&o দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comািলকানার্থ রচনা সৎগই