পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিলাম এবং একটু দূরে তাহাকে সতর্কভাবে পাহারা দিতে আদেশ করিলাম। সন্ন্যাসী ঘাট স্থাপন করিল। দধি, পিঠালি ও সিন্দুর দিয়া ঘটে কি সব অঙ্কন করিল। তাহার পর ফাঁটু বিষটু শ্ৰীং ঐং এইরূপ কত কি মন্ত্র উচ্চারণ করিল। অবশেষে হােম করিতে আরম্ভ করিল। কিছুক্ষণ পর স্বাহা স্বাহা বলিয়া আগুনে ঘূত দিয়া সন্ন্যাসী আপনার থলি হাতড়াইয়া একটি টিনের কীেটা বাহির করিল। সেই কীেটাতে এক প্রকার সবুজ রঙের গুড়া ছিল। হরিৎ বর্ণের সেই চূর্ণ সন্ন্যাসী আগুনে ফেলিয়া দিল । ঘর সবুজ বর্ণের ধূমে পরিপূর্ণ হইল। আমার নিদ্রার আবেশ হইল। আমি ভাবিলাম যে, কোনরূপে পলায়ন করিবে। উঠিয়া, দ্বারে ধাক্কা মারিয়া আমার চাকরকে ডাকিব, এইরূপ মানস করিলাম। আমি উঠিতে পারিলাম না। আমার হাত-পা অবশ অসাড় হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু আমার জ্ঞান ছিল। হঠাৎ আমার মাথা হইতে “আমি” বাহির হইয়া পড়িলাম। আমার শরীরটি তৎক্ষণাৎ মাটির উপর শুইয়া পড়িল। শরীর হইতে যে “আমি” বাহির হইয়াছি, তাহার দিকে তখন চাহিয়া দেখিলাম। দেখিলাম যে, সে “আমি” অতি ক্ষুদ্র, ঠিক বড়ো আঙ্গুলের মত, আর সে শরীর বায়ু দিয়া গঠিত। সেই ক্ষুদ্রশরীরে আমি উপর দিকে উঠিতে লাগিলাম। সূক্ষ্ম বা লিঙ্গশরীরের কথা পূৰ্ব্বে শুনিয়াছিলাম। মনে করিলাম যে, ঔষধের ধূমে সন্ন্যাসী আমাকে হত্যা করিয়াছে, মৃত্যুর পর লোকের যে লিঙ্গশরীর থাকে, তাহাই এখন যমের বাড়ী যাইতেছে। ছাদ ফুড়িয়া আমি উপরে উঠিয়া পড়িলাম। সো সেঁকেরিয়া আকাশ-পথে চলিলাম। দূরদূর-দূর-কতদূর উপরে উঠিয়া পড়িলাম, তাহা পারি না। মেঘ পার হইয়া যাইলাম, চন্দ্ৰলোক পার হইয়া যাইলাম, সূৰ্য্যলােকে গিয়ান্তর্ভূপিস্থত হইলাম। সে স্থানে আশ্চৰ্য্য ঘটনা ಙ್ಞ್ಞಞ್! সূৰ্য্যটিকে কুটি কুটি করিয়া কাটিতেছে, শুক্লপ্ছােট ছােট সেই সূৰ্যখণ্ডগুলি আকাশ-পটে জুড়িয়া দিতেছে। তখন আমি ভাবিলাম,- ঔনক্ষত্র এই প্রকারে হয় বটে। তবে এই যে খণ্ডগুলি বুড়ী আকাশ-পটে ভাল করিয়া জুড়িয়া দিতে পারে না, আলগা হইয়া সেইগুলি খসিয়া পড়ে। তখন লোকে বলে,— “নক্ষত্র পাত হইল।” কিছুক্ষণ পরে আমার ভয় হইল যে,-সূৰ্য্যটি তো গেল, পৃথিবীতে পুনরায় দিন হইবে কি করিয়া? আকাশ-বুড়ী আমার মনের ভাব বুঝিয়া হাসিয়া বলিল,- “ভোরে ভোরে উঠিয়া আকাশে ঝাড়ু দিয়া সমুদয় নক্ষত্রগুলি জুড়িয়া আমি একত্র করিব। সেইগুলি জুড়িয়া পুনরায় আস্ত সূৰ্য্য করিয়া প্ৰাতঃকালে উদয় হইতে পাঠাইব । প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা আঁশবিটি দিয়া সূৰ্য্য কাটিয়া নক্ষত্ৰ করি, সকালবেলা আবার সেইগুলি জুড়িয়া আস্ত সূৰ্য প্রস্তুত করি। আমার এই কাজ।” আকাশ-বুড়ীর নিকট হইতে বিদায় হইয়া, আমি ভাবিলাম যে, নভোমণ্ডলের সমুদয় ব্যাপারটা ভাল করিয়া দেখিতে হইবে। এইরূপ ভাবিয়া পুনরায় আমি শূন্যপথে সো সৌ করিয়া ভ্ৰমণ করিতে লাগিলাম। কিন্তু সৰ্ব্বনাশ! কিছুদূর গিয়া দেখি যে, দুইটা বিকটাকার যমদূত আমার মত আর একটা সূক্ষ্ম শরীরকে লইয়া যাইতেছে। আমার বড় ভয় হইল। সে স্থানে মেঘ নাই যে, তাহার ভিতর লুকাইব । পলাইবার সময় পাইলাম না। খপ করিয়া তাহারা আমাকে ধরিয়া ফেলিল। একজন জিজ্ঞাসা করিল,—“তুই বেটা কে রে? সত্যযুগের রাজা হরিশ্চন্দ্র ভিন বে-ওয়ারিশ হইয়া আর কাহারও এখানে বেড়াইবার হুকুম নাই। নিশ্চয় তুমি বেটা কুস্ক্রিপাক অথবা রৌরব নরকের ফেরারি আসামী।” এই বলিয়া তাহারা আমাকে বাধিয়া ফেলিল ও ধাক্কা ԳԵՆ দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarbot.comািঙপািকস্তানাথ রাষ্ট’ সংগ্ৰহ