পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ভাবিয়া-চিন্তিয়া উত্তর করিল,— “আজ্ঞা একবার ভ্ৰমক্রমে একাদশীর দিন পুঁইশাক খাইয়া ফেলিয়াছিলাম।” যমের সর্বশরীর শিহরিয়া উঠিল। তিনি বলিলেন,- “সৰ্ব্বনাশ! করিয়াছ কি একাদশীর দিন পুঁইশাক! ওরে! এই মুহূৰ্ত্তে ইহাকে রৌরব নরকে নিক্ষেপ কর। ইহার পূৰ্ব্বপুরুষ, যাহারা স্বর্গে আছে, তাহাদিগকেও সেই নরকে নিক্ষেপ কবৃ। পরে ইহার বংশধরগণের চোঁদপুরুষ পৰ্য্যন্তও সেই নরকে যাইবে । চিত্রগুপ্ত!! আমার এই আদেশ তোমার খাতায় লিখিয়া রাখা ।” যমের এই বিচার দেখিয়া আমি তো অবাক । এইবার আমার বিচার। কিন্তু আমার বিচার আরম্ভ হইতে না হইতে আমি উচ্চৈঃস্বরে বলিলাম,- “মহারাজ ! আমি কখন একাদশীর দিন পুঁই শাক ভক্ষণ করি নাই।” আমার কথায় যম চমৎকৃত হইলেন। হৰ্ষোৎফুল্ল লোচনে তিনি বলিলেন,- “সাধু সাধু! এই লোকটি একাদশীর দিন পুঁই শাক খায় নাই। সাধু সাধু! এই মহাত্মার শুভাগমনে আমার যমালয় পবিত্র হইল। যিমানীকে শীঘ্ৰ শঙ্খ বাজাইতে বল। যমকন্যাদিগকে পুষ্পবৃষ্টি করিতে বল। বিশ্বকৰ্ম্মাকে ডাকিয়া আন, —ভূঃ ভুবঃ স্বঃ মহঃ জনঃ তপঃ সত্যলোক পারে ধ্রুবলোকের উপরে এই মহাত্মার জন্য মন্দাকিনী-কলকলিত, পারিজাত-পরিশোভিত কোকিল কুহরিত, অন্সরাপদ-নূপুর-কুনকুনিত হীরা-মাণিক-খচিত নূতন একটি স্বৰ্গ নিৰ্ম্মাণ করিতে বল।” চিত্রগুপ্তের—ওঁ খুড়ি! চিত্তবৰ্ম্মার হিংসা হইল। তিনি বলিলেন,- “মহাশয়! পৃথিবীতে লুকটুকু এখনও আয়ু শেষ হয় নাই। স্থল দেহের রঙ্গুসের আঁসটে গন্ধ এখনও ইহার সৃদ্ধ শরীরে রহিয়াছে। 9م এই কথা শুনিয়া যম চটিয়া আগুন হইলেন। আমার আদর লোপ হইল। তিনি বলিলেন, — “কি! সাদা সাদা গোল গোল হাসের ডিমের কণ্ঠীয়ে। মার, ইহার মাথায় দশ ঘা ডাঙ্গস মাত্র।” যম বলিবামাত্র তাঁহার একজন দূতস্বৰ্গীর মাথায় এক ঘা ডাঙ্গস মারিল। বলিব কি হে, মাথায় আমার যেন ঠিক বজ্ৰাঘাত হক্টৰ্যাতনায় ত্ৰাহি মধুসূদন বলিয়া আমি চীৎকার করিতে লাগিলাম। সেই এক ঘা ডাঙ্গসে যমপুরী হইতে আকাশপথে অনেক নিম্নে আসিয়া পড়িলাম। দমাস করিয়া আর এক ডাঙ্গসের ঘা! শূন্যপথে আরও নীচে আসিয়া পড়িলাম। আর এক ঘা! আরও নিম্নে আসিয়া পড়িলাম। এইরূপ দশম আঘাতে পৃথিবীতে আসিয়া আমার বাড়ীর ছাদ ফুড়িয়া আমার সূক্ষ্ম শরীর পুনরায় সেই পূজার ঘরে আসিয়া পড়িল । নিজের বাড়ীতে সেই পূজার ঘরে আসিয়া ক্ষুদ্র মাথায় ক্ষুদ্ৰ হাত বুলাইতে লাগিলাম। প্ৰহারের চোটে চক্ষুতে সরিষা-ফুল দেখিতেছিলাম। অনেকক্ষণ কিছুই দেখিতে পাইলাম না। অনেকক্ষণ পরে চাহিয়া দেখি যে, “আমি” বসিয়া আছি। অর্থাৎ আমার সেই বড় শরীর আসনে বসিয়া আছে, আর সন্ন্যাসীর শরীর মাটীতে পড়িয়া আছে। কি হইয়াছে, তখন বুঝিতে পারিলাম। বুঝিলাম, যে সবুজ গুড়ার ধূম দিয়া আমার স্থূল অন্নময় কোষ অধিকার করিয়াছে। আমার শরীর হইতে প্ৰাণময় কোষ, মনোময় কোষ, আর সকল কোষ বাহির করিয়া, সন্ন্যাসী আপনার সূক্ষ্ম শরীর দ্বারা আমার শরীর বটে, কিন্তু ঐ যে আসনে বসিয়া আছে, ও আমি নই, ও সন্ন্যাসী। সূক্ষ্ম শরীরে মুখ দিয়া আমি সন্ন্যাসীর সহিত কথোপকথন করিতে পারিলাম না! সেজন্য নিরুপায় হইয়া আমি সন্ন্যাসীর দেহে প্ৰবেশ করিলাম। ዓbrbr sig airž3. g3 ze! A www.amarboi.comfo%7"o"*"***********